সুবন্ধুর বাসবদত্তা এবং শ্রীহর্ষের নৈষদ চরিতে ‘শূন্য বিন্দু’ বলে উল্লিখিত আছে। ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণে শূন্যকে বিন্দু বলা হয়েছে।
বিখ্যাত গণিত ঐতিহাসিক জর্জ সার্টন এর ভাষায় “এ শুধু নূতন প্রতীকের ব্যাপার নয়, এ এক সম্পূর্ণ নূতন ধরণের পাটীগণিত।” বিখ্যাত ঐতিহাসিক হলষ্টেড “অন দি ফাউণ্ডেশন এ্যাণ্ড টেকনিক অফ এরিথমেটিক” গ্রন্থে বলেছেন শূন্য প্রতীকটির আবিষ্কারের গুরুত্ব সম্বন্ধে কোন উক্তিই অতিশয়োক্তি হতে পারে না।
অনস্তিত্বকে এইভাবে শুধু বাসস্থান, নাম, আকার ও রূপ দানই নয়, তার মধ্যে ব্যবহারোপযোগী শক্তি প্রতিষ্ঠা করা-এ কাজ যেমন হিন্দুদের দ্বারা সাধিত, তেমনি হিন্দুদের দ্বারাই সাধ্য। এ যেন নির্বাণ থেকে ডাইনামো প্রস্তুত করা। শক্তি ও বুদ্ধির অগ্রগতির পক্ষে এককভাবে আর কোন গাণিতিক সৃষ্ট এর চেয়ে বড় অবদান নেই।”১
মেকারস্ অব ম্যাথেমেটিকসে হুপার অঙ্কপাতন পদ্ধতিকে বলেছেন, “অভিনব বৈপ্লবিক এবং এ সেই পদ্ধতি যা বর্তমান যুগের বিজ্ঞান, কারিগরী বিদ্যা ও নভোশ্চারণ বিদ্যার পথ রচনা করেছে।
ঐতিহাসিক ফ্রিবেরী বলেছেন, “… বাস্তবে ‘অনস্তিত্ব’র কি অসাধারণ গুরুত্ব। কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন যে, অঙ্কের মধ্যে স্বতন্ত্র, সুনির্দিষ্টভাবে শূক্তকে গ্রহণ করা সমগ্র গণিতশাস্ত্রের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর অন্যতম। হিন্দুদের দ্বিতীয় মহান অবদান দশমিক স্থানীয়মান পদ্ধতি। খুব জোরের সঙ্গে এ কথাই আবার বলছি যে, গণিতের মুক্তি এনেছে শূল্প পরিকল্পনায় ও দশমিক স্থানীয়মান পদ্ধতি।
শৃষ্ণের ব্যবহার বা শূল্পের ধারণা ভারতীয় সাহিত্যে প্রচুর দেখা যায়। লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে ভারতীয়রা শূক্তকে প্রথমে বিন্দু দিয়ে তারপর ছোট বৃত্তের সাহায্যে প্রকাশ করতেন। কে বলতে পারে ভারতীয়রা বহুপূর্বে শূন্যকে অন্য কোন প্রতীকের সাহায্যে প্রকাশ করতো কি না? সুবন্ধুর বাসবদত্তা এবং শ্রীহর্ষের নৈষদ চরিতে ‘শূন্য বিন্দু’ বলে উল্লিখিত আছে। ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণে শূন্যকে বিন্দু বলা হয়েছে। কাশ্মীরীয় অথর্ববেদেও এ ধরণের উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।
বরাহমিহিরের ‘বৃহৎসংহিতা’ এবং পঞ্চসিদ্ধান্তিকায় শৃষ্ণের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আনুমানিক দু’শ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে রচিত পিঙ্গলের ছন্দসূত্রে শূন্যের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এই গ্রন্থে ২০,২৮২৩৮২০১০০৪ সংখ্যাটির উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















