০৬:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
সাধারণ মানুষের সচেতনতাই ডিজিটাল ভূমিসেবার সাফল্য: সিনিয়র সচিব মানবাধিকার সংগঠনের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে সংকুচিত হচ্ছে গণতান্ত্রিক পরিসর শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি, দাবি না মানলে লং মার্চের ঘোষণা গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই অন্তত ১০টি বসতঘর দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তপ্ত বিক্ষোভ, ব্যারিকেড ভেঙে ঢোকার চেষ্টা আইসিসিআরের দিগন্ত সিরিজে সংগীতের সন্ধ্যা কলকাতায় বাংলাদেশের সঙ্গে শুল্ক কমাতে বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করল জাপান চব্বিশ সেকেন্ডে উনত্রিশ গুলি, আত্মরক্ষার দাবি ঘিরে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে মার্কোস জুনিয়র ২০২৫ সালে কোনোমতে টিকে ছিলেন। ২০২৬ সালে কি তিনি পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজে পাবেন? ছুটির মৌসুমে ছাঁটাইয়ের শঙ্কা বাড়ছে, প্রস্তুত থাকাই এখন সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩২৬)

তিনি বাধ্য হইয়া দেবী সিংহকে পূর্ণিয়ার ইজারা ও তৎসঙ্গে উক্ত প্রদেশের শাসন-ভারও অর্পণ করিলেন। দেবী সিংহ পূর্ণিয়ার ভার প্রাপ্ত হইয়া আপনার বহুদিনের সঞ্চিত আশার পরিতৃপ্তিসাধনে সচেষ্ট হইলেন। তিনি নিজ প্রকৃতির এক এক স্তর উদ্ঘাটন করিতে লাগিলেন। যে সমস্ত শালিত অস্ত্রে তাঁহার মস্তিষ্ক-তুগ পরিপূর্ণ ছিল, একে একে সে সকলের ক্রীড়া আরম্ভ হইল। অবিলম্বে পূর্ণিয়ার জমিদার ও প্রজাগণ তাঁহাকে বিশেষরূপে চিনিতে পারিল। যে একবার অল্পকালের জন্য তাঁহার হস্তে পতিত হইয়াছে, অমনি তাঁহাকে তাঁহার শাণিত অস্ত্রে ক্ষতবিক্ষত হইতে হইয়াছে।
ক্রমে কাল্পনিক অস্ত্র পরিত্যাগ করিয়া, দেবীসিংহ বাস্তব অস্ত্র চালাইতে আরম্ভ করিলেন। প্রবঞ্চনা, বিশ্বাসঘাতকতায় সুযোগ না পাইয়া, তিনি প্রজা ও জমিদারগণের উপর ভীষণ অত্যাচারের অভিনয় দেখাইতে লাগিলেন। তাঁহার অত্যাচারে পূর্ণিয়াবাসিগণ আপন আপন বাসভবন পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন আরম্ভ করিল! অচিরকালমধ্যে সমগ্র প্রদেশ অর্থজনশূন্ত হইয়া ধ্বংসপথে অগ্রসর হইতে লাগিল। যাহারা অবশিষ্ট রহিল, তাহারা দ্বিগুণ অত্যাচারে অতিমাত্র প্রপীড়িত হইয়া, অবিরত ‘ত্রাহি ত্রাহি’ করিতে লাগিল।
অল্পদিনের মধ্যে বাঙ্গলার চারিদিকে দেবীসিংহের নাম রাষ্ট্র হইয়া পড়িল। পূর্ব্বে নয় লক্ষ টাকায় পূর্ণিয়ার ইজারা বন্দোবস্ত হইত, কিন্তু সুজন্মায় বৎসরেও কোন কালে ছয় লক্ষের অধিক টাকা আদায় হয় নাই। কিন্তু দেবীসিংহ ১৬ লক্ষ টাকার বন্দোবস্তে ইজারা গ্রহণ নিজের লাভ রাখিয়া সেই ষোল লক্ষ টাকা আদায় করিতে তাঁহার যাহা আবশ্যক, সমস্তই অবলম্বন করিতে হইল। যেখানে ছয় লক্ষ টাকার অধিক আদায়ের সম্ভাবনা ছিল না, সেখান হইতে কিরূপে ১৬ লক্ষের অধিক আদায় হইতে পারে, তাহা সহজেই বুঝিতে পারা যায়।
কোন স্থান হইতে পূর্ব্বনিদিষ্ট রাজস্বের তিনগুণ আদার করিতে হইলে, নিরীহ প্রজা এবং জমিদারদিগেরও প্রতি কি প্রকার অত্যাচার করিতে হয়, তাহা ভাবিয়া স্থির করা যায় না। কিন্তু মন্তব্যে যাহা ভাবিয়া স্থির করিতে না পারে, দেবীসিংহের নিকট তাহা সহজেই উপস্থিত হয়। কাজেই অত্যাচারের যত প্রকার উপায় হইতে পারে, তাঁহার উদ্ভাবনী শক্তি দিন দিন তত প্রকারের সৃষ্টি করিতে লাগিল। সেই জন্ম পূর্ণিয়া মরুভূমিতে পরিণত হইয়া উঠে। দেবীসিংহ-কর্তৃক পূর্ণিয়া কিরূপে শাসিত হইয়াছিল, নিম্নলিখিত ঘটনা হইতে তাহা বেশ বুঝা যায়।
জনপ্রিয় সংবাদ

সাধারণ মানুষের সচেতনতাই ডিজিটাল ভূমিসেবার সাফল্য: সিনিয়র সচিব

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩২৬)

১১:০০:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
তিনি বাধ্য হইয়া দেবী সিংহকে পূর্ণিয়ার ইজারা ও তৎসঙ্গে উক্ত প্রদেশের শাসন-ভারও অর্পণ করিলেন। দেবী সিংহ পূর্ণিয়ার ভার প্রাপ্ত হইয়া আপনার বহুদিনের সঞ্চিত আশার পরিতৃপ্তিসাধনে সচেষ্ট হইলেন। তিনি নিজ প্রকৃতির এক এক স্তর উদ্ঘাটন করিতে লাগিলেন। যে সমস্ত শালিত অস্ত্রে তাঁহার মস্তিষ্ক-তুগ পরিপূর্ণ ছিল, একে একে সে সকলের ক্রীড়া আরম্ভ হইল। অবিলম্বে পূর্ণিয়ার জমিদার ও প্রজাগণ তাঁহাকে বিশেষরূপে চিনিতে পারিল। যে একবার অল্পকালের জন্য তাঁহার হস্তে পতিত হইয়াছে, অমনি তাঁহাকে তাঁহার শাণিত অস্ত্রে ক্ষতবিক্ষত হইতে হইয়াছে।
ক্রমে কাল্পনিক অস্ত্র পরিত্যাগ করিয়া, দেবীসিংহ বাস্তব অস্ত্র চালাইতে আরম্ভ করিলেন। প্রবঞ্চনা, বিশ্বাসঘাতকতায় সুযোগ না পাইয়া, তিনি প্রজা ও জমিদারগণের উপর ভীষণ অত্যাচারের অভিনয় দেখাইতে লাগিলেন। তাঁহার অত্যাচারে পূর্ণিয়াবাসিগণ আপন আপন বাসভবন পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন আরম্ভ করিল! অচিরকালমধ্যে সমগ্র প্রদেশ অর্থজনশূন্ত হইয়া ধ্বংসপথে অগ্রসর হইতে লাগিল। যাহারা অবশিষ্ট রহিল, তাহারা দ্বিগুণ অত্যাচারে অতিমাত্র প্রপীড়িত হইয়া, অবিরত ‘ত্রাহি ত্রাহি’ করিতে লাগিল।
অল্পদিনের মধ্যে বাঙ্গলার চারিদিকে দেবীসিংহের নাম রাষ্ট্র হইয়া পড়িল। পূর্ব্বে নয় লক্ষ টাকায় পূর্ণিয়ার ইজারা বন্দোবস্ত হইত, কিন্তু সুজন্মায় বৎসরেও কোন কালে ছয় লক্ষের অধিক টাকা আদায় হয় নাই। কিন্তু দেবীসিংহ ১৬ লক্ষ টাকার বন্দোবস্তে ইজারা গ্রহণ নিজের লাভ রাখিয়া সেই ষোল লক্ষ টাকা আদায় করিতে তাঁহার যাহা আবশ্যক, সমস্তই অবলম্বন করিতে হইল। যেখানে ছয় লক্ষ টাকার অধিক আদায়ের সম্ভাবনা ছিল না, সেখান হইতে কিরূপে ১৬ লক্ষের অধিক আদায় হইতে পারে, তাহা সহজেই বুঝিতে পারা যায়।
কোন স্থান হইতে পূর্ব্বনিদিষ্ট রাজস্বের তিনগুণ আদার করিতে হইলে, নিরীহ প্রজা এবং জমিদারদিগেরও প্রতি কি প্রকার অত্যাচার করিতে হয়, তাহা ভাবিয়া স্থির করা যায় না। কিন্তু মন্তব্যে যাহা ভাবিয়া স্থির করিতে না পারে, দেবীসিংহের নিকট তাহা সহজেই উপস্থিত হয়। কাজেই অত্যাচারের যত প্রকার উপায় হইতে পারে, তাঁহার উদ্ভাবনী শক্তি দিন দিন তত প্রকারের সৃষ্টি করিতে লাগিল। সেই জন্ম পূর্ণিয়া মরুভূমিতে পরিণত হইয়া উঠে। দেবীসিংহ-কর্তৃক পূর্ণিয়া কিরূপে শাসিত হইয়াছিল, নিম্নলিখিত ঘটনা হইতে তাহা বেশ বুঝা যায়।