০৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র-হামাস আলোচনায় অচলাবস্থা, গাজা ও ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে কূটনৈতিক ব্যস্ততা নদীতে ভাসমান হাট: বরিশাল ও ঝালকাঠির নৌপথে কৃষিপণ্যের জীবন্ত সংস্কৃতি চিতা বাঘ — ছায়ায় লুকিয়ে থাকা বনবাসী যুক্তরাজ্যের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেল ভারত : বাংলাদেশের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও সংকট: ছয় মাসেও কেন থামছে না এই মরণব্যাধি? আধুনিক জীবন ও উদারচিন্তা ভয়ের পরিবেশে: বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি: গমজাত পণ্যের দামের ওপর প্রভাব শয়ে শয়ে মুসলমানকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে তাড়াচ্ছে ভারত, বলছে হিউমান রাইটস ওয়াচ প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৪২) রওশন জামিল — চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও নৃত্যজগতের আলোকবর্তিকা

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৬)

চুড়িদার পায়জামা ও গঞ্জির মতো জামা পরিহিত একজনা লোক লক্ষ দিয়া ঐ ঝুলনের মতো কাষ্ঠাসনে যাইয়া বসিল, শেষে শুনিয়াছি এই উভয় বস্ত্রই রবার নির্মিত।

আমরা এই সময় নৌকা ছাড়িয়া নদীর উত্তর পারে আসিয়া আহসান মঞ্জিলের ধারে আসিয়া বেলুনের তামাসা দেখিতে মনোযোগী হইলাম। দেখিতে ২ বেলুন অতি বড় হইতে লাগিল, নদীর ওপারে যে গ্রাম ছিল বেলুন তাহা হইতে প্রকাণ্ড হইয়া গেল। দেখিতে ২ এই গ্রাম বেলুনের আড়ালে পড়িয়া গেল, গ্রাম হইতে বেলুন অতিবড় বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। উচ্চতাতেও বেলুন গ্রামের ২ বৃক্ষাদি হইতে আরও উচ্চ দেখাইতে লাগিল।

আমরা অনুমান করিলাম ও লোকবাচনিক জ্ঞাত হইলাম যে, ঐ বেলুনটি রবার নির্মিত। তাহার ভিতরে ধোঁয়া করায় বেলুনের কলেবর এতদূর বৃদ্ধি পাইয়াছে। আমরা এই বেলুন পানে চাহিয়া রহিয়াছি, ইতিমধ্যে বন্দুকের আওয়াজের মত-দুড়ম করিয়া একটা শব্দ হইল, বেলুনও তাহার খুটা হইতে ছুটিয়া অতি দ্রুতবেগে উর্দ্ধদিগে উঠিতে লাগিল।

বেলুনের নিচে ঝুলনের মতো একখানা কাঠ লটকান ছিল, শব্দ হওয়া মাত্রই চুড়িদার পায়জামা ও গঞ্জির মতো জামা পরিহিত একজনা লোক লক্ষ দিয়া ঐ ঝুলনের মতো কাষ্ঠাসনে যাইয়া বসিল, শেষে শুনিয়াছি এই উভয় বস্ত্রই রবার নির্মিত।

অতি দ্রুত বেগে বেলুন উর্দ্ধদিকে প্রধাবিত হইল, দক্ষিণের বাতাস থাকায় বেলুন উত্তর দিকে সরিতে লাগিল, আমরা সচরাচর চিল, শকুন ইত্যাদিকে যে পরিমাণ উর্দ্ধে উঠিতে দেখিতে পাই, অনুমান তৎপরিমাণ উর্দ্ধে বেলুন উঠিল, ঠিক আহসান মঞ্জিলের উপর বেলুন আসিয়াছে বলিয়া যখন সর্ব্বজনসাধারণের অনুমান হইল তখনি ঐ বেলুন হইতে ধুয়া বাহির হইতেছে সকলে দেখিল ও কাষ্ঠাসন হইতে পূর্ব্ববর্ণিত লোকটি লক্ষ দিয়া পড়িয়া গেল।

পড়িতে ২ দুতলা তেতলার অন্তরালে অদৃশ্য হইল। এই লোকটি কাষ্ঠাসন হইতে লক্ষ দেয়ার পর তাহার হাতে একটি ছাতি ছিল, সকলেই দেখিয়াছিল বেলুন পরিচালক লোকদিগের কথামত নবাব সাহেব লোক মোতায়েন করিয়াছিলেন। অর্থাৎ বেলুন হইতে লোকটি পড়া আরম্ভ করা মাত্রই, তাহার পতিত স্থানে লোক যেন সত্বর পৌঁছে নবাবের হুকুম ও সকলেরই ইচ্ছা।

বিশেষতঃ দক্ষিণের বায়ু থাকায় সকলেই উত্তর দিকে ধাবিত হইয়াছিল, কেহ কেহবা বেলুন আরোহী ব্যক্তি লক্ষ প্রদান করার পূর্ব্বেই অনুমানের উপরে নির্ভর করিয়া উত্তর দিকে যাইতেছিল। ঐ লোকটি পড়িতে ২ আহসান মঞ্জিল হইতে প্রায় ২ মাইল ৩ মাইল উত্তরে নবাবেরই রমনার বাগিচার ঝাউ গাছে ছাতি লাগিয়া আটকাইয়া যায়।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)

যুক্তরাষ্ট্র-হামাস আলোচনায় অচলাবস্থা, গাজা ও ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে কূটনৈতিক ব্যস্ততা

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৬)

০৭:০০:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

চুড়িদার পায়জামা ও গঞ্জির মতো জামা পরিহিত একজনা লোক লক্ষ দিয়া ঐ ঝুলনের মতো কাষ্ঠাসনে যাইয়া বসিল, শেষে শুনিয়াছি এই উভয় বস্ত্রই রবার নির্মিত।

আমরা এই সময় নৌকা ছাড়িয়া নদীর উত্তর পারে আসিয়া আহসান মঞ্জিলের ধারে আসিয়া বেলুনের তামাসা দেখিতে মনোযোগী হইলাম। দেখিতে ২ বেলুন অতি বড় হইতে লাগিল, নদীর ওপারে যে গ্রাম ছিল বেলুন তাহা হইতে প্রকাণ্ড হইয়া গেল। দেখিতে ২ এই গ্রাম বেলুনের আড়ালে পড়িয়া গেল, গ্রাম হইতে বেলুন অতিবড় বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। উচ্চতাতেও বেলুন গ্রামের ২ বৃক্ষাদি হইতে আরও উচ্চ দেখাইতে লাগিল।

আমরা অনুমান করিলাম ও লোকবাচনিক জ্ঞাত হইলাম যে, ঐ বেলুনটি রবার নির্মিত। তাহার ভিতরে ধোঁয়া করায় বেলুনের কলেবর এতদূর বৃদ্ধি পাইয়াছে। আমরা এই বেলুন পানে চাহিয়া রহিয়াছি, ইতিমধ্যে বন্দুকের আওয়াজের মত-দুড়ম করিয়া একটা শব্দ হইল, বেলুনও তাহার খুটা হইতে ছুটিয়া অতি দ্রুতবেগে উর্দ্ধদিগে উঠিতে লাগিল।

বেলুনের নিচে ঝুলনের মতো একখানা কাঠ লটকান ছিল, শব্দ হওয়া মাত্রই চুড়িদার পায়জামা ও গঞ্জির মতো জামা পরিহিত একজনা লোক লক্ষ দিয়া ঐ ঝুলনের মতো কাষ্ঠাসনে যাইয়া বসিল, শেষে শুনিয়াছি এই উভয় বস্ত্রই রবার নির্মিত।

অতি দ্রুত বেগে বেলুন উর্দ্ধদিকে প্রধাবিত হইল, দক্ষিণের বাতাস থাকায় বেলুন উত্তর দিকে সরিতে লাগিল, আমরা সচরাচর চিল, শকুন ইত্যাদিকে যে পরিমাণ উর্দ্ধে উঠিতে দেখিতে পাই, অনুমান তৎপরিমাণ উর্দ্ধে বেলুন উঠিল, ঠিক আহসান মঞ্জিলের উপর বেলুন আসিয়াছে বলিয়া যখন সর্ব্বজনসাধারণের অনুমান হইল তখনি ঐ বেলুন হইতে ধুয়া বাহির হইতেছে সকলে দেখিল ও কাষ্ঠাসন হইতে পূর্ব্ববর্ণিত লোকটি লক্ষ দিয়া পড়িয়া গেল।

পড়িতে ২ দুতলা তেতলার অন্তরালে অদৃশ্য হইল। এই লোকটি কাষ্ঠাসন হইতে লক্ষ দেয়ার পর তাহার হাতে একটি ছাতি ছিল, সকলেই দেখিয়াছিল বেলুন পরিচালক লোকদিগের কথামত নবাব সাহেব লোক মোতায়েন করিয়াছিলেন। অর্থাৎ বেলুন হইতে লোকটি পড়া আরম্ভ করা মাত্রই, তাহার পতিত স্থানে লোক যেন সত্বর পৌঁছে নবাবের হুকুম ও সকলেরই ইচ্ছা।

বিশেষতঃ দক্ষিণের বায়ু থাকায় সকলেই উত্তর দিকে ধাবিত হইয়াছিল, কেহ কেহবা বেলুন আরোহী ব্যক্তি লক্ষ প্রদান করার পূর্ব্বেই অনুমানের উপরে নির্ভর করিয়া উত্তর দিকে যাইতেছিল। ঐ লোকটি পড়িতে ২ আহসান মঞ্জিল হইতে প্রায় ২ মাইল ৩ মাইল উত্তরে নবাবেরই রমনার বাগিচার ঝাউ গাছে ছাতি লাগিয়া আটকাইয়া যায়।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪৫)