১২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
আফগানিস্তানে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের রাজধানীর ৬০ নটিক্যাল মাইল এলাকাজুড়ে বিমান চলাচলে জিপিএস বিভ্রাট, পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের উদ্বেগ ভারতের কেরালা সাবরিমালা স্বর্ণ আত্মসাত মামলা: আরও এক অভিযুক্ত গ্রেপ্তার আরব আমিরাতে ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে বিপ্লব উপসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় উদ্যোক্তা ও নেতাদের অসাধারণ অবদান মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে নতুন অধ্যায় গড়ছে জিই অ্যারোস্পেস বিহারের অর্থনৈতিক উন্নতি কি সত্যিই দেশের বাকি অংশের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে? রাশিয়া যে কোনো সময় ন্যাটোর বিরুদ্ধে সীমিত আক্রমণ চালাতে পারে বিপর্যস্ত ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ কে দেখবে? চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে: ঝুঁকিপূর্ণ ২৫ এলাকা চিহ্নিত

গৃহযুদ্ধের ইন্ধন নিয়েই বিশৃঙ্খলা

কেন ১৬৪১৪২ সালের শীতকাল মোড় ঘোরাল

১৬৪২ সালের ৪ জানুয়ারি, রাজা চার্লস প্রথম ক্ষুব্ধ হয়ে হাউস অব কমন্সে পৌঁছে পাঁচজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেন। তার আগের বছরজুড়ে কর, ধর্ম ও স্বাধীনতার প্রশ্নে রাজা-সংসদের উত্তেজনা, রাস্তার প্রতিবাদ আর অরাজকতা দেশকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়। ওই নাটকীয় ঘটনার পরই ইংল্যান্ড গৃহযুদ্ধের পথে গড়ায়। ইতিহাসে দীর্ঘমেয়াদি কারণগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও, হিলি মনে করিয়ে দেন—উদ্দীপক মুহূর্তগুলোই আকস্মিকভাবে দিক বদলে দেয়।

সতেরো শতকের পার্লামেন্ট: উদ্দেশ্য বনাম সীমা

সে সময় পার্লামেন্ট প্রায়ই বসতো না; রাজা প্রয়োজনে ডাকলে তবেই অধিবেশন হতো। তাদের প্রধান কাজ ছিল যুদ্ধের জন্য কর অনুমোদন ও আইন প্রস্তাব করা। আইনে লাগত রাজাদের স্বাক্ষর। তবে ধীরে ধীরে সংসদ বিদেশনীতি থেকে শুরু করে রাজকার্য নিয়েও আলোচনা শুরু করে—রাজতন্ত্রের চোখে যা ‘সীমা লঙ্ঘন’। করের বোঝা টানতে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী এমপিদের মতে, সিদ্ধান্তে তাদের কথা থাকাই যুক্তিযুক্ত। এতে সংঘাত চরমে পৌঁছে যায়।

রাজা-সংসদ বিরোধের পটভূমি

১৬২০-এর দশকে কর, ধর্মীয় পন্থা ও বিনা অভিযোগে বন্দিত্বের অধিকার নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষে সম্পর্ক ভেঙে যায়। চার্লস এরপর দীর্ঘ ‘ব্যক্তিগত শাসন’ চালান। কিন্তু সে সময় জমে ওঠা অভিযোগ ও স্কটল্যান্ড বিদ্রোহের চাপ তাঁকে ১৬৪০-এ আবার পার্লামেন্ট ডাকতে বাধ্য করে। ‘লং পার্লামেন্ট’-এর শুরুতে সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য থাকলেও, এক বছরেই কিছু এমপি বিশপদের ক্ষমতা ছাঁটাই ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতি সামনে আনেন; শীতকাল নাগাদ এরই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

চার্লস প্রথমের ব্যক্তিত্ব কতটা মৌলিক ইন্ধন জুগিয়েছিল

চার্লস ছিলেন হাই অ্যাংলিকান উপাসনার পক্ষপাতী; নিচ থেকে উঠে আসা মতামত নিয়েও স্বচ্ছন্দ নন। তিনি শ্রেণিক্রম ও অভিজাত উৎসাহে আস্থাশীল ছিলেন, সঙ্গে ছিল ‘আমি সঠিক’—এমন রাজসিক দৃঢ়তা। পন্থার চেয়ে ফলকে মুখ্য ধরার মনোভাব তাঁকে আরও ভীতিকর করে তোলে। তাই সংসদ ও জনতার শঙ্কা বেড়েছিল—রাজা পরবর্তী ধাপেও কতটা এগোতে পারেন।

পর্দার সামনে ও পেছনে মূল খেলোয়াড়

রানি হেনরিয়েটা মারিয়া ছিলেন কূটনৈতিক আন্তঃসংযোগের কেন্দ্র; স্যার এডওয়ার্ড নিকোলাস রাজপক্ষের সংগঠক হলেও অভিজাত নেটওয়ার্কের জন্য রানির দ্বারস্থ হন। অন্যদিকে সংসদীয় নেতা জন পিম ছিলেন দক্ষ কৌশলী—সমর্থকদের একত্র করে রাজক্ষমতার বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য গড়েছিলেন। এদের মেলামেশায় পাল্লা ক্রমে দুলে ওঠে।

শিক্ষণীয় কথা

হিলি বলেন, বিপ্লব বা গৃহযুদ্ধের মতো বিশাল ঘটনায় দীর্ঘসূত্রতার কারণ আছে, তবু সেগুলোকে কার্যকর করে কয়েকটি ক্ষণিকের সিদ্ধান্ত। ইতিহাস গবেষণায় তাই দিন-দিন বা মিনিট-মিনিট বিবরণে ঢুকে বোঝা জরুরি—কোনো টার্নিং পয়েন্টে দিক বদলেছে।

বই পরিচিতি

দ্য ব্লাড ইন উইন্টার: আ নেশন ডিসেন্ডস, ১৬৪২ — জনাথন হিলি; ব্লুমসবারি; ৪৩২ পৃষ্ঠা; £২৫।

লেখক পরিচয়

জনাথন হিলি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক। তাঁর পূর্ববর্তী গ্রন্থ দ্য ব্লেজিং ওয়ার্ল্ড (২০২৩)।

জনপ্রিয় সংবাদ

আফগানিস্তানে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞার কারণে

গৃহযুদ্ধের ইন্ধন নিয়েই বিশৃঙ্খলা

১২:০১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

কেন ১৬৪১৪২ সালের শীতকাল মোড় ঘোরাল

১৬৪২ সালের ৪ জানুয়ারি, রাজা চার্লস প্রথম ক্ষুব্ধ হয়ে হাউস অব কমন্সে পৌঁছে পাঁচজন সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেন। তার আগের বছরজুড়ে কর, ধর্ম ও স্বাধীনতার প্রশ্নে রাজা-সংসদের উত্তেজনা, রাস্তার প্রতিবাদ আর অরাজকতা দেশকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়। ওই নাটকীয় ঘটনার পরই ইংল্যান্ড গৃহযুদ্ধের পথে গড়ায়। ইতিহাসে দীর্ঘমেয়াদি কারণগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও, হিলি মনে করিয়ে দেন—উদ্দীপক মুহূর্তগুলোই আকস্মিকভাবে দিক বদলে দেয়।

সতেরো শতকের পার্লামেন্ট: উদ্দেশ্য বনাম সীমা

সে সময় পার্লামেন্ট প্রায়ই বসতো না; রাজা প্রয়োজনে ডাকলে তবেই অধিবেশন হতো। তাদের প্রধান কাজ ছিল যুদ্ধের জন্য কর অনুমোদন ও আইন প্রস্তাব করা। আইনে লাগত রাজাদের স্বাক্ষর। তবে ধীরে ধীরে সংসদ বিদেশনীতি থেকে শুরু করে রাজকার্য নিয়েও আলোচনা শুরু করে—রাজতন্ত্রের চোখে যা ‘সীমা লঙ্ঘন’। করের বোঝা টানতে জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী এমপিদের মতে, সিদ্ধান্তে তাদের কথা থাকাই যুক্তিযুক্ত। এতে সংঘাত চরমে পৌঁছে যায়।

রাজা-সংসদ বিরোধের পটভূমি

১৬২০-এর দশকে কর, ধর্মীয় পন্থা ও বিনা অভিযোগে বন্দিত্বের অধিকার নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষে সম্পর্ক ভেঙে যায়। চার্লস এরপর দীর্ঘ ‘ব্যক্তিগত শাসন’ চালান। কিন্তু সে সময় জমে ওঠা অভিযোগ ও স্কটল্যান্ড বিদ্রোহের চাপ তাঁকে ১৬৪০-এ আবার পার্লামেন্ট ডাকতে বাধ্য করে। ‘লং পার্লামেন্ট’-এর শুরুতে সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য থাকলেও, এক বছরেই কিছু এমপি বিশপদের ক্ষমতা ছাঁটাই ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতি সামনে আনেন; শীতকাল নাগাদ এরই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

চার্লস প্রথমের ব্যক্তিত্ব কতটা মৌলিক ইন্ধন জুগিয়েছিল

চার্লস ছিলেন হাই অ্যাংলিকান উপাসনার পক্ষপাতী; নিচ থেকে উঠে আসা মতামত নিয়েও স্বচ্ছন্দ নন। তিনি শ্রেণিক্রম ও অভিজাত উৎসাহে আস্থাশীল ছিলেন, সঙ্গে ছিল ‘আমি সঠিক’—এমন রাজসিক দৃঢ়তা। পন্থার চেয়ে ফলকে মুখ্য ধরার মনোভাব তাঁকে আরও ভীতিকর করে তোলে। তাই সংসদ ও জনতার শঙ্কা বেড়েছিল—রাজা পরবর্তী ধাপেও কতটা এগোতে পারেন।

পর্দার সামনে ও পেছনে মূল খেলোয়াড়

রানি হেনরিয়েটা মারিয়া ছিলেন কূটনৈতিক আন্তঃসংযোগের কেন্দ্র; স্যার এডওয়ার্ড নিকোলাস রাজপক্ষের সংগঠক হলেও অভিজাত নেটওয়ার্কের জন্য রানির দ্বারস্থ হন। অন্যদিকে সংসদীয় নেতা জন পিম ছিলেন দক্ষ কৌশলী—সমর্থকদের একত্র করে রাজক্ষমতার বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য গড়েছিলেন। এদের মেলামেশায় পাল্লা ক্রমে দুলে ওঠে।

শিক্ষণীয় কথা

হিলি বলেন, বিপ্লব বা গৃহযুদ্ধের মতো বিশাল ঘটনায় দীর্ঘসূত্রতার কারণ আছে, তবু সেগুলোকে কার্যকর করে কয়েকটি ক্ষণিকের সিদ্ধান্ত। ইতিহাস গবেষণায় তাই দিন-দিন বা মিনিট-মিনিট বিবরণে ঢুকে বোঝা জরুরি—কোনো টার্নিং পয়েন্টে দিক বদলেছে।

বই পরিচিতি

দ্য ব্লাড ইন উইন্টার: আ নেশন ডিসেন্ডস, ১৬৪২ — জনাথন হিলি; ব্লুমসবারি; ৪৩২ পৃষ্ঠা; £২৫।

লেখক পরিচয়

জনাথন হিলি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক। তাঁর পূর্ববর্তী গ্রন্থ দ্য ব্লেজিং ওয়ার্ল্ড (২০২৩)।