ভগ্নাবশেষ এখন দেখা যাবে চক মসজিদ কমপ্লেক্সের পিছে। মোগলটুলিতে গড়ে উঠেছিল স্বতন্ত্র আরেকটি বই বিক্রির এলাকা।
ঢাকার আদি বইয়ের দোকান
উনিশ শতকে ঢাকার বই বিক্রির দোকানগুলি কেন্দ্রীভূত ছিল প্রধানত ইসলামপুর, পাটুয়াটুলি, মোগলটুলি ও চকবাজারে। এসব দোকানে পাঠ্যবই-ই মজুদ থাকত বেশি। প্রথম তিনটি কেন্দ্র থেকে চকবাজার ছিল ভিন্ন। এখানে বিক্রি হতো শুধু পুঁথি এবং বই বিক্রির এলাকার নাম ছিল কেতাবপট্টি। এখানে সেখানে, বাজারেও চট বিছিয়ে নিশ্চয় বিক্রি হতো বটতলার বই। প্রথমোক্ত তিনটি এলাকার বইয়ের দোকানেও যে বটতলার বই বিক্রি হতো না তা নয়।
ঢাকার অধিকাংশ প্রেস ছিল বাবুবাজার থেকে বেগমবাজারের মধ্যে। পরবর্তীকালে বাংলাবাজারেও স্থাপিত হয়েছিল কিছু মুদ্রণযন্ত্র। বই বিক্রির এলাকাটি এভাবে কল্পনা করে নিতে পারি-পাটুয়াটুলি থেকে সোজা বাবুবাজার। বাবুবাজার খাল ছিল এক সময় পেরিয়ে মিটফোর্ডের সামনে দিয়ে, বেগমবাজারের রাস্তা ধরে চকবাজার। চকের মসজিদ, তাকে ঘিরে গলি, সেখানেই কেতাবপট্টি।
চক মসজিদের নিচের অংশ, ফুটপাত ছিল ঢাকার বিখ্যাত কেতাবপট্টি। এর ভগ্নাবশেষ এখন দেখা যাবে চক মসজিদ কমপ্লেক্সের পিছে। মোগলটুলিতে গড়ে উঠেছিল স্বতন্ত্র আরেকটি বই বিক্রির এলাকা।
এইসব বইয়ের দোকানের মালিক ছিলেন কারা? মালিকদের সম্পর্কে খুব বেশি একটা তথ্য পাওয়া যায়নি। যে সামান্য তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে বলতে পারি মালিকদের মধ্যে ছিলেন মুদ্রণালয় সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ, কেরানি, পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা, ব্রাহ্মকর্মী প্রমুখ।
এখন যেসব বইয়ের দোকানের খোঁজ পাওয়া গেছে সেগুলির নাম উল্লেখ করছি। বন্ধনীতে উল্লিখিত সনটি বইয়ের প্রকাশকাল অর্থাৎ বইয়ের শেষ গ্রাহদে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে। এ থেকে বইয়ের দোকান স্থাপনের সময় অনুমান করা যেতে পারে। ইসলামপুরে যেসব দোকান ছিল সেগুলি হলো- কে, সি. ঘোষ এন্ড রাালাম (১৮৬৭), নন্দকুমার গুহের বইয়ের দোকান (১৮৬৮), পূর্ববাঙ্গালা পুস্তকালয় (১৮৬৮) ৩৩ নবকুমার বিশ্বাস-এর পুস্তকালয় (১৮৭১)।
(চলবে)
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৬২)
মুনতাসীর মামুন 



















