০৭:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

আগুনের ভয়াল শক্তি

আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ক্রমশই আরও ভয়াবহ, অনির্দেশযোগ্য ও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে। এর ফলে দমকলকর্মীদের কাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তেমনি তাদের জীবনও আরও বিপদের মুখে পড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির দাবানলে ৫৩.৮ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির ক্ষতি হয়। অর্থনীতি ও কর আয়ে আরও বহু বিলিয়ন ডলারের লোকসান হয়। এ তথ্য উঠে আসে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া লিডারশিপ কাউন্সিল এবং লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে।

বিশেষ বাহিনী খ্যাত হটশট দমকল দল সবচেয়ে দুর্গম ও ভয়ংকর দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সাধারণত যারা এই দলে যোগ দেয়, তাদের আগুন নেভানোর কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকে। কিন্তু কেলি র‍্যামসি যখন তার হটশট দলে যোগ দেন, তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নতুন, দমকলের নতুন সদস্য, দলের একমাত্র নারী এবং প্রায় এক দশকের মধ্যে প্রথম নারী সদস্য। অনেক পুরুষ সহকর্মীর জীবনে তিনিই ছিলেন প্রথম নারী সহকর্মী।

২০২০ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার নর্থ কমপ্লেক্স দাবানলে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি তার বই ‘Wildfire Days: A Woman, a Hotshot Crew, and the Burning American West’-এ। এখানে তার সেই বাস্তব অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরা হলো।

ভয়াবহ পূর্ব বাতাসের দিন

লেবার ডে’র পরদিন সকালে ঘুম ভাঙতেই টের পেলাম বাতাস চলছে। মাটির ধুলা আমাদের ত্রিপলের ওপর উড়ে আসছিল, আমার মুখে চুল উড়ছিল। সূর্য উঁকি দিচ্ছিল, যা আগুন জেগে ওঠার ইঙ্গিত দেয়। তাপমাত্রার উল্টো আচরণ তখন ভেঙে পড়েছিল, ফলে আগুন আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। আমরা সারিবদ্ধ হয়ে নির্দেশনা শুনছিলাম।

“পূর্ব বাতাস আজ প্রবেশ করছে,” সুপারিনটেনডেন্ট ভ্যান জানালেন। তার সঙ্গে থাকা সব দমকল প্রধানই পূর্বাভাস শুনে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। পুরো পশ্চিম উপকূলজুড়ে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি ছিল। এটি শতবর্ষে একবার ঘটে এমন দুর্যোগপূর্ণ বাতাস। কিন্তু বাড়তি জনবল আনার সুযোগ ছিল না, কারণ সবাই আগে থেকেই ব্যস্ত ও ঘাটতির মধ্যে ছিল।

দলের বাকিরা সাবধান করল, “আজ মাথা ঘুরিয়ে সতর্ক থাকো। বড় গাছগুলো হুড়মুড় করে পড়তে পারে।”

ঝুঁকির মধ্যে কাজ

আমরা গাড়িতে উঠলাম। ধুলা উড়িয়ে এগোতে লাগলাম। আগুনের রেখা ধরে পৌঁছে গাছের গোড়ায় গিয়ে খুঁজে খুঁজে আগুনের সম্ভাব্য আঁচড় মুছে দিচ্ছিলাম। বাতাস বাড়ছিল। গাছগুলো বাঁকছিল, পুরোনো পাইন গাছগুলো শব্দ করছিল। নিচ থেকে অনেকগুলো গাছ আগেই পোড়া ছিল। হঠাৎ:

বুম! বিশাল এক গাছ ধসে পড়ল।

মাটি কেঁপে উঠল। আরও একটি গাছ পড়ল। সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশ দেখল।

“এটা খুব কাছেই পড়েছে,” লুক উদ্বিগ্ন হয়ে বলল।

একটি ক্রু রেডিওতে জানাল, তারা আর কাজ চালাতে পারছে না। “বাতাস বেশি, গাছ বেশি পড়ছে। নিরাপদ মনে হচ্ছে না। আমরা সরে যাচ্ছি।”

তবে আমাদের হটশট দল থেকে ঘোষণা এলো, “আমরা শেষ দল হিসেবে এখানেই থাকব।”

বাতাস আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছিল। পাহাড়ের ওপর থেকে সালমন জানাল, “এটা বেশ বড় দৌড় দিয়েছে। ধোঁয়ার স্তম্ভ তৈরি হচ্ছে।”

