১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
মোদি সরকারের সংস্কার গতি আরও জোরদার, স্বস্তির পথে নাগরিক জীবন শাসনের নতুন অধ্যায়ে ‘সহজ জীবন’ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার বছরের শেষ প্রান্তে মার্কিন শেয়ারবাজারে উচ্ছ্বাস, সাত হাজার ছোঁয়ার পথে এস অ্যান্ড পি সূচক জাপানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট প্রস্তাব, ঋণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কৌশল অবকাঠামোতে মেগা বিনিয়োগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অর্থনীতিতে নতুন গতি, বদলাচ্ছে নাগরিক জীবনের মান ভালোবাসায় মোড়া পারিবারিক মুহূর্তে আলিয়ার বড়দিন নতুন বছরে গতি আর প্রযুক্তির মেলবন্ধন, দুই হাজার ছাব্বিশে নজর কাড়বে পাঁচ নতুন গাড়ি ক্রোয়েশিয়ার প্রেমে পড়ল পর্দা, কার্তিক-অনন্যার গল্পে রইল শূন্যতা ভাইকিংদের সবচেয়ে দুঃসাহসিক অভিযান ইতিহাসে কিভাবে কাঁপন তুলেছিল ওয়েস্টমিনস্টারে ইতিহাসের মোড় ঘোরানো সংসদ, সাইমন দে মন্টফোর্টের ডাকে নতুন শাসনচিন্তার সূচনা লন্ডনের ইস্ট এন্ডে আতঙ্কের অবরোধ, সিডনি স্ট্রিট কাঁপিয়েছিল লাটভিয়ান নৈরাজ্যবাদীরা

মৌলভীবাজারে ভাঙা সড়কের দুঃখ: স্থানীয়দের মেরামতের আকুতি

অবকাঠামোর করুণ অবস্থা

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ এখন ভারী যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ নষ্ট হয়ে যাওয়া সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। একসময় যেসব সড়ক ছিল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধমনী, এখন সেগুলো ভেঙে গর্তে ভরা অচল পথে পরিণত হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক হলো মৌলভীবাজার–কাগাবালা এবং মৌলভীবাজার–শমশেরগঞ্জ–শ্রীমঙ্গল সড়ক। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কগুলো বাজার, স্কুল, শিল্পকারখানা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে। কিন্তু এখন এসব সড়ক দিয়ে চলাচল যাত্রার চেয়ে কষ্টকর দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে।

ভাঙা সড়কের ভয়াবহ চিত্র

দিঘিরপার, আলোহা, সূর্যপাশা, আটাঙ্গিরি ও ধান্দাশ এলাকায় সড়কের অবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। গভীর গর্ত আর ভাঙা জায়গায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থী, শ্রমিক কিংবা রোগী বহনকারী পরিবারের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

প্রাণ ফুডসের চালক মিলন মিয়া জানান, “আগে যেখানে আধা ঘণ্টায় পৌঁছানো যেত, এখন লাগে এক ঘণ্টার বেশি। গাড়ি নষ্ট হচ্ছে, যাত্রীরাও বিরক্ত হচ্ছেন।”

বাণিজ্য ও চিকিৎসা সেবায় প্রতিবন্ধকতা

এই দুরবস্থার প্রভাব শুধু সময় নষ্টেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি করছে। দিঘিরপার বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক জগদীশ চন্দ্র দে বলেন, “বছরের পর বছর রাস্তার এই অবস্থা। গুরুতর রোগী, বিশেষ করে প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে অবর্ণনীয় কষ্টের সৃষ্টি হয়।”

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

শিক্ষার্থীরাও এ দুরাবস্থার বড় ভুক্তভোগী। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জীবন দে পালাশ অভিযোগ করে বলেন, “কাজী ফার্মসের ডিম ও খাদ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান, ইটবোঝাই ট্রাক—সব মিলিয়ে রাস্তা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।” তিনি দ্রুত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এলজিইডির প্রতিশ্রুতি

এলজিইডিও সমস্যার কথা স্বীকার করেছে। মৌলভীবাজার সদরের এলজিইডি অফিসের প্রকৌশলী শাহেদ হোসেন জানান, “জুলাই মাসে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। রোড মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড রিপেয়ার প্রোগ্রামের আওতায় সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া মাত্র কাজ শুরু হবে।”

অনিশ্চয়তায় সাধারণ মানুষ

অর্থ অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত সদর উপজেলার আমইল, কাগাবালা ও নজিরাবাদ ইউনিয়নের মানুষদের সঙ্গে শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর ও ভুনাবি, আর হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ও পানিউমদার বাসিন্দারা দুর্ভোগে থাকবেন।

তাদের প্রতিটি যাত্রা এখন প্রয়োজন আর সহ্যের মাঝামাঝি এক কঠিন লড়াই। বাজার, স্কুল ও চিকিৎসাকেন্দ্রের কার্যক্রম এই সড়কের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় স্থানীয়দের একমাত্র আশা—কাগজপত্রের চাকা যেন দ্রুত ঘুরে তাদের জীবনের চাকা সচল হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

মোদি সরকারের সংস্কার গতি আরও জোরদার, স্বস্তির পথে নাগরিক জীবন শাসনের নতুন অধ্যায়ে ‘সহজ জীবন’ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

মৌলভীবাজারে ভাঙা সড়কের দুঃখ: স্থানীয়দের মেরামতের আকুতি

০১:১৬:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

অবকাঠামোর করুণ অবস্থা

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ এখন ভারী যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ নষ্ট হয়ে যাওয়া সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন। একসময় যেসব সড়ক ছিল জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধমনী, এখন সেগুলো ভেঙে গর্তে ভরা অচল পথে পরিণত হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক হলো মৌলভীবাজার–কাগাবালা এবং মৌলভীবাজার–শমশেরগঞ্জ–শ্রীমঙ্গল সড়ক। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কগুলো বাজার, স্কুল, শিল্পকারখানা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে। কিন্তু এখন এসব সড়ক দিয়ে চলাচল যাত্রার চেয়ে কষ্টকর দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে।

ভাঙা সড়কের ভয়াবহ চিত্র

দিঘিরপার, আলোহা, সূর্যপাশা, আটাঙ্গিরি ও ধান্দাশ এলাকায় সড়কের অবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। গভীর গর্ত আর ভাঙা জায়গায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থী, শ্রমিক কিংবা রোগী বহনকারী পরিবারের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

প্রাণ ফুডসের চালক মিলন মিয়া জানান, “আগে যেখানে আধা ঘণ্টায় পৌঁছানো যেত, এখন লাগে এক ঘণ্টার বেশি। গাড়ি নষ্ট হচ্ছে, যাত্রীরাও বিরক্ত হচ্ছেন।”

বাণিজ্য ও চিকিৎসা সেবায় প্রতিবন্ধকতা

এই দুরবস্থার প্রভাব শুধু সময় নষ্টেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি করছে। দিঘিরপার বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক জগদীশ চন্দ্র দে বলেন, “বছরের পর বছর রাস্তার এই অবস্থা। গুরুতর রোগী, বিশেষ করে প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে অবর্ণনীয় কষ্টের সৃষ্টি হয়।”

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

শিক্ষার্থীরাও এ দুরাবস্থার বড় ভুক্তভোগী। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জীবন দে পালাশ অভিযোগ করে বলেন, “কাজী ফার্মসের ডিম ও খাদ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান, ইটবোঝাই ট্রাক—সব মিলিয়ে রাস্তা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।” তিনি দ্রুত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এলজিইডির প্রতিশ্রুতি

এলজিইডিও সমস্যার কথা স্বীকার করেছে। মৌলভীবাজার সদরের এলজিইডি অফিসের প্রকৌশলী শাহেদ হোসেন জানান, “জুলাই মাসে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। রোড মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড রিপেয়ার প্রোগ্রামের আওতায় সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া মাত্র কাজ শুরু হবে।”

অনিশ্চয়তায় সাধারণ মানুষ

অর্থ অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত সদর উপজেলার আমইল, কাগাবালা ও নজিরাবাদ ইউনিয়নের মানুষদের সঙ্গে শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর ও ভুনাবি, আর হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ও পানিউমদার বাসিন্দারা দুর্ভোগে থাকবেন।

তাদের প্রতিটি যাত্রা এখন প্রয়োজন আর সহ্যের মাঝামাঝি এক কঠিন লড়াই। বাজার, স্কুল ও চিকিৎসাকেন্দ্রের কার্যক্রম এই সড়কের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় স্থানীয়দের একমাত্র আশা—কাগজপত্রের চাকা যেন দ্রুত ঘুরে তাদের জীবনের চাকা সচল হয়।