জোনাকি
আবুল হোসেন দ্রুত বারান্দায় বেরিয়ে পড়েন, মরিয়মের সঙ্গে অযথা তর্ক-তর্কি করার কোনো স্পৃহাই ছিলো না তাঁর। প্রবল জিদ তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো। ভাবলেন এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই তিনি বুলুর জন্যে অপেক্ষা করবেন। তিনি দেখতে চান বুলু কখন ফেরে, কিভাবে ফেরে। তারপর নাগার সঙ্গে তাঁর একচোট হবে। এরা সীমার বাইরে চলে গেছে। একটা হেস্তনেস্ত দরকার।
বুলু ফিরলো রাত্রি ন’টার দিকে।
আবুল হোসেন যা আন্দাজ করেছিলেন তাই, কামরানের গাড়ি থেকে নামলো নাগা ও বুলু। সকলের চেহারাই ঝড়েওড়া, বিধ্বস্ত। বুলু ও নাগা দু’জনের হাতেই স্যুটকেস। বারান্দা পর্যন্ত তাদের এগিয়ে দিলো কামরান, তারপর গাড়িতে গিয়ে বসলো। স্টার্ট দিলো গাড়িতে।
প্রথমে চিনতে পারেননি আবুল হোসেন বুলুকে। শাড়িপরা অবস্থায় এই প্রথম দেখলেন। রাজহংসীর দীর্ঘ গ্রীবা তুলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো বুলু কামরানের দিকে। দিগ্বিজয়ীর বিপুল গতিতে গাড়িটি দৃষ্টির আড়ালে চলে যাবার পরও অভিভূতের মতো সে দাঁড়িয়ে রইলো।
অন্ধকার বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবকিছু দেখলেন আবুল হোসেন। কেউই তাঁকে লক্ষ্য করেনি।
‘শোনো নাগা, তোমার সঙ্গে আমার কথা আছে-‘ ভেতরে পা বাড়িয়েছিলো নাগা, সে থমকে দাঁড়ালো।
আবুল হোসেন বললেন, ‘কোন্ চুলোয় গিয়েছিলে?’
নাগা ঘড়ঘড়ে গলায় বললে, ‘বাইরে গিয়েছিলাম-‘
‘বাইরে কোথায়?’
‘কক্সবাজার!’