এরপর আকাশ পর্যবেক্ষণকারী এয়ার অ্যাটাক জানাল, “আগুন নদী পার হয়ে ক্যাম্পগ্রাউন্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে সরিয়ে নিতে হবে। এটা আর থামছে না।”

আমরা আগুন দেখতে না পেলেও তার ভয়াবহতা টের পাচ্ছিলাম। এয়ার অ্যাটাক বলল, “আমি রেডিং পর্যন্ত পুরোটা উড়ে দেখেছি। পুরো ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে যেন মহাকাশীয় স্তম্ভ তৈরি হয়েছে।”

‘ইন্টারগ্যালাকটিক কলাম’ শব্দটি আমাদের কাছে যেন পৃথিবী ধ্বংসের এক চিত্র হয়ে ধরা দিল।

পারিবারিক আতঙ্ক

পরে আমি দেখলাম আমার বন্ধু জসি ফোন করেছে। সে তখন হ্যাপি ক্যাম্পে আমার পশুপাখি দেখাশোনা করছিল। ফোন ধরতেই সে জানাল, “তোমার বাড়ির পাশেই আগুন, সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমি কুকুরগুলো নিয়ে যাচ্ছি। তোমার গরুটা কি নিয়ে যাব?”

আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, “হ্যাঁ, দয়া করে নিয়ে যাও।”

বিড়ালটা পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ছাগল স্যামকে গাড়িতে তোলা সম্ভব ছিল না। তাই আমি বললাম, “তাকে উঠানে ছেড়ে দাও, যেন পালাতে পারে।”

বেদনার্ত কণ্ঠে শুধু বললাম, “কুকুরগুলোকে নিয়ে যাও।”

মৃত্যুর মতো ঘন ধোঁয়া

আকাশ কমলা রঙের হয়ে উঠেছিল। ধোঁয়া আকাশকে ঢেকে দিয়েছিল। সকালের দৃশ্য রাতের মতো লাগছিল। আমরা তখন বাসায় ফেরার পথে। পুরো পশ্চিমাঞ্চল দাবানলে পুড়ছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আই-৫ মহাসড়ক বন্ধ ছিল, কারণ আশল্যান্ডেও আগুন লেগেছে।

হ্যাপি ক্যাম্পের মতো আরও বহু ছোট শহর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। নর্থ কমপ্লেক্স দাবানল দক্ষিণ-পশ্চিমে ছুটে বেরি ক্রিক শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ১২০০ ঘরের মধ্যে মাত্র তিনটি দাঁড়িয়ে ছিল। সিয়েরা নেভাডায় ৪০০ ক্যাম্পার ফেঁসে গিয়েছিল, যাদের উদ্ধার করে ন্যাশনাল গার্ড।

অক্টোবরে গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম ছয়টি বড় দাবানলের জন্য ফেডারেল দুর্যোগ ঘোষণা চেয়েছিলেন।

ওরেগনে পাঁচটি মেগাফায়ার একযোগে ৪০০০ ঘরবাড়ি, স্কুল, দোকান ধ্বংস করেছিল। ১০ শতাংশ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পোলিশ রেস্তোরাঁসহ অনেক বন্ধু-আত্মীয়ের ঘরও পুড়ে যায়। ওয়াশিংটনের ম্যালডেন, ‘পাইন’ এর মতো শহর নিশ্চিহ্ন হয়। কোল্ড স্প্রিংস ফায়ার এক রাতেই ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার একরে ছড়িয়ে পড়ে। পার্ল হিল আগুন কলাম্বিয়া নদী পার হয়ে যায়।

ধোঁয়া পুরো কানাডা ও আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। নিউইয়র্ক পর্যন্ত বাতাসে সতর্কতা জারি হলো। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিজেদের ডরমে লুকিয়ে থাকল। বয়স্করা ধোঁয়ার ক্ষতিকর কণার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করল।

এই ধোঁয়া যেন আমাদের প্রতিটি নাগরিকের জন্য দায়বদ্ধতার এক দহন চিত্র হয়ে উঠল। আমরা সবাই মিলে পৃথিবীকে আরও উত্তপ্ত করেছি। এ এক নিখাদ বিপর্যয়। এর অন্য কোনো নাম নেই।

