সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সেলগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে আসছিল বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি মোহদ খালিদ ইসমাইল।
বিশেষ শাখার কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ (ই৮)-এর গোয়েন্দা তথ্য ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘গেরাকান মিলিটান র্যাডিকাল বাংলাদেশ’ (জিএমআরবি) নামের এই দলটি সদস্য ফি ও অনুদানের মাধ্যমে আইএসের তহবিল গড়ে তোলে। খালিদ জানান, সংগৃহীত মোট অর্থের পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
খালিদ বলেন, ‘তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন সদস্য রয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিটি সদস্যকে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত সদস্য ফি দিতে হয়। অনুদানের পরিমাণ সদস্যদের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।’
জঙ্গি সেলের সঙ্গে অন্য কোনো দেশীয় বা আন্তর্জাতিক আইএস নেটওয়ার্কের যোগসূত্র আছে কি না, তা তদন্তাধীন। ‘আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করছি,’ বলেন তিনি।
সদস্য নিয়োগ
তদন্তে উঠে এসেছে, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিক, কারখানা কর্মীসহ বিভিন্ন খাতে কর্মরত অভিবাসীদের মধ্য থেকেই সদস্য সংগ্রহ করা হয়। নতুন সদস্যদের ‘বাইআত’ (শপথ) গ্রহণের মাধ্যমে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়; তবে তার আগে কঠোর যাচাই-বাছাই করা হয়।
মালয়েশিয়াকে বিদেশি জঙ্গিদের ট্রানজিট বা লজিস্টিকস কেন্দ্র হতে না দেওয়ার লক্ষ্যে ই৮-এর এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল বলে মন্তব্য করেন খালিদ। ‘অভিবাসী কমিউনিটির ভেতরে চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়লে তা অবশেষে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে রূপ নিতে পারে,’ তিনি সতর্ক করেন।
অভিযান ও গ্রেপ্তার
ই৮ তিন ধাপে—২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত—একটি বৃহত্তর অভিযানে সেলটি ভেঙে দেয়। জোহর ও সেলাঙ্গর রাজ্যে পরিচালিত এই অভিযানে ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ গ্রেপ্তার হন, যাদের মধ্যে সেলটির নেতাও রয়েছে।
তাদের মালয়েশিয়ায় হামলার কোনো পরিকল্পনা ছিল না; মূল লক্ষ্য ছিল সদস্য সংগ্রহ ও আইএসের মতাদর্শ ছড়ানো। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, ১৫ জনকে ইমিগ্রেশন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ১৬ জন SOSMA আইনে তদন্তাধীন রয়েছেন।
( রিপোর্টটি মালয়েশিয়ান দ্য স্টার থেকে অনূদিত)