কেলেঙ্কারির কেন্দ্রবিন্দু
যুক্তরাজ্যের কয়েকটি শহরে প্রায় এক দশক আগে মূলত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পুরুষদের গোষ্ঠী শত শত শ্বেতাঙ্গ কিশোরীকে ফুঁসলিয়ে পাচার ও ধর্ষণ করে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের একাংশ বর্ণবাদের অভিযোগে দোষী হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি উপেক্ষা করায় ভুক্তভোগীরা দীর্ঘদিন বিচার থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
জাতীয় তদন্তের ঘোষণা
১৪ জুন কানাডার জি–৭ সম্মেলনে যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার জানান, কিশোর গ্যাং–সংক্রান্ত জাতীয় তদন্তের সুপারিশ তিনি গ্রহণ করেছেন। আগের অবস্থান থেকে সরে এসে তিনি বলেন, “লুইস কেইসির প্রতিবেদনটি আমি পুরো পড়েছি; তার সুপারিশ অনুযায়ী জাতীয় তদন্ত হবে।”
‘র্যাপিড অডিট’ ও প্রধান পর্যবেক্ষণ
জানুয়ারিতে স্বরাষ্ট্রসচিব ইভেট কুপার সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লুইস কেইসিকে গোটা দেশে কিশোর গ্যাং দ্বারা যৌন নির্যাতনের প্রকৃতি ও ব্যাপকতা যাচাই করতে বলেন। কেইসির খসড়া প্রতিবেদনে অভিযোগ উঠেছে, শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ কিশোরীদের কথায় পুলিশ ও কর্তৃপক্ষ কান দেয়নি। এই উপেক্ষাকেই তিনি ‘প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তদন্তের পরামর্শ দেন।
অনলাইন চাপ এবং এলন মাস্কের ভূমিকা
মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্ক এ বছর এক্স (সাবেক টুইটার)–এ ব্রিটিশ সরকারের সমালোচনা করে বিষয়টি ফের আলোচনায় আনেন। জাতীয় তদন্তের ঘোষণা শোনার পর মাস্ক পোস্ট করে বলেন, “এটা ঘটছে দেখে ভালো লাগছে।”
রাজনৈতিক বিতর্ক
কনজারভেটিভ নেতা কেমি বেডেনক অভিযোগ করেছেন যে স্টারমার “প্রেসারে পড়ে” সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি জানুয়ারি থেকেই পূর্ণাঙ্গ জাতীয় তদন্ত দাবি করছিলাম। ভুক্তভোগীরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও দ্রুত সমাধান দরকার, দশ বছর পরে নয়।”
ভুক্তভোগীদের প্রত্যাশা
দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচার চেয়ে আসা ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এখন জাতীয় তদন্তের দ্রুত সূচনা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, তদন্ত ও সুপারিশ বাস্তবায়নে অনাবশ্যক দেরি হলে আস্থা সংকট তৈরি হতে পারে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
সরকার একটি কমিশন গঠন করে পুলিশের ভূমিকাসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা, জাতিগত সংবেদনশীলতা এবং ভবিষ্যৎ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা—সবকিছুই অনুসন্ধান করবে। তদন্তের ফলাফলে আইন সংস্কার ও ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসনের সুপারিশ আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।