আগুনের ভয়াল শক্তি

০২:০০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ক্রমশই আরও ভয়াবহ, অনির্দেশযোগ্য ও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে। এর ফলে দমকলকর্মীদের কাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তেমনি তাদের জীবনও আরও বিপদের মুখে পড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির দাবানলে ৫৩.৮ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির ক্ষতি হয়। অর্থনীতি ও কর আয়ে আরও বহু বিলিয়ন ডলারের লোকসান হয়। এ তথ্য উঠে আসে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া লিডারশিপ কাউন্সিল এবং লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদনে।

বিশেষ বাহিনী খ্যাত হটশট দমকল দল সবচেয়ে দুর্গম ও ভয়ংকর দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সাধারণত যারা এই দলে যোগ দেয়, তাদের আগুন নেভানোর কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থাকে। কিন্তু কেলি র‍্যামসি যখন তার হটশট দলে যোগ দেন, তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নতুন, দমকলের নতুন সদস্য, দলের একমাত্র নারী এবং প্রায় এক দশকের মধ্যে প্রথম নারী সদস্য। অনেক পুরুষ সহকর্মীর জীবনে তিনিই ছিলেন প্রথম নারী সহকর্মী।

২০২০ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার নর্থ কমপ্লেক্স দাবানলে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি তার বই ‘Wildfire Days: A Woman, a Hotshot Crew, and the Burning American West’-এ। এখানে তার সেই বাস্তব অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরা হলো।

ভয়াবহ পূর্ব বাতাসের দিন

লেবার ডে’র পরদিন সকালে ঘুম ভাঙতেই টের পেলাম বাতাস চলছে। মাটির ধুলা আমাদের ত্রিপলের ওপর উড়ে আসছিল, আমার মুখে চুল উড়ছিল। সূর্য উঁকি দিচ্ছিল, যা আগুন জেগে ওঠার ইঙ্গিত দেয়। তাপমাত্রার উল্টো আচরণ তখন ভেঙে পড়েছিল, ফলে আগুন আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। আমরা সারিবদ্ধ হয়ে নির্দেশনা শুনছিলাম।

“পূর্ব বাতাস আজ প্রবেশ করছে,” সুপারিনটেনডেন্ট ভ্যান জানালেন। তার সঙ্গে থাকা সব দমকল প্রধানই পূর্বাভাস শুনে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। পুরো পশ্চিম উপকূলজুড়ে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি ছিল। এটি শতবর্ষে একবার ঘটে এমন দুর্যোগপূর্ণ বাতাস। কিন্তু বাড়তি জনবল আনার সুযোগ ছিল না, কারণ সবাই আগে থেকেই ব্যস্ত ও ঘাটতির মধ্যে ছিল।

দলের বাকিরা সাবধান করল, “আজ মাথা ঘুরিয়ে সতর্ক থাকো। বড় গাছগুলো হুড়মুড় করে পড়তে পারে।”

ঝুঁকির মধ্যে কাজ

আমরা গাড়িতে উঠলাম। ধুলা উড়িয়ে এগোতে লাগলাম। আগুনের রেখা ধরে পৌঁছে গাছের গোড়ায় গিয়ে খুঁজে খুঁজে আগুনের সম্ভাব্য আঁচড় মুছে দিচ্ছিলাম। বাতাস বাড়ছিল। গাছগুলো বাঁকছিল, পুরোনো পাইন গাছগুলো শব্দ করছিল। নিচ থেকে অনেকগুলো গাছ আগেই পোড়া ছিল। হঠাৎ:

বুম! বিশাল এক গাছ ধসে পড়ল।

মাটি কেঁপে উঠল। আরও একটি গাছ পড়ল। সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশ দেখল।

“এটা খুব কাছেই পড়েছে,” লুক উদ্বিগ্ন হয়ে বলল।

একটি ক্রু রেডিওতে জানাল, তারা আর কাজ চালাতে পারছে না। “বাতাস বেশি, গাছ বেশি পড়ছে। নিরাপদ মনে হচ্ছে না। আমরা সরে যাচ্ছি।”

তবে আমাদের হটশট দল থেকে ঘোষণা এলো, “আমরা শেষ দল হিসেবে এখানেই থাকব।”

বাতাস আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছিল। পাহাড়ের ওপর থেকে সালমন জানাল, “এটা বেশ বড় দৌড় দিয়েছে। ধোঁয়ার স্তম্ভ তৈরি হচ্ছে।”

