১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
নিয়া দা কস্তার ১৯৫০-এর প্রেক্ষাপটে নির্মিত আধুনিক ‘হেডা’—টেসা থম্পসনের অভিনয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে মানুষও এখন এআই ব্যবহার করে রান্না, ভ্রমণ ও স্বাস্থ্যপরামর্শে দক্ষতা অর্জন করছে মার্কিন কংগ্রেসম্যান চার্লস ডিগস—অসাধারণ রাজনৈতিক জীবনের শেষ পরিণতি কেলেঙ্কারিতে নকিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে এনভিডিয়া পরিবর্তনের পথে কেএফসি—হারানো বাজার ফিরে পেতে নতুন রেসিপির সন্ধান যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্কের নতুন অধ্যায়, লি জে মিয়ংয়ের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ—জাপানের তাকাইচির অংশগ্রহণে আঞ্চলিক শক্তির নতুন সমীকরণ নেদারল্যান্ডস–চীন বিরোধের প্রভাব গাড়ি শিল্পে—যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিমুখী কেন্দ্র সেলায়া কারখানায় কার্যক্রম স্থগিত মৃত্যু’ নিয়ে গুজব, শেখ হাসিনা বললেন-‘সুস্থ আছি, আমার তো দেশকে উদ্ধার করতে হবে ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় নামার আগেই পরীক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো উত্তর কোরিয়া হাইতির শেকড় থেকে উঠে আসা শিল্পী—প্যাট্রিক ইউজিনের ক্যানভাসে আত্মপরিচয় ও গর্বের গল্প

ভিয়েতনামের শ্রমবাজারে সংকট ও সম্ভাবনা

প্রবৃদ্ধি থাকলেও শ্রমবাজারে সমস্যা

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনামের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৫২ শতাংশ। কিন্তু এই প্রবৃদ্ধি শ্রমবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে পারেনি। একদিকে ব্যাপক ছাঁটাই চলছে, অন্যদিকে নতুন কর্মী নিয়োগে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে চাকরি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ভয় এবং অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

ছাঁটাইয়ের প্রভাব

জরিপে দেখা গেছে, ছাঁটাই এখন আর শুধু উৎপাদন খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। খুচরা বিক্রি, ব্যাংকিং, আর্থিক খাত এবং প্রযুক্তি খাতেও ছাঁটাই হচ্ছে। শুধু ব্যাংক খাতেই ২,৫০০ জন চাকরি হারিয়েছেন। আন্তর্জাতিকভাবে প্রযুক্তি খাতে ৭২ হাজার এবং খুচরা খাতে ৬৪ হাজার চাকরি কমেছে। যেহেতু ভিয়েতনামের রপ্তানির বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তাই বৈশ্বিক অস্থিরতা সরাসরি শ্রমবাজারে আঘাত করছে।

আস্থার সংকট

যারা এখনও চাকরিতে আছেন, তাদের মধ্যেও অনিরাপত্তা তৈরি হয়েছে। প্রায় অর্ধেক কর্মী মনে করছেন চাকরি যেকোনো সময় চলে যেতে পারে। ৬০ শতাংশ কর্মী প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আবেগিকভাবে যুক্ত নন, আর ৮০ শতাংশ নতুন সুযোগ খুঁজছেন। দক্ষ কর্মীদের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে নীরবে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। জরিপে বলা হয়েছে, মাত্র ২৯ শতাংশ কর্মী এখনো নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখেন।

কোন খাত বেশি ঝুঁকিতে

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তরুণ কর্মী (১৮–২৪ বছর) এবং মধ্যবয়সী (৩৫–৫৪ বছর) কর্মীরা। নতুন গ্র্যাজুয়েট, ইন্টার্ন এবং আর্থিক খাতের কর্মীদের ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে বিক্রয়, মার্কেটিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীরা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ অবস্থানে আছেন।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ এড়াতে যা করবেন

