১০:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

ভোলাগঞ্জের পথে পথে লুটের পাথর

সমকালের একটি শিরোনাম “ভোলাগঞ্জের পথে পথে লুটের পাথর”

ধলাই নদী থেকে লুট হওয়া সাদা পাথর মজুত করা হয়েছে সিলেটের ভোলাগঞ্জের পথে পথে। বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা হলেও অধিকাংশ পাথর এরই মধ্যে কেনাবেচা হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী কিংবা শ্রমিকের কাছ থেকে সাদা পাথর কিনে নিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা। যারা বিক্রি করতে পারেননি তাদের পাথর এখনও রয়ে গেছে ধলাই নদীর চরে। কেউ কেউ পাথর মজুত করেছেন ক্রাশার কারখানার আঙিনায়।

গতকাল বুধবার ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদীর আশপাশ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে পাথর লুটের ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্তি জেলা প্রশাসককে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাথর লুটের নেপথ্যে কারা রয়েছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গতকাল ভোলাগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেছে দুদক সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের একটি দল।

দুদকের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাত জানান, তারা মূলত পাথর লুটের নেপথ্যে থাকা লোকদের বিষয়ে অনুসন্ধান করবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সমকালকে বলেন, সাদা পাথর ইস্যুতে বৈঠক হচ্ছে। তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “ক্ষমতার বাইরে গিয়ে ডিসি লিজ দিলেন জায়গা”

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের বিরুদ্ধে নিজ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে এবং সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সরকারি খাস জায়গা পাঁচ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দিয়েছেন। ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অস্থায়ী ভাড়ানামা চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে সরকারি এই জায়গা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ডিসি নিজেই ক্ষমতাবলে প্রথম পক্ষ হিসেবে ওই চুক্তিপত্র সম্পাদন ও স্বাক্ষর করেছেন। এভাবে নগরের পরীর পাহাড়ে গত বছর জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদকৃত ২৩ শতকের বেশি জায়গা গোপনে দুটি পক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, খাসজমি বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী, একজন জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জন্য সরকারি খাস জায়গা অস্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি (৫ বছর বা তার বেশি) ভাড়া বা ইজারা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়া দেওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন ডিসি সরকারি খাস জায়গা এভাবে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি দেওয়ার নজির নেই। এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’

এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে সড়কের ধারে ২৩ শতক জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ডিসি রদবদল হলে সেই উদ্ধার করা জায়গা বর্তমানে আরেক দখলদারের হাতে চলে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলা প্রশাসনের যোগসাজশে বিএনপিপন্থী এক শীর্ষ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ওই জায়গা নিজেদের দখলে রাখেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে দোকানপাট ও মার্কেট নির্মাণের পর ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ দাবি করেছেন, জায়গাটি একসনা বন্দোবস্তি বা এক বছরের জন্য ভাড়ায় দেওয়া হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “মেট্রোর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে জাইকার সঙ্গে দর কষাকষিতে সরকার”

ঢাকায় বর্তমানে আরো দুটি মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প চলমান। এগুলোর জন্য সরকার ব্যয় প্রাক্কলন করেছে ৯৩ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা। এখন চলছে দরপত্র যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়নের কাজ। তবে ঋণদাতা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) বেঁধে দেয়া শর্তের কারণে কেবল জাপানি প্রতিষ্ঠান কিংবা জয়েন্ট ভেঞ্চারই দরপত্রে অংশ নিতে পেরেছে। শুধু তাই নয়, দর প্রস্তাব বেশি হলে তা কমানোর জন্য দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বানেরও সুযোগ রাখা হয়নি। এ সুযোগে জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো যে দর প্রস্তাব করেছে, তা বিশ্লেষণ করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তারা বলছেন, মেট্রোরেল দুটি নির্মাণে ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা, যা সরকারের প্রাক্কলনের প্রায় দ্বিগুণ।

এদিকে ব্যয় কমিয়ে আনতে এবং দরপত্র প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক করতে জাইকার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। প্রয়োজনে তাদের বিকল্প হিসেবে মেট্রো প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংক কিংবা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ঋণ নেয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

ঢাকার নতুন দুই মেট্রোরেল লাইনের একটি এমআরটি লাইন-১। বিমানবন্দর-কমলাপুর ও নতুন বাজার-পূর্বাচলের মধ্যে চলমান এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। আরেকটি মেট্রোরেল লাইন হচ্ছে হেমায়েতপুর-ভাটারার (এমআরটি লাইন-৫, নর্দান রুট) মধ্যে, যার নির্মাণ ব্যয় ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। দুটি প্রকল্পেই শুরু হয়েছে ডিপো তৈরির কাজ। মাঠপর্যায়ে কাজ শুরুর জন্য চলছে দরপত্র প্রক্রিয়া।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঠিকাদারদের প্রস্তাব অনুযায়ী এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণ ব্যয় ৯৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আর লাইন-৫, নর্দান রুটের ব্যয়ও চলে যাবে ৯০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। সে হিসাবে কিলোমিটারপ্রতি খরচ ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। অথচ ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬) উত্তরা-মতিঝিলের প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

 

মানবজমিনের একটি শিরোন “নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা দেখছে বিএনপি”

জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবসে ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন, তা নিয়ে মনঃক্ষুণ্ণ হলেও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে তারা দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পদ্ধতির ব্যাপারে এনসিপি ছাড় দিতে রাজি নয়।

এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ পাঁচজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাবের কথা জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, জুলাই সনদের বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পর তাঁরা নির্বাচনমুখী কার্যক্রমে মনোযোগ দেবেন।

এনসিপি মনে করে, জুলাই ঘোষণাপত্র, নির্বাচনের সময় নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির চাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছে সরকার। এখন জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিএনপি যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে জন্য দলটির ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চায় এনসিপি।

এরই অংশ হিসেবে এনসিপির কোনো কোনো নেতা জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত সময়সীমা নিয়ে ভিন্ন সুরে বক্তব্য দিচ্ছেন। দলটি চাইছে বিএনপি জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সম্মত হোক। এনসিপির একটি সূত্র জানায়, তারা জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে বিশেষ শোরগোল করেনি, সেটা তাদের দিক থেকে একধরনের ‘ছাড়’। এর মধ্য দিয়ে বিএনপিকে একটা বার্তা দিয়েছে তারা, যাতে বিএনপি জুলাই সনদ প্রশ্নে অন্য দলগুলোর চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়।

এনসিপির নেতাদের ভাষ্য, অতীতে দেখা গেছে, একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণে সরকারি দল বিরোধ দলগুলোকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে ফেলে। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ধারায় পরিবর্তন আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পাশাপাশি অন্তত সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতি চালু হলে দেশে একটা ন্যূনতম রাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরি হতে পারে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনবিশিষ্ট। এই সদস্যরা মনোনীত হবেন পিআর পদ্ধতিতে। যদিও এ বিষয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভিন্নমত আছে।

যদিও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দলটির নেতারা বলে আসছেন। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ভিন্নমতের কারণে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি শেষ পর্যন্ত সম্মত হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় আছে এনসিপির। এ জন্য তারা বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। এই ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের অবস্থানও প্রায় একই রকম।

এ বিষয়ে রাজনীতিবিষয়ক লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, এগুলো একেক দলের রাজনৈতিক অবস্থান। প্রতিটি দলই নির্বাচনী দৌড়ে আছে। এ জন্য তারা পরস্পরকে চাপে রাখবে, এমনকি সরকারকেও চাপে রাখবে, এটা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আজকে এনসিপি যদি মনে করত তারা নির্বাচন করে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬০ আসন পাবে, তারা পিআরের পক্ষে বলত না। আবার বিএনপি যদি মনে করত তারা ৭০ আসন পাবে, তারা পিআরের পক্ষে বলত।

‘তবে ভোটারের মতামতের প্রতিফলনটা আমরা গতানুগতিকভাবে যেভাবে দেখে আসছি, সেটার একটু পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়’ বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলাগঞ্জের পথে পথে লুটের পাথর

০৯:০০:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

সমকালের একটি শিরোনাম “ভোলাগঞ্জের পথে পথে লুটের পাথর”

