০১:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

হামলার নিশানায় সাহসী কলম—হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

মুক্তচিন্তার ওপর ছুরিকাঘাত

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি—বাংলা ভাষা, মুক্তবুদ্ধি ও আধুনিকতার এক স্বাক্ষর পুরুষ অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর সেদিন চাপাতির ধার বসেছিল ঠিক তাঁর কণ্ঠের ওপরেই। ঘটনাটি কেবল একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিককে রক্তাক্ত করেনি; এটি ছিল বাংলাদেশের মুক্তচিন্তার মানচিত্রে এযাবৎকালের সবচেয়ে সুপরিকল্পিত ও ভয়াবহ আঘাতগুলোর একটি। যে সমাজে সাহিত্য, গবেষণা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা জাতির অগ্রগতির মাপকাঠি হয়ে দাঁড়ায়—সেই সমাজেই এই হামলা আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: আমরা আদৌ ভিন্নমতকে ধারণ করতে পারি কি না?

হামলার দিন : বইমেলার উৎসব থেকে মৃত্যুযাত্রা

অমর একুশে গ্রন্থমেলার ভাষার উচ্ছ্বাস তখনও শেষ হয়নি। মেলা থেকে বাসায় ফেরার পথেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের খপ্পরে পড়েন। কয়েক সেকেন্ডের ঝড়ে তাঁর গলা, মুখ, ঘাড় ও কাঁধে একাধিক গভীর কোপ পড়ে। পরে চিকিৎসকেরা জানান—মাত্র কয়েক মিনিটের বিলম্ব হলেও প্রাণে রক্ষা পেতেন না।

প্রেক্ষাপট : মৌলবাদ ও পাক সার জমিন সাদ-বাদ

হুমায়ুন আজাদ দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদ, পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক রীতিনীতি ও রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতাকে তাঁর লেখায় সমালোচনার তীর হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। বিশেষত ২০০৩ সালে প্রকাশিত উপন্যাস পাক সার জমিন সাদ-বাদ—যেখানে ইসলামী উগ্রবাদের উত্থান ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কৌশলকে তিনি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও বিশ্লেষণের নিগূঢ শৈলীতে তুলে ধরেন—এটি তাঁকে মৌলবাদীদের প্রধান টার্গেটে রূপান্তর করে। নিয়মিত ফতোয়া, গণমাধ্যমে চরিত্রহনন ও ব্যক্তিগত প্রাণনাশের হুমকি প্রতিদিনের সত্য হয়ে ওঠে।

হামলার ধরণ ও কৌশল : প্রশিক্ষিত হত্যাকাণ্ডের ছাপ

হামলাকারীরা চাপাতি-নির্ভর আক্রমণের যে কৌশল বেছে নেয়, তা আন্তর্জাতিকভাবে আল-কায়েদা ঘরানার ‘ব্লেড অ্যাসাসিনেশন’ পদ্ধতির পর্যায়ে ফেলা যায়—যেখানে দ্রুত হামলা, দ্রুত পলায়ন ও লক্ষ্যব্যক্তি নিশ্চিহ্ন করাই লক্ষ্য। ব্যবহৃত অস্ত্র, আঘাতের দাগ ও অবস্থান বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, তারা শারীরিকভাবে অধ্যাপককে কথা বলার সামর্থ্য থেকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ কেটে ফেলতে চাইছিল—যাতে তাঁর ‘কণ্ঠ’ ও মুক্তচিন্তার প্রতীকী শক্তি চিরতরে নিস্তব্ধ হয়।

বিচারকরা একই কর্মস্থলে ৩ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না - hellobd.news

রাষ্ট্রতদন্ত ও বিচার : অবিশ্বাসের দীর্ঘ টানাপোড়েন

হামলার পর রমনা থানায় মামলা দায়ের হলেও তদন্তের গতি প্রথম থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ২০০৪-এর শেষ দিকে ‘জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)’ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়; কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণ, ফরেনসিক শুলুকসন্ধান ও স্বীকারোক্তির সামঞ্জস্যহীনতা বিচারকে দীর্ঘসূত্রতায় ঠেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষিত হলেও, প্রায় দুই দশক পেরিয়ে যাওয়ায় সেটি প্রতীকী ন্যায়বিচারের দাবির চেয়ে বড় স্বস্তি এনে দেয়নি। ধীর তদন্ত, প্রত্যাশিত বিচারহীনতা ও জঙ্গি-দমন প্রক্রিয়ার রাজনৈতিক টানাপোড়েন—এসবই রাষ্ট্রের সক্ষমতা নিয়ে আরেক দফা বিতর্ক উসকে দেয়।

মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতার বর্তমান অবস্থা

হুমায়ুন আজাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখক, সম্পাদক, অনুবাদক ও ব্লগারদের ওপর হামলা বা হত্যার ধারাবাহিকতা পরবর্তী বছরগুলোতে বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-সংক্রান্ত আতঙ্ক ও অনলাইন হুমকি—উভয়েই প্রমাণ করে যে, ভিন্নমত দমনের কৌশল শুধু শারীরিক হামলা নয়; আইনি ও ডিজিটাল পর্যায়েও বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গামী তরুণ গবেষক-লেখকদের একটি অংশ আত্ম-সংযমী হয়ে পড়ছে; কেউ কেউ দেশত্যাগকেই বেছে নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক আলোড়ন