কর্মীদের মানসিক চাপ

অনেক কর্মী প্রতিদিন ভয়ের মধ্যে কাজ করছেন। হো চি মিন সিটির এক কর্মী বলেছেন, “আমি প্রতিদিন কাজ করি, বেতন পাই, কিন্তু মনে হয় আমি পরের ছাঁটাইয়ের তালিকায় আছি।” এই ধরনের ভয় কর্মীদের আত্মবিশ্বাস ও কর্মক্ষমতা নষ্ট করছে।

আশার দিক

তবুও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের প্রায় ৩০ শতাংশ এটি নতুনভাবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ হিসেবে দেখছেন। আন্তর্জাতিক তুলনায় এই হার অনেক বেশি। এতে বোঝা যায় ভিয়েতনামের কর্মীরা পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

এছাড়া এ বছর ভিয়েতনামের অর্থনীতি ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে ৫৬ শতাংশ কোম্পানি নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে বিক্রয়, উৎপাদন ও ব্যবসা উন্নয়ন খাতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

নতুন চ্যালেঞ্জ

Vietnamese Labor Market 2024: Trends and Analysis

যদিও সুযোগ বাড়ছে, নিয়োগ সহজ হচ্ছে না। ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলছে, দক্ষ প্রার্থী পাওয়া এখন আরও কঠিন। একদিকে প্রার্থীরা বেশি বেতন চাইছেন, অন্যদিকে নিয়োগকর্তারা খরচ কমাতে চাইছেন। ফলে বাজারে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য এটি আরও বড় সমস্যা, কারণ মাত্র ২৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়োগে আগ্রহী।

ভবিষ্যতের করণীয়: প্রতিষ্ঠানের জন্য

প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। প্রথমত, ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কর্মীদের সামনে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে হবে। দ্বিতীয়ত, কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে বিনিয়োগ এবং ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। চতুর্থত, বিক্রয়, প্রকৌশল এবং আইটি খাতে স্মার্ট নিয়োগ কৌশল নিতে হবে।

ভবিষ্যতের করণীয়: কর্মীদের জন্য

কর্মীদেরও তিনটি দিক মেনে চলা জরুরি। প্রথমত, নতুন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নমনীয় থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নেটওয়ার্কিং ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থেকে ব্যক্তিগত পরিচিতি গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয়ত, আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে এবং বাজারের প্রবণতা বুঝে এগোতে হবে।

ভিয়েতনামের অর্থনীতি বাড়ছে, কিন্তু শ্রমবাজারে চাপও বাড়ছে। ছাঁটাই, অনিশ্চয়তা ও নিয়োগ সমস্যার কারণে সময়টা কঠিন। তবে সঠিক কৌশল ও সহযোগিতা থাকলে এই সংকটই ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী ও টেকসই শ্রমবাজার গড়ার সুযোগ এনে দিতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নিয়া দা কস্তার ১৯৫০-এর প্রেক্ষাপটে নির্মিত আধুনিক ‘হেডা’—টেসা থম্পসনের অভিনয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি

ভিয়েতনামের শ্রমবাজারে সংকট ও সম্ভাবনা

০১:০০:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

প্রবৃদ্ধি থাকলেও শ্রমবাজারে সমস্যা

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ভিয়েতনামের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৫২ শতাংশ। কিন্তু এই প্রবৃদ্ধি শ্রমবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে পারেনি। একদিকে ব্যাপক ছাঁটাই চলছে, অন্যদিকে নতুন কর্মী নিয়োগে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে চাকরি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ভয় এবং অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

ছাঁটাইয়ের প্রভাব

জরিপে দেখা গেছে, ছাঁটাই এখন আর শুধু উৎপাদন খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। খুচরা বিক্রি, ব্যাংকিং, আর্থিক খাত এবং প্রযুক্তি খাতেও ছাঁটাই হচ্ছে। শুধু ব্যাংক খাতেই ২,৫০০ জন চাকরি হারিয়েছেন। আন্তর্জাতিকভাবে প্রযুক্তি খাতে ৭২ হাজার এবং খুচরা খাতে ৬৪ হাজার চাকরি কমেছে। যেহেতু ভিয়েতনামের রপ্তানির বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে যায়, তাই বৈশ্বিক অস্থিরতা সরাসরি শ্রমবাজারে আঘাত করছে।

