১০:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১৩২) জনমত জরিপ: আমেরিকানরা শুধু জেরিম্যান্ডারিং সহ্যই করছে না — তারা এটিকে সমর্থনও করছে টম হ্যাংকসের নস্টালজিয়া ভ্রমণ: দিস ওয়ার্ল্ড অফ টুমরো মিলিয়ন মানুষের প্রিয় স্বাদ: কস্টকোর ১.৫০ ডলারের হট ডগ কম্বো আগের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৬২) দ্য ইকোনমিস্ট -এ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সাক্ষাৎকার কাবুলের ইন্টারকনটিনেন্টাল হোটেল এবং আফগানিস্তানের ইতিহাস জার্মান খামারের সমকামী ভেড়ার উল দিয়ে অভিনব ফ্যাশন শো ১৭০ বছরের পুরনো টেলিগ্রাফ মিডিয়া গ্রুপ কিনতে আলোচনায় ডেইলি মেইল প্রকাশক টাকার বিনিময়ে ইউজারনেম বিক্রি শুরু করল এক্স, বাড়ল ডিজিটাল পরিচয়ের দাম

জন্মহার কমে যাচ্ছে আমেরিকায় উদ্বিগ্ন হোয়াইট হাউস

জন্মহারের দীর্ঘমেয়াদি পতনের নতুন ধাপ

আমেরিকার জনসংখ্যাগত চিত্রে বড় পরিবর্তন এসেছে। ১৯৬০ সালে দেশটির মোট প্রজনন হার— অর্থাৎ একজন নারীর গড়ে যত সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা— ছিল ৩.৬। ২০২২ সালে তা নেমে আসে ১.৭-এ। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই হার আরও কমে এখন মাত্র ১.৬-এর নিচে— যা দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই নারীরা আগের তুলনায় কম সন্তান নিচ্ছেন। জন্মহারের বণ্টন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কিছু রাজ্যে যেখানে বহুদিন ধরে জন্মহার কম, সেখানে পতন তুলনামূলক ধীর। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালের পাঁচটি সর্বনিম্ন প্রজনন হারবিশিষ্ট রাজ্যের মধ্যে কানেকটিকাট ও ম্যাসাচুসেটসে পতন জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। কিন্তু যেসব রাজ্যে ঐতিহাসিকভাবে জন্মহার বেশি ছিল— যেমন আলাস্কা, নর্থ ডাকোটা ও উটাহ— সেখানেই পতন সবচেয়ে তীব্র। ২০১৪ সালে গড়ের চেয়ে বেশি জন্মহার ছিল এমন রাজ্যগুলো গত এক দশকের মোট জন্মহারের পতনের ৮০ শতাংশের বেশি জন্য দায়ী।

Pronatalism in the US: The Trump administration's push for more births - Population Connection

নীতিনির্ধারকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ

এই পতন প্রো-ন্যাটালিস্ট (জন্মহার বৃদ্ধিমুখী) নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য বড় ধাক্কা। এতদিন তারা মনোযোগ দিচ্ছিলেন শহুরে ও শিক্ষিত রাজ্যগুলোর দিকে, যেখানে জন্মহার ঐতিহাসিকভাবে কম। উদাহরণস্বরূপ, অর্থনীতিবিদ লাইম্যান স্টোন ট্রাম্প প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘দ্য উটাহ ওয়ে’ অনুসরণ করতে। তার মতে, উটাহ-তে নারীরা পেশাগত বা ব্যক্তিগত কারণে সন্তানধারণ বিলম্বিত করতে চান না, আর উচ্চ ধর্মীয় অনুশীলন পারিবারিক স্থিতিশীলতা বাড়ায়।

হোয়াইট হাউস এমনকি চিন্তা করছে, যারা সন্তান জন্মের জন্য পড়াশোনায় বিরতি নেবেন, তাদের জন্য কলেজে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হতে পারে।

গ্রামীণ ও কমশিক্ষিত জনগোষ্ঠীতে পতন

তবে সাম্প্রতিক পতন ঘটছে মূলত গ্রামীণ এলাকা ও কমশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে। উটাহ-তে এখনও প্রচুর ধর্মপ্রাণ মানুষ থাকলেও তারা এখন কম সন্তান নিচ্ছেন। বড় পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থানের সুযোগ থাকলেও জন্মহার কমছে।

What's Behind the US Birth Rate Decline?