ওই সময়ে পেন ইন্টারন্যাশনাল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবিলম্বে দোষীদের বিচারে আনতে আহ্বান জানায়। জার্মান সরকার তাকে চিকিৎসা-সহায়তা প্রদান করে বার্লিনে স্থানান্তর করে; সেখানে নতুন করে ‘বাকস্বাধীনতার নিরাপত্তা’ সংক্রান্ত আলোচনায় তাঁর নাম প্রবলভাবে উচ্চারিত হয়। বাংলাদেশি প্রবাসী বুদ্ধিজীবীরাও দিনরাত প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন।

হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসির রায়

আজাদের চিন্তার সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা

হুমায়ুন আজাদ শারীরিকভাবে আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু ‘ভয়কে ভয় করতে নেই’—এই মন্ত্রটি এখনও তরুণ সাহিত্যিক, ব্লগার ও সমাজ-সংস্কারকদের অনুপ্রাণিত করে। তাঁর ভাষাগত নিরীক্ষা, সমাজ-রাজনীতি বিশ্লেষণ ও অন্তর্গত বিদ্রোহ বেঁচে আছে প্রতিটি বন্ধনহীন বাক্যে, প্রতিটি বিতর্কিত প্রশ্নে। তাঁর রক্তধারা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—প্রকৃত আত্মিক মুক্তি পেতে হলে প্রশ্ন তুলতেই হবে, নতজানু হলে চলবে না।

কলম কখনো থামে না

একটি জাতি যখন সাহসী কলমকে স্তব্ধ করতে ছুরি তোলে, তখন সে জাতি নিজেরই কণ্ঠরোধ করে। হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা সেই গভীরতম শঙ্কার ইঙ্গিত দেয়, যেখান থেকে আমাদের এখনো মুক্তি মেলেনি। তবু প্রতিটি কলম, প্রতিটি প্রশ্ন, প্রতিটি স্বাধীন বাক্য—এই হামলার বিরুদ্ধে টিকে থাকা এক একটি আলোকিত প্রত্যুত্তর। আজাদের অসমাপ্ত স্বপ্নই আমাদের নতুন স্বপ্ন, তাঁর অসমাপ্ত বাক্যই আমাদের নতুন বাক্য। কলম চলবে, কারণ থেমে গেলেই আমরা সবাই পরাজিত।

হামলার নিশানায় সাহসী কলম—হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

০৩:৪৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

মুক্তচিন্তার ওপর ছুরিকাঘাত

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি—বাংলা ভাষা, মুক্তবুদ্ধি ও আধুনিকতার এক স্বাক্ষর পুরুষ অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর সেদিন চাপাতির ধার বসেছিল ঠিক তাঁর কণ্ঠের ওপরেই। ঘটনাটি কেবল একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিককে রক্তাক্ত করেনি; এটি ছিল বাংলাদেশের মুক্তচিন্তার মানচিত্রে এযাবৎকালের সবচেয়ে সুপরিকল্পিত ও ভয়াবহ আঘাতগুলোর একটি। যে সমাজে সাহিত্য, গবেষণা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা জাতির অগ্রগতির মাপকাঠি হয়ে দাঁড়ায়—সেই সমাজেই এই হামলা আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: আমরা আদৌ ভিন্নমতকে ধারণ করতে পারি কি না?

হামলার দিন : বইমেলার উৎসব থেকে মৃত্যুযাত্রা

অমর একুশে গ্রন্থমেলার ভাষার উচ্ছ্বাস তখনও শেষ হয়নি। মেলা থেকে বাসায় ফেরার পথেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের খপ্পরে পড়েন। কয়েক সেকেন্ডের ঝড়ে তাঁর গলা, মুখ, ঘাড় ও কাঁধে একাধিক গভীর কোপ পড়ে। পরে চিকিৎসকেরা জানান—মাত্র কয়েক মিনিটের বিলম্ব হলেও প্রাণে রক্ষা পেতেন না।

প্রেক্ষাপট : মৌলবাদ ও পাক সার জমিন সাদ-বাদ

হুমায়ুন আজাদ দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় উগ্রবাদ, পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক রীতিনীতি ও রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতাকে তাঁর লেখায় সমালোচনার তীর হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। বিশেষত ২০০৩ সালে প্রকাশিত উপন্যাস পাক সার জমিন সাদ-বাদ—যেখানে ইসলামী উগ্রবাদের উত্থান ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কৌশলকে তিনি ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও বিশ্লেষণের নিগূঢ শৈলীতে তুলে ধরেন—এটি তাঁকে মৌলবাদীদের প্রধান টার্গেটে রূপান্তর করে। নিয়মিত ফতোয়া, গণমাধ্যমে চরিত্রহনন ও ব্যক্তিগত প্রাণনাশের হুমকি প্রতিদিনের সত্য হয়ে ওঠে।