এরপর আকাশ পর্যবেক্ষণকারী এয়ার অ্যাটাক জানাল, “আগুন নদী পার হয়ে ক্যাম্পগ্রাউন্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে সরিয়ে নিতে হবে। এটা আর থামছে না।”

আমরা আগুন দেখতে না পেলেও তার ভয়াবহতা টের পাচ্ছিলাম। এয়ার অ্যাটাক বলল, “আমি রেডিং পর্যন্ত পুরোটা উড়ে দেখেছি। পুরো ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে যেন মহাকাশীয় স্তম্ভ তৈরি হয়েছে।”

‘ইন্টারগ্যালাকটিক কলাম’ শব্দটি আমাদের কাছে যেন পৃথিবী ধ্বংসের এক চিত্র হয়ে ধরা দিল।

পারিবারিক আতঙ্ক

পরে আমি দেখলাম আমার বন্ধু জসি ফোন করেছে। সে তখন হ্যাপি ক্যাম্পে আমার পশুপাখি দেখাশোনা করছিল। ফোন ধরতেই সে জানাল, “তোমার বাড়ির পাশেই আগুন, সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমি কুকুরগুলো নিয়ে যাচ্ছি। তোমার গরুটা কি নিয়ে যাব?”

আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, “হ্যাঁ, দয়া করে নিয়ে যাও।”

বিড়ালটা পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ছাগল স্যামকে গাড়িতে তোলা সম্ভব ছিল না। তাই আমি বললাম, “তাকে উঠানে ছেড়ে দাও, যেন পালাতে পারে।”

বেদনার্ত কণ্ঠে শুধু বললাম, “কুকুরগুলোকে নিয়ে যাও।”

মৃত্যুর মতো ঘন ধোঁয়া

আকাশ কমলা রঙের হয়ে উঠেছিল। ধোঁয়া আকাশকে ঢেকে দিয়েছিল। সকালের দৃশ্য রাতের মতো লাগছিল। আমরা তখন বাসায় ফেরার পথে। পুরো পশ্চিমাঞ্চল দাবানলে পুড়ছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আই-৫ মহাসড়ক বন্ধ ছিল, কারণ আশল্যান্ডেও আগুন লেগেছে।

হ্যাপি ক্যাম্পের মতো আরও বহু ছোট শহর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। নর্থ কমপ্লেক্স দাবানল দক্ষিণ-পশ্চিমে ছুটে বেরি ক্রিক শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ১২০০ ঘরের মধ্যে মাত্র তিনটি দাঁড়িয়ে ছিল। সিয়েরা নেভাডায় ৪০০ ক্যাম্পার ফেঁসে গিয়েছিল, যাদের উদ্ধার করে ন্যাশনাল গার্ড।

অক্টোবরে গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম ছয়টি বড় দাবানলের জন্য ফেডারেল দুর্যোগ ঘোষণা চেয়েছিলেন।

ওরেগনে পাঁচটি মেগাফায়ার একযোগে ৪০০০ ঘরবাড়ি, স্কুল, দোকান ধ্বংস করেছিল। ১০ শতাংশ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। পোলিশ রেস্তোরাঁসহ অনেক বন্ধু-আত্মীয়ের ঘরও পুড়ে যায়। ওয়াশিংটনের ম্যালডেন, ‘পাইন’ এর মতো শহর নিশ্চিহ্ন হয়। কোল্ড স্প্রিংস ফায়ার এক রাতেই ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার একরে ছড়িয়ে পড়ে। পার্ল হিল আগুন কলাম্বিয়া নদী পার হয়ে যায়।

ধোঁয়া পুরো কানাডা ও আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। নিউইয়র্ক পর্যন্ত বাতাসে সতর্কতা জারি হলো। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিজেদের ডরমে লুকিয়ে থাকল। বয়স্করা ধোঁয়ার ক্ষতিকর কণার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করল।

এই ধোঁয়া যেন আমাদের প্রতিটি নাগরিকের জন্য দায়বদ্ধতার এক দহন চিত্র হয়ে উঠল। আমরা সবাই মিলে পৃথিবীকে আরও উত্তপ্ত করেছি। এ এক নিখাদ বিপর্যয়। এর অন্য কোনো নাম নেই।