এর পেছনে বড় কারণ তরুণ নারীদের আচরণগত পরিবর্তন— অনিয়োজিত জন্ম কমে গেছে। ২০০৫ সালে উটাহ-র অধিকাংশ নারী প্রথম সন্তান নিতেন ২৫ বছরের আগে, কিন্তু এখন চার জনের মধ্যে একজনেরও কম তা করেন।

সমাধানের উপায় সীমিত

আমেরিকার জন্মহার প্রায় দুই দশক আগে ২.১-এর নিচে নেমেছে— যা অভিবাসন ছাড়া জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার ন্যূনতম হার। এর পর থেকে এই প্রবণতার জন্য কার্যকর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

সিডিসির সাম্প্রতিক তথ্য গবেষক ও হোয়াইট হাউস— উভয়কেই উদ্বিগ্ন করেছে। তাদের আশঙ্কা, জন্মহার যত কমবে, তা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হবে। তাই জন্মহার বাড়ানোর সমাধান খুঁজতে হলে এখন তাদের নতুন দিক থেকে ভাবতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১৩২)

জন্মহার কমে যাচ্ছে আমেরিকায় উদ্বিগ্ন হোয়াইট হাউস

০৫:৩০:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

জন্মহারের দীর্ঘমেয়াদি পতনের নতুন ধাপ

আমেরিকার জনসংখ্যাগত চিত্রে বড় পরিবর্তন এসেছে। ১৯৬০ সালে দেশটির মোট প্রজনন হার— অর্থাৎ একজন নারীর গড়ে যত সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা— ছিল ৩.৬। ২০২২ সালে তা নেমে আসে ১.৭-এ। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই হার আরও কমে এখন মাত্র ১.৬-এর নিচে— যা দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই নারীরা আগের তুলনায় কম সন্তান নিচ্ছেন। জন্মহারের বণ্টন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কিছু রাজ্যে যেখানে বহুদিন ধরে জন্মহার কম, সেখানে পতন তুলনামূলক ধীর। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৪ সালের পাঁচটি সর্বনিম্ন প্রজনন হারবিশিষ্ট রাজ্যের মধ্যে কানেকটিকাট ও ম্যাসাচুসেটসে পতন জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। কিন্তু যেসব রাজ্যে ঐতিহাসিকভাবে জন্মহার বেশি ছিল— যেমন আলাস্কা, নর্থ ডাকোটা ও উটাহ— সেখানেই পতন সবচেয়ে তীব্র। ২০১৪ সালে গড়ের চেয়ে বেশি জন্মহার ছিল এমন রাজ্যগুলো গত এক দশকের মোট জন্মহারের পতনের ৮০ শতাংশের বেশি জন্য দায়ী।

Pronatalism in the US: The Trump administration's push for more births - Population Connection

নীতিনির্ধারকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ

এই পতন প্রো-ন্যাটালিস্ট (জন্মহার বৃদ্ধিমুখী) নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য বড় ধাক্কা। এতদিন তারা মনোযোগ দিচ্ছিলেন শহুরে ও শিক্ষিত রাজ্যগুলোর দিকে, যেখানে জন্মহার ঐতিহাসিকভাবে কম। উদাহরণস্বরূপ, অর্থনীতিবিদ লাইম্যান স্টোন ট্রাম্প প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘দ্য উটাহ ওয়ে’ অনুসরণ করতে। তার মতে, উটাহ-তে নারীরা পেশাগত বা ব্যক্তিগত কারণে সন্তানধারণ বিলম্বিত করতে চান না, আর উচ্চ ধর্মীয় অনুশীলন পারিবারিক স্থিতিশীলতা বাড়ায়।

হোয়াইট হাউস এমনকি চিন্তা করছে, যারা সন্তান জন্মের জন্য পড়াশোনায় বিরতি নেবেন, তাদের জন্য কলেজে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হতে পারে।

গ্রামীণ ও কমশিক্ষিত জনগোষ্ঠীতে পতন

তবে সাম্প্রতিক পতন ঘটছে মূলত গ্রামীণ এলাকা ও কমশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে। উটাহ-তে এখনও প্রচুর ধর্মপ্রাণ মানুষ থাকলেও তারা এখন কম সন্তান নিচ্ছেন। বড় পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থানের সুযোগ থাকলেও জন্মহার কমছে।

What's Behind the US Birth Rate Decline?

এর পেছনে বড় কারণ তরুণ নারীদের আচরণগত পরিবর্তন— অনিয়োজিত জন্ম কমে গেছে। ২০০৫ সালে উটাহ-র অধিকাংশ নারী প্রথম সন্তান নিতেন ২৫ বছরের আগে, কিন্তু এখন চার জনের মধ্যে একজনেরও কম তা করেন।

সমাধানের উপায় সীমিত

আমেরিকার জন্মহার প্রায় দুই দশক আগে ২.১-এর নিচে নেমেছে— যা অভিবাসন ছাড়া জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার ন্যূনতম হার। এর পর থেকে এই প্রবণতার জন্য কার্যকর ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

সিডিসির সাম্প্রতিক তথ্য গবেষক ও হোয়াইট হাউস— উভয়কেই উদ্বিগ্ন করেছে। তাদের আশঙ্কা, জন্মহার যত কমবে, তা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ততই ক্ষীণ হবে। তাই জন্মহার বাড়ানোর সমাধান খুঁজতে হলে এখন তাদের নতুন দিক থেকে ভাবতে হবে।