আস্থার সংকট

যারা এখনও চাকরিতে আছেন, তাদের মধ্যেও অনিরাপত্তা তৈরি হয়েছে। প্রায় অর্ধেক কর্মী মনে করছেন চাকরি যেকোনো সময় চলে যেতে পারে। ৬০ শতাংশ কর্মী প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আবেগিকভাবে যুক্ত নন, আর ৮০ শতাংশ নতুন সুযোগ খুঁজছেন। দক্ষ কর্মীদের একটি বড় অংশ ইতোমধ্যে নীরবে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। জরিপে বলা হয়েছে, মাত্র ২৯ শতাংশ কর্মী এখনো নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখেন।

কোন খাত বেশি ঝুঁকিতে

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তরুণ কর্মী (১৮–২৪ বছর) এবং মধ্যবয়সী (৩৫–৫৪ বছর) কর্মীরা। নতুন গ্র্যাজুয়েট, ইন্টার্ন এবং আর্থিক খাতের কর্মীদের ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে বিক্রয়, মার্কেটিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীরা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ অবস্থানে আছেন।

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ এড়াতে যা করবেন

কর্মীদের মানসিক চাপ

অনেক কর্মী প্রতিদিন ভয়ের মধ্যে কাজ করছেন। হো চি মিন সিটির এক কর্মী বলেছেন, “আমি প্রতিদিন কাজ করি, বেতন পাই, কিন্তু মনে হয় আমি পরের ছাঁটাইয়ের তালিকায় আছি।” এই ধরনের ভয় কর্মীদের আত্মবিশ্বাস ও কর্মক্ষমতা নষ্ট করছে।

আশার দিক

তবুও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের প্রায় ৩০ শতাংশ এটি নতুনভাবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ হিসেবে দেখছেন। আন্তর্জাতিক তুলনায় এই হার অনেক বেশি। এতে বোঝা যায় ভিয়েতনামের কর্মীরা পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

এছাড়া এ বছর ভিয়েতনামের অর্থনীতি ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে ৫৬ শতাংশ কোম্পানি নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে বিক্রয়, উৎপাদন ও ব্যবসা উন্নয়ন খাতে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

নতুন চ্যালেঞ্জ

Vietnamese Labor Market 2024: Trends and Analysis

যদিও সুযোগ বাড়ছে, নিয়োগ সহজ হচ্ছে না। ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলছে, দক্ষ প্রার্থী পাওয়া এখন আরও কঠিন। একদিকে প্রার্থীরা বেশি বেতন চাইছেন, অন্যদিকে নিয়োগকর্তারা খরচ কমাতে চাইছেন। ফলে বাজারে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য এটি আরও বড় সমস্যা, কারণ মাত্র ২৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়োগে আগ্রহী।

ভবিষ্যতের করণীয়: প্রতিষ্ঠানের জন্য

প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। প্রথমত, ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কর্মীদের সামনে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে হবে। দ্বিতীয়ত, কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে বিনিয়োগ এবং ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। চতুর্থত, বিক্রয়, প্রকৌশল এবং আইটি খাতে স্মার্ট নিয়োগ কৌশল নিতে হবে।

ভবিষ্যতের করণীয়: কর্মীদের জন্য

কর্মীদেরও তিনটি দিক মেনে চলা জরুরি। প্রথমত, নতুন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নমনীয় থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নেটওয়ার্কিং ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থেকে ব্যক্তিগত পরিচিতি গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয়ত, আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে এবং বাজারের প্রবণতা বুঝে এগোতে হবে।

ভিয়েতনামের অর্থনীতি বাড়ছে, কিন্তু শ্রমবাজারে চাপও বাড়ছে। ছাঁটাই, অনিশ্চয়তা ও নিয়োগ সমস্যার কারণে সময়টা কঠিন। তবে সঠিক কৌশল ও সহযোগিতা থাকলে এই সংকটই ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী ও টেকসই শ্রমবাজার গড়ার সুযোগ এনে দিতে পারে।