সমকালের একটি শিরোনাম “আলুচাষিরা আলো দেখছেন না, সরকারের সাড়ার অপেক্ষা”
‘ধান, গরু বিক্রি করে আলু চাষ করেছি। এখন বাজারে আলুর দাম নাই। সরকারের কাছে অনুরোধ, ওএমএস-টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রি করে আমাদের বাঁচান। পারলে রপ্তানির ব্যবস্থাও করেন।’
এই আকুতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নানের। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ আর উত্তরের জেলা রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জের আলুচাষিদের আকুতি একই।
আলুচাষিরা চোখে সত্যিই অন্ধকার দেখছেন। অসংগঠিত এই কৃষকদের জন্য আলো হয়ে আসতে সরকারের কাছে ধর্না দিয়েছেন হিমাগার ব্যবসায়ীরা। আলু নিয়ে তারাও বিপাকে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কথা চালাচালি শুরু হয়েছে। একাধিক মন্ত্রণালয়ের সচিব গতকাল রোববার এমন তথ্যই দিয়েছেন সমকালকে।
ঠাকুরগাঁওয়ে গতকাল রোববার হিমাগারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১২ টাকা থেকে পৌনে ১৩ টাকায়। স্থানীয় বাজারে খুচরা পর্যায়ে সেই আলু বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ টাকা দরে। রংপুরে হিমাগারে আলু বিক্রি হয়েছে ১২-১৩ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ১৪-১৫ টাকায়। মুন্সীগঞ্জে হিমাগার ফটকে ১২-১৩ টাকা আর খুচরা বাজারে ১৮-২০ টাকা দরে আলু বিক্রি হয়েছে। আর ঢাকায় আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, এবার আলুর গড় উৎপাদন খরচ ছিল কেজিতে ১৪ টাকা। এর সঙ্গে হিমাগার ভাড়া যোগ হবে। ফলে সরকারি হিসাবেই প্রতি কেজি আলুতে কৃষক লোকসান গুনছেন। বিভিন্ন জেলার কৃষকরা সমকাল প্রতিনিধিদের যে তথ্য দিয়েছেন তাতে এই লোকসান কেজিতে ১০ টাকার মতো।
এ অবস্থায় হিমাগার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ভর্তুকি দিয়ে আলু কেনার আবেদন করেছে। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে অর্থ, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়কে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা তদন্তে সরকারের ৯ সদস্যের কমিশন”
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার কারণ, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, বিমানবন্দরের অতি নিকটবর্তী এলাকার স্থাপনা নির্মাণ এবং ফ্লাইং জোনের অবস্থানগত সঠিকতা ও নিরাপদ পরিচালন বিষয় পরীক্ষা করতে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে সরকার।
গতকাল রোববার রাতে সাবেক সচিব এ কে এম জাফর উল্লা খানকে সভাপতি করে নয় সদস্যের কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রাক্তন সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (প্রশাসন) এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এম সাঈদ হোসাইন; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন করে অতিরিক্ত সচিবকে কমিশনের সদস্য করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. আশিকুর রহমান এবং ব্যারিস্টার আশরাফ আলীকে কমিশনের সদস্য করা হয়েছে।
কমিশনকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার প্রেক্ষিত, কারণ ও দায়দায়িত্ব উদ্ঘাটন; এই ঘটনায় স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক ও অন্যান্যদের জীবনহানি ও গুরুতর আহত হওয়ার বিষয়সহ সকল ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় চিহ্নিত; বিমানবন্দরের অতি নিকটবর্তী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও অপরাপর স্থাপনা নির্মাণ এবং ফ্লাইং জোনের অবস্থানগত সঠিকতা ও নিরাপদ পরিচালন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনগত ও প্রশাসনিক বিষয়গুলো পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “শুধু কি পতিত শক্তিই নির্বাচন বানচাল করতে চায়?”
সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন বানচালে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। বলেছেন, যখনই নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা চলে তখনই নানা ষড়যন্ত্র সামনে আসে। তিনি এর জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন পতিত স্বৈরাচারী শক্তিকে। প্রশ্ন উঠেছে- শুধু কি পতিত শক্তিই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে? নাকি অন্য কোনো শক্তি। দীর্ঘদিন থেকেই শোনা যাচ্ছে তার নিজের ঘরের ভেতর একটা শক্তি নির্বাচনে বিশ্বাসই করে না। অন্তত চারজন নীতিনির্ধারক নির্বাচনবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন সেটা কার না জানা! হালে তারা নির্বাচনমুখী হয়েছেন এমন আভাস-ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে সরকার প্রধান নিজেই যখন নির্বাচনের কথা বলছেন। তখন তারা ভোল পাল্টে প্রকাশ্যে বলছেন, নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া উপায় কী! অথচ তারাই অন্তত দু’টি শক্তির মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াসে লিপ্ত ছিলেন।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের এই দু’টি শক্তি প্রকাশ্যেই নানা শর্ত আরোপ করে নির্বাচনকে ঘোলাটে করেছে। তাদের কথা- সংস্কার, বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়। আবার কখনো পিআর পদ্ধতি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথাও সামনে আনছে বারবার। জুলাই সনদ তো আছেই। এ নিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী শক্তির সঙ্গে বিরোধ অনেকটাই খোলাসা। ষড়যন্ত্র হচ্ছে নানা দিক থেকে। গোপন বৈঠক নয়, অনেকটা প্রকাশ্যেই।
দু’ঘণ্টা বৈঠকের পর এমন একজন নেতাকে আনন্দে আত্মহারা হতে দেখা গেল টিভির পর্দায়। খবর আসছে নানা সূত্র থেকে। সূত্রগুলো বলছে, অতি সম্প্রতি একটি বিশেষ বৈঠকও হয়ে গেল রাজধানীতে। যে বৈঠকের খবর অনেকেই জানেন না হয়তো। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের না জানার কোনো কারণ নেই। প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক হচ্ছে- এটা এখন আর গুজব নয়। ভূ-রাজনীতির খেলাও যে চটজলদি নির্বাচনের পক্ষে নয়- তা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে নির্বাচন অনিশ্চিত এটা সবাই বলছেন।
এই দুর্বল প্রশাসনের পক্ষে নির্বাচন করা কঠিন। এমনটা টকশো শুনলে যে কেউই জানতে পারবেন। পতাকা নামিয়ে একটি আলোচিত বৈঠকের খবরও নানা মাধ্যমে চাউর হয়ে আছে। এসব কিসের আলামত? এ ছাড়া, এখানে- সেখানে অনেক কিছুই ঘটছে। আরও কিছু হয়তো ঘটবে- এমনটাই শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন আড্ডায়, কূটনৈতিক পাড়ায়। নির্বাচন যাতে ফেব্রুয়ারিতে না হয় সে তৎপরতার সঙ্গে আরও একাধিক শক্তি সক্রিয় রয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেই যে নির্বাচন হয়ে যাবে তা মনে করার কোনো কারণ নেই। নিকট অতীতেই আমরা এ ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পরও বিএনপি জমানায় নির্বাচন ভণ্ডুল হয়েছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “বাংলাদেশে ভারতের রফতানি কমেছে ৬ শতাংশের বেশি”
কলকাতার বিমানবন্দর ব্যবহার করে অন্য দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিয়েছিল ভারত। আকস্মিকভাবে গত ৮ এপ্রিল তা বাতিল করা হয়। এর এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতাসহ আরো বেশকিছু পণ্য আমদানি বন্ধ ঘোষণা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভারতে এ বিধিনিষেধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের কুইক এস্টিমেট হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন—তিন মাসে বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। শুধু জুনেই বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন—তিন মাসে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানির অর্থমূল্য ছিল ২৬০ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। গত বছরের একই সময়ে রফতানির অর্থমূল্য ছিল ২৭৭ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এ হিসাবে আলোচ্য তিন মাসে বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
চলতি বছর শুধু জুনে বাংলাদেশে ভারত রফতানি করেছে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ ডলারের পণ্য। গত বছরের জুনে রফতানি করেছিল ৯৮ কোটি ৪০ লাখ ১০ হাজার ডলারের পণ্য। এ হিসাবে শুধু জুনে বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি বা ভারত থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দুই দেশের সরকারের মধ্যে বিরাজমান টানাপড়েন অস্বীকার করার উপায় নেই। যার ফলে পণ্য আমদানি-রফতানিতে দুই দেশের পক্ষ থেকেই পাল্টাপাল্টি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যে। স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে খরচ ও সময় কম লাগে বিধায় স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি হতো। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের রফতানি বা বাংলাদেশের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে। বিধিনিষেধের প্রভাবে দুই দেশই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত।