তিন পারস্পরিক নীতির ওপর জোর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ভারত-চীন সম্পর্ক পুনর্গঠনের ভিত্তি হিসেবে ‘তিন পারস্পরিক’ নীতি—পারস্পরিক সম্মান, পারস্পরিক সংবেদনশীলতা এবং পারস্পরিক স্বার্থ—উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ অস্থিরতার পর দুই দেশ এখন এগিয়ে যেতে চায়, আর এজন্য উভয়পক্ষের খোলামেলা ও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি জরুরি।
জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে দেন, পার্থক্যকে যেন দ্বন্দ্ব বা সংঘাতে রূপান্তরিত করা না হয়, প্রতিযোগিতা যেন সংঘর্ষের কারণ না হয়।
ওয়াং ই’র সফর ও বৈঠকের তাৎপর্য
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল দিল্লিতে ২৪তম দফা বৈঠকে অংশ নেয়। এটি গত বছরের অক্টোবর মাসে কাজানে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাতের পর ভারতের মাটিতে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর। জয়শঙ্কর বলেন, এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়ের সুযোগ এনে দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ছাড়া সম্পর্ক এগোনো সম্ভব নয়। ওয়াং ই আগামী দিনে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যুতে বৈঠক করবেন। জয়শঙ্করের মতে, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার সক্ষমতাই দুই দেশের সম্পর্ককে ইতিবাচক পথে নিতে প্রধান শর্ত।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারত-চীন আলোচনা
জয়শঙ্কর বলেন, বিশ্বের দুই জনবহুল দেশ আলোচনায় বসলে বৈশ্বিক ইস্যু অবশ্যম্ভাবীভাবে উঠে আসে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও বহুমেরু বৈশ্বিক শৃঙ্খলা চায়, যেখানে বহুমেরু এশিয়াও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তার মতে, বর্তমান অস্থির সময়ে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ধরে রাখা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, “সন্ত্রাসবিরোধী সংগ্রাম আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে একটি। পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনাও জরুরি।”
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
ওয়াং ই’র এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে যাচ্ছেন। ফলে এই বৈঠককে উভয় দেশের কূটনৈতিক যোগাযোগের ধারাবাহিকতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দিল্লি বিমানবন্দরে ওয়াং ই’কে অভ্যর্থনা জানান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া বিভাগের যুগ্ম সচিব গৌরাঙ্গলাল দাস।
ওয়াং ই ও অজিত ডোভাল উভয়েই সীমান্ত সংলাপের জন্য মনোনীত বিশেষ প্রতিনিধি। তাদের আলোচনার লক্ষ্য দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা নিরসন এবং নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-তে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
ভারত-চীন সম্পর্ক পুনর্গঠনে জয়শঙ্করের ‘তিন পারস্পরিক’ নীতি: সম্মান, সংবেদনশীলতা ও স্বার্থ
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট - ১২:২৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
- 45
জনপ্রিয় সংবাদ
























