০৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
শাবানা: একজন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন কী কাজ করবে, কেন কিছু দলের আপত্তি? অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক কেন: আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ ৪০ বছরের ব্যবসায় এমন সংকট দেখিনি: এ কে আজাদ আধুনিক সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব খোকার লাঠি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র: ভূমিকম্পই যাকে পুরাতন করে দেয় ভারতের চাল রপ্তানি সীমিতকরণে বিশ্ব বাজারে মূল্যবৃদ্ধি: বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে? উপকূলীয় পানির লবণাক্ততা সংকট নিরসনে তরুণদের উদ্ভাবনী দৌড় গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের প্রবেশ থেকে জিম্মিদের মৃত্যুর শেষ দৃশ্য

থাই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কেলেঙ্কারিতে চাঞ্চল্য: যৌন সম্পর্কের ভিডিও দেখিয়ে আদায় প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার

থাইল্যান্ডে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি অন্তত নয়জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে সেই গোপন ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তাকে “মিস গল্ফ” নামে শনাক্ত করেছে। তিন বছরের ব্যবধানে তিনি প্রায় ৩৮.৫ কোটি বাথ (প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার) আদায় করেছেন বলে জানিয়েছে থাই পুলিশ।

পুলিশ জানায়, এই নারীর বাড়ি থেকে ৮০,০০০-এর বেশি ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো তিনি সন্ন্যাসীদের ব্ল্যাকমেইল করতে ব্যবহার করতেন। এই ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে যখন ব্যাংককের এক আধ্যাত্মিক গুরু হঠাৎ সন্ন্যাস জীবন ত্যাগ করেন এবং পরে জানা যায়, তাকে একজন নারী ব্ল্যাকমেইল করছিলেন।

পুলিশ বলছে, ২০২৪ সালের মে মাসে ওই নারীর সঙ্গে ওই আধ্যাত্মিক গুরুর সম্পর্ক হয়। পরে তিনি গর্ভবতী হওয়ার দাবি করে প্রায় ৭ মিলিয়ন বাথ ‘শিশু ভরণপোষণ’ হিসেবে দাবি করেন। এ ধরনের প্রতারণাই ছিল তার প্রধান কৌশল, যা একাধিক সন্ন্যাসীর সঙ্গেও তিনি ব্যবহার করেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, প্রাপ্ত অর্থের বড় একটি অংশ তুলে ফেলা হয়েছে এবং এর কিছু অংশ অনলাইন জুয়ায় ব্যয় হয়েছে।

এ ঘটনায় ‘চাঁদাবাজি’, ‘মানি লন্ডারিং’ এবং ‘অবৈধ অর্থ গ্রহণ’-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে মিস গল্ফের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি পুলিশ একটি হটলাইন চালু করেছে, যেখানে জনগণ “অনৈতিক সন্ন্যাসী”দের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

এই কেলেঙ্কারি থাইল্যান্ডের বহু প্রাচীন ও সম্মানিত বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে আলোচনায় এনে ফেলেছে। থাই রাজা মহা বজিরালংকর্ণ সম্প্রতি ৮১ জন সন্ন্যাসীকে দেওয়া রাজকীয় সম্মাননা বাতিল করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনাগুলো “বৌদ্ধদের মনে গভীর দুঃখ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।”

Thai woman accused of seducing, blackmailing monks in scandal rocking  Buddhist clergy | Malay Mail

থাইল্যান্ডে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং বহু পুরুষ জীবনের কোনো এক পর্যায়ে কিছুদিনের জন্য হলেও সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থাই বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান একের পর এক কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে যৌন কেলেঙ্কারি, মাদক মামলা ও দুর্নীতি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থাই সংঘের (সন্ন্যাসী সংগঠন) কঠোর ও কর্তৃত্ববাদী কাঠামোই এই সমস্যার অন্যতম কারণ। একাডেমিক গবেষক সুরাফোট থাভিসাক বলেন, “এটি মূলত থাই بيرোক্র্যাসির মতোই একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা। এখানে জ্যেষ্ঠ সন্ন্যাসীরা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং কনিষ্ঠ সন্ন্যাসীরা তাদের অধীনস্থ কর্মচারীর মতো। কেউ কিছু অনৈতিক দেখতে পেলেও মুখ খুলতে সাহস পায় না, কারণ মঠ থেকে বের করে দেওয়া খুবই সহজ।”

তবে কেউ কেউ বলছেন, চলমান তদন্ত এবং সংঘ পরিষদের সক্রিয়তা হয়তো বহু প্রতীক্ষিত সংস্কারের পথ খুলে দিতে পারে। থাম্মাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী প্রাকিরাতি সাতাসুত বলেন, “সত্য উন্মোচন করাই সবচেয়ে জরুরি। এতে সাধারণ মানুষের মনে সংঘ সম্পর্কে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও দূর হবে। এখন প্রশ্ন হলো, সংঘ পরিষদ নিজেকে বাঁচাতে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি।”

শাবানা: একজন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব

থাই বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কেলেঙ্কারিতে চাঞ্চল্য: যৌন সম্পর্কের ভিডিও দেখিয়ে আদায় প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার

০৬:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

থাইল্যান্ডে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি অন্তত নয়জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে সেই গোপন ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তাকে “মিস গল্ফ” নামে শনাক্ত করেছে। তিন বছরের ব্যবধানে তিনি প্রায় ৩৮.৫ কোটি বাথ (প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার) আদায় করেছেন বলে জানিয়েছে থাই পুলিশ।

পুলিশ জানায়, এই নারীর বাড়ি থেকে ৮০,০০০-এর বেশি ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো তিনি সন্ন্যাসীদের ব্ল্যাকমেইল করতে ব্যবহার করতেন। এই ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে যখন ব্যাংককের এক আধ্যাত্মিক গুরু হঠাৎ সন্ন্যাস জীবন ত্যাগ করেন এবং পরে জানা যায়, তাকে একজন নারী ব্ল্যাকমেইল করছিলেন।

পুলিশ বলছে, ২০২৪ সালের মে মাসে ওই নারীর সঙ্গে ওই আধ্যাত্মিক গুরুর সম্পর্ক হয়। পরে তিনি গর্ভবতী হওয়ার দাবি করে প্রায় ৭ মিলিয়ন বাথ ‘শিশু ভরণপোষণ’ হিসেবে দাবি করেন। এ ধরনের প্রতারণাই ছিল তার প্রধান কৌশল, যা একাধিক সন্ন্যাসীর সঙ্গেও তিনি ব্যবহার করেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, প্রাপ্ত অর্থের বড় একটি অংশ তুলে ফেলা হয়েছে এবং এর কিছু অংশ অনলাইন জুয়ায় ব্যয় হয়েছে।

এ ঘটনায় ‘চাঁদাবাজি’, ‘মানি লন্ডারিং’ এবং ‘অবৈধ অর্থ গ্রহণ’-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে মিস গল্ফের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি পুলিশ একটি হটলাইন চালু করেছে, যেখানে জনগণ “অনৈতিক সন্ন্যাসী”দের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

এই কেলেঙ্কারি থাইল্যান্ডের বহু প্রাচীন ও সম্মানিত বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে আলোচনায় এনে ফেলেছে। থাই রাজা মহা বজিরালংকর্ণ সম্প্রতি ৮১ জন সন্ন্যাসীকে দেওয়া রাজকীয় সম্মাননা বাতিল করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনাগুলো “বৌদ্ধদের মনে গভীর দুঃখ ও হতাশা সৃষ্টি করেছে।”

Thai woman accused of seducing, blackmailing monks in scandal rocking  Buddhist clergy | Malay Mail

থাইল্যান্ডে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং বহু পুরুষ জীবনের কোনো এক পর্যায়ে কিছুদিনের জন্য হলেও সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থাই বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান একের পর এক কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে যৌন কেলেঙ্কারি, মাদক মামলা ও দুর্নীতি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থাই সংঘের (সন্ন্যাসী সংগঠন) কঠোর ও কর্তৃত্ববাদী কাঠামোই এই সমস্যার অন্যতম কারণ। একাডেমিক গবেষক সুরাফোট থাভিসাক বলেন, “এটি মূলত থাই بيرোক্র্যাসির মতোই একটি কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা। এখানে জ্যেষ্ঠ সন্ন্যাসীরা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং কনিষ্ঠ সন্ন্যাসীরা তাদের অধীনস্থ কর্মচারীর মতো। কেউ কিছু অনৈতিক দেখতে পেলেও মুখ খুলতে সাহস পায় না, কারণ মঠ থেকে বের করে দেওয়া খুবই সহজ।”

তবে কেউ কেউ বলছেন, চলমান তদন্ত এবং সংঘ পরিষদের সক্রিয়তা হয়তো বহু প্রতীক্ষিত সংস্কারের পথ খুলে দিতে পারে। থাম্মাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী প্রাকিরাতি সাতাসুত বলেন, “সত্য উন্মোচন করাই সবচেয়ে জরুরি। এতে সাধারণ মানুষের মনে সংঘ সম্পর্কে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও দূর হবে। এখন প্রশ্ন হলো, সংঘ পরিষদ নিজেকে বাঁচাতে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি।”