হামলার ধরণ ও কৌশল : প্রশিক্ষিত হত্যাকাণ্ডের ছাপ

হামলাকারীরা চাপাতি-নির্ভর আক্রমণের যে কৌশল বেছে নেয়, তা আন্তর্জাতিকভাবে আল-কায়েদা ঘরানার ‘ব্লেড অ্যাসাসিনেশন’ পদ্ধতির পর্যায়ে ফেলা যায়—যেখানে দ্রুত হামলা, দ্রুত পলায়ন ও লক্ষ্যব্যক্তি নিশ্চিহ্ন করাই লক্ষ্য। ব্যবহৃত অস্ত্র, আঘাতের দাগ ও অবস্থান বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, তারা শারীরিকভাবে অধ্যাপককে কথা বলার সামর্থ্য থেকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ কেটে ফেলতে চাইছিল—যাতে তাঁর ‘কণ্ঠ’ ও মুক্তচিন্তার প্রতীকী শক্তি চিরতরে নিস্তব্ধ হয়।

বিচারকরা একই কর্মস্থলে ৩ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না - hellobd.news

রাষ্ট্রতদন্ত ও বিচার : অবিশ্বাসের দীর্ঘ টানাপোড়েন

হামলার পর রমনা থানায় মামলা দায়ের হলেও তদন্তের গতি প্রথম থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ২০০৪-এর শেষ দিকে ‘জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)’ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়; কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণ, ফরেনসিক শুলুকসন্ধান ও স্বীকারোক্তির সামঞ্জস্যহীনতা বিচারকে দীর্ঘসূত্রতায় ঠেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষিত হলেও, প্রায় দুই দশক পেরিয়ে যাওয়ায় সেটি প্রতীকী ন্যায়বিচারের দাবির চেয়ে বড় স্বস্তি এনে দেয়নি। ধীর তদন্ত, প্রত্যাশিত বিচারহীনতা ও জঙ্গি-দমন প্রক্রিয়ার রাজনৈতিক টানাপোড়েন—এসবই রাষ্ট্রের সক্ষমতা নিয়ে আরেক দফা বিতর্ক উসকে দেয়।

মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতার বর্তমান অবস্থা

হুমায়ুন আজাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখক, সম্পাদক, অনুবাদক ও ব্লগারদের ওপর হামলা বা হত্যার ধারাবাহিকতা পরবর্তী বছরগুলোতে বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-সংক্রান্ত আতঙ্ক ও অনলাইন হুমকি—উভয়েই প্রমাণ করে যে, ভিন্নমত দমনের কৌশল শুধু শারীরিক হামলা নয়; আইনি ও ডিজিটাল পর্যায়েও বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গামী তরুণ গবেষক-লেখকদের একটি অংশ আত্ম-সংযমী হয়ে পড়ছে; কেউ কেউ দেশত্যাগকেই বেছে নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক আলোড়ন

ওই সময়ে পেন ইন্টারন্যাশনাল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবিলম্বে দোষীদের বিচারে আনতে আহ্বান জানায়। জার্মান সরকার তাকে চিকিৎসা-সহায়তা প্রদান করে বার্লিনে স্থানান্তর করে; সেখানে নতুন করে ‘বাকস্বাধীনতার নিরাপত্তা’ সংক্রান্ত আলোচনায় তাঁর নাম প্রবলভাবে উচ্চারিত হয়। বাংলাদেশি প্রবাসী বুদ্ধিজীবীরাও দিনরাত প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন।

হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জঙ্গির ফাঁসির রায়

আজাদের চিন্তার সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা

হুমায়ুন আজাদ শারীরিকভাবে আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু ‘ভয়কে ভয় করতে নেই’—এই মন্ত্রটি এখনও তরুণ সাহিত্যিক, ব্লগার ও সমাজ-সংস্কারকদের অনুপ্রাণিত করে। তাঁর ভাষাগত নিরীক্ষা, সমাজ-রাজনীতি বিশ্লেষণ ও অন্তর্গত বিদ্রোহ বেঁচে আছে প্রতিটি বন্ধনহীন বাক্যে, প্রতিটি বিতর্কিত প্রশ্নে। তাঁর রক্তধারা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—প্রকৃত আত্মিক মুক্তি পেতে হলে প্রশ্ন তুলতেই হবে, নতজানু হলে চলবে না।

কলম কখনো থামে না

একটি জাতি যখন সাহসী কলমকে স্তব্ধ করতে ছুরি তোলে, তখন সে জাতি নিজেরই কণ্ঠরোধ করে। হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা সেই গভীরতম শঙ্কার ইঙ্গিত দেয়, যেখান থেকে আমাদের এখনো মুক্তি মেলেনি। তবু প্রতিটি কলম, প্রতিটি প্রশ্ন, প্রতিটি স্বাধীন বাক্য—এই হামলার বিরুদ্ধে টিকে থাকা এক একটি আলোকিত প্রত্যুত্তর। আজাদের অসমাপ্ত স্বপ্নই আমাদের নতুন স্বপ্ন, তাঁর অসমাপ্ত বাক্যই আমাদের নতুন বাক্য। কলম চলবে, কারণ থেমে গেলেই আমরা সবাই পরাজিত।