ধলাই নদী থেকে লুট হওয়া সাদা পাথর মজুত করা হয়েছে সিলেটের ভোলাগঞ্জের পথে পথে। বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা হলেও অধিকাংশ পাথর এরই মধ্যে কেনাবেচা হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী কিংবা শ্রমিকের কাছ থেকে সাদা পাথর কিনে নিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা। যারা বিক্রি করতে পারেননি তাদের পাথর এখনও রয়ে গেছে ধলাই নদীর চরে। কেউ কেউ পাথর মজুত করেছেন ক্রাশার কারখানার আঙিনায়।

গতকাল বুধবার ভোলাগঞ্জ ও ধলাই নদীর আশপাশ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে পাথর লুটের ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্তি জেলা প্রশাসককে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। আগামী রোববারের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি পাথর লুটের নেপথ্যে কারা রয়েছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গতকাল ভোলাগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেছে দুদক সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের একটি দল।

দুদকের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাত জানান, তারা মূলত পাথর লুটের নেপথ্যে থাকা লোকদের বিষয়ে অনুসন্ধান করবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সমকালকে বলেন, সাদা পাথর ইস্যুতে বৈঠক হচ্ছে। তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “ক্ষমতার বাইরে গিয়ে ডিসি লিজ দিলেন জায়গা”

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের বিরুদ্ধে নিজ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে এবং সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সরকারি খাস জায়গা পাঁচ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দিয়েছেন। ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অস্থায়ী ভাড়ানামা চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে সরকারি এই জায়গা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ডিসি নিজেই ক্ষমতাবলে প্রথম পক্ষ হিসেবে ওই চুক্তিপত্র সম্পাদন ও স্বাক্ষর করেছেন। এভাবে নগরের পরীর পাহাড়ে গত বছর জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদকৃত ২৩ শতকের বেশি জায়গা গোপনে দুটি পক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, খাসজমি বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী, একজন জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জন্য সরকারি খাস জায়গা অস্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি (৫ বছর বা তার বেশি) ভাড়া বা ইজারা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়া দেওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন ডিসি সরকারি খাস জায়গা এভাবে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি দেওয়ার নজির নেই। এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’

এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে সড়কের ধারে ২৩ শতক জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ডিসি রদবদল হলে সেই উদ্ধার করা জায়গা বর্তমানে আরেক দখলদারের হাতে চলে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলা প্রশাসনের যোগসাজশে বিএনপিপন্থী এক শীর্ষ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ওই জায়গা নিজেদের দখলে রাখেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে দোকানপাট ও মার্কেট নির্মাণের পর ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ দাবি করেছেন, জায়গাটি একসনা বন্দোবস্তি বা এক বছরের জন্য ভাড়ায় দেওয়া হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “মেট্রোর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে জাইকার সঙ্গে দর কষাকষিতে সরকার”

ঢাকায় বর্তমানে আরো দুটি মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প চলমান। এগুলোর জন্য সরকার ব্যয় প্রাক্কলন করেছে ৯৩ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা। এখন চলছে দরপত্র যাচাই-বাছাই ও মূল্যায়নের কাজ। তবে ঋণদাতা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) বেঁধে দেয়া শর্তের কারণে কেবল জাপানি প্রতিষ্ঠান কিংবা জয়েন্ট ভেঞ্চারই দরপত্রে অংশ নিতে পেরেছে। শুধু তাই নয়, দর প্রস্তাব বেশি হলে তা কমানোর জন্য দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বানেরও সুযোগ রাখা হয়নি। এ সুযোগে জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো যে দর প্রস্তাব করেছে, তা বিশ্লেষণ করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তারা বলছেন, মেট্রোরেল দুটি নির্মাণে ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা, যা সরকারের প্রাক্কলনের প্রায় দ্বিগুণ।

এদিকে ব্যয় কমিয়ে আনতে এবং দরপত্র প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক করতে জাইকার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে সরকার। প্রয়োজনে তাদের বিকল্প হিসেবে মেট্রো প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংক কিংবা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ঋণ নেয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

ঢাকার নতুন দুই মেট্রোরেল লাইনের একটি এমআরটি লাইন-১। বিমানবন্দর-কমলাপুর ও নতুন বাজার-পূর্বাচলের মধ্যে চলমান এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। আরেকটি মেট্রোরেল লাইন হচ্ছে হেমায়েতপুর-ভাটারার (এমআরটি লাইন-৫, নর্দান রুট) মধ্যে, যার নির্মাণ ব্যয় ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। দুটি প্রকল্পেই শুরু হয়েছে ডিপো তৈরির কাজ। মাঠপর্যায়ে কাজ শুরুর জন্য চলছে দরপত্র প্রক্রিয়া।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঠিকাদারদের প্রস্তাব অনুযায়ী এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণ ব্যয় ৯৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আর লাইন-৫, নর্দান রুটের ব্যয়ও চলে যাবে ৯০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। সে হিসাবে কিলোমিটারপ্রতি খরচ ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। অথচ ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬) উত্তরা-মতিঝিলের প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

 

মানবজমিনের একটি শিরোন “নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা দেখছে বিএনপি”

জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবসে ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন, তা নিয়ে মনঃক্ষুণ্ণ হলেও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে তারা দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। এই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের পদ্ধতির ব্যাপারে এনসিপি ছাড় দিতে রাজি নয়।

এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ পাঁচজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এই মনোভাবের কথা জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, জুলাই সনদের বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পর তাঁরা নির্বাচনমুখী কার্যক্রমে মনোযোগ দেবেন।

এনসিপি মনে করে, জুলাই ঘোষণাপত্র, নির্বাচনের সময় নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির চাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছে সরকার। এখন জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিএনপি যাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে জন্য দলটির ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করতে চায় এনসিপি।

এরই অংশ হিসেবে এনসিপির কোনো কোনো নেতা জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত সময়সীমা নিয়ে ভিন্ন সুরে বক্তব্য দিচ্ছেন। দলটি চাইছে বিএনপি জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত সম্মত হোক। এনসিপির একটি সূত্র জানায়, তারা জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে বিশেষ শোরগোল করেনি, সেটা তাদের দিক থেকে একধরনের ‘ছাড়’। এর মধ্য দিয়ে বিএনপিকে একটা বার্তা দিয়েছে তারা, যাতে বিএনপি জুলাই সনদ প্রশ্নে অন্য দলগুলোর চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়।

এনসিপির নেতাদের ভাষ্য, অতীতে দেখা গেছে, একচ্ছত্র ক্ষমতার কারণে সরকারি দল বিরোধ দলগুলোকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে ফেলে। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ধারায় পরিবর্তন আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পাশাপাশি অন্তত সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতি চালু হলে দেশে একটা ন্যূনতম রাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরি হতে পারে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত হলো সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনবিশিষ্ট। এই সদস্যরা মনোনীত হবেন পিআর পদ্ধতিতে। যদিও এ বিষয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভিন্নমত আছে।

যদিও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিষয়ে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দলটির নেতারা বলে আসছেন। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় ভিন্নমতের কারণে উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি শেষ পর্যন্ত সম্মত হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় আছে এনসিপির। এ জন্য তারা বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। এই ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের অবস্থানও প্রায় একই রকম।

এ বিষয়ে রাজনীতিবিষয়ক লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, এগুলো একেক দলের রাজনৈতিক অবস্থান। প্রতিটি দলই নির্বাচনী দৌড়ে আছে। এ জন্য তারা পরস্পরকে চাপে রাখবে, এমনকি সরকারকেও চাপে রাখবে, এটা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আজকে এনসিপি যদি মনে করত তারা নির্বাচন করে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬০ আসন পাবে, তারা পিআরের পক্ষে বলত না। আবার বিএনপি যদি মনে করত তারা ৭০ আসন পাবে, তারা পিআরের পক্ষে বলত।

‘তবে ভোটারের মতামতের প্রতিফলনটা আমরা গতানুগতিকভাবে যেভাবে দেখে আসছি, সেটার একটু পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়’ বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক।