০৩:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
অর্গান সঙ্গীতে ধ্যানের আমন্ত্রণ এলেন আরকব্রো ম্যানহাটনে ফিরছে বামিয়ান বুদ্ধ, ধ্বংসের স্মৃতি থেকে মানবতার নতুন প্রতীক ক্যামেরায় ধরা পড়ল মেরু ভালুকের বিরল দত্তক গল্প, প্রকৃতিতে নজিরবিহীন ঘটনা আগুনের ঘরে একা কুকুর, ধোঁয়া ভেদ করে মানবতার সাহসী উদ্ধার থাই সীমান্তের দুর্গম খেমার মন্দির ঘিরে সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত থাই সেনা ও গ্রামবাসী ‘সিনিয়র-জুনিয়র’ দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু কিউবার পথে সর্বনাশের ছায়া ভেনিজুয়েলার তেলে মার্কিন অবরোধে দ্বীপ রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৌদি সম্মানে ভূষিত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কে নতুন বার্তা ভ্যান্সকে ঘিরে ডানপন্থীদের নতুন সমীকরণ, ২০২৮ দৌড়ে আগাম প্রস্তুতি শুরু স্বাস্থ্য উপহারই এবার উৎসবের নতুন ট্রেন্ড

রাজসাহীর ইতিহাস (পর্ব -৫)

কৃষিঃ

ধান্যই প্রধান-আউশ ও আমন। ইহারা রোপা ও বুনা। বরেন্দ্র ভূমিতে রোপা ও ভড় অর্থাৎ নিম্নস্থানে বুনা ধান্য হয়। যে স্থানে স্বভাবত পূর্বেই বর্ষা হয়, সেই স্থানেই বোরো ধান্য হয়। নিকটে জল না থাকিলে বোরো ধান হয় না। পাট চাষ ও আজকাল কম নহে। অনেক স্থানে ধান্যের জমিতে পাট চাষ করিতেছে।


১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১৪,৩৩৩ একর জমিতে পাট চাষ হয়। এক্ষণে ধান্য চাষের জমি কম হইয়া পাট চাষের জমি প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি হইয়াছে।

রাজসাহীতে নীল ও রেশম যথেষ্ট জন্মে। ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে নীল ১,০৬২ মন এবং রেশম ১৫৫,৪২২ পাউন্ড উৎপন্ন হয়।

১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ হইতে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত “রেভিনিউ সর্ভে” হয়। জরিপ শেষ হওয়ার সময় জেলার আয়তন প্রায় ৩০০০ বর্গমাইল ছিল, তন্মধ্যে অর্ধেকের বেশি জমিতে চাষ হইত, অবশিষ্ট জমি চাষের অনুপযুক্ত বা পতিত ছিল। কিন্তু এক্ষণে জেলায় আয়তনের এক চতুর্থাংশ জমি পতিত আছে কিনা সন্দেহ।

গাঁজার চাষ:

রাজসাহী জেলার কেবল নওগাঁও মহকুমায় গাঁজা জন্মে। এই চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম বেশি। গাঁজার জমির প্রধান সার খোল। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১২০০ বিঘা বা ৪০০ একর জমিতে গাঁজার চাষ হয়। কিন্তু ১৮৯৭-৯৮ খ্রিস্টাব্দে ২১০৮ বিঘা জমিতে গাঁজার চাষ হয় এবং ৫৭৯৩ মন গাঁজা উৎপন্ন হইয়াছে। কিন্তু ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে ১৫৩১ বিঘা জমিতে গাঁজার চাষ হয় এবং ৫,৪১৭ মন গাঁজা উৎপন্ন হইয়াছে। এই ২৫/২৬ বৎসরে গাঁজার জমির চাব প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি হইয়াছে। দুবলহাটি রাজ্যেই গাঁজার চাষ বেশি। এই ২১০৮ বিঘা জমির মধ্যে প্রায় ১৮০০ বিঘা জমি দুবলহাটি রাজ্যের অন্তর্গত। ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে ৫৮৬৭ মন গাঁজা নওগাঁ হইতে ভারতবর্ষের নানাস্থানে প্রেরিত হয়।


উপরের তালিকায় ইহা প্রতিপন্ন হইতেছে যে বঙ্গদেশে গাঁজা বেশি পরিমাণে প্রচলিত।

পান:

পরগণে তাহিরপুর ও তল্পে চাপলায় পান জন্মে। সাঁচি পানই সুখাদ্য। মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন হইতে উত্তর প্রদেশে প্রতিদিবস বিস্তর পান বিক্রয়ার্থ যায়।

পরিচ্ছদ:

সাধারণত ধুতি, চাদর ও পীরাণ ব্যবহার করিতে দেখা যায়। রামপুরবোয়ালিয়া ও নাটোরে বালাপোষের ব্যবহার আছে। হিন্দু রাজাদিগের সময় হইতে ক্রমে পরিচ্ছদের পরিবর্তন হইতেছে। আজকাল কৃষকের পরিচ্ছেদেরও বিস্তর পরিবর্তন।

বাসগৃহ:

শহরে ও রাজা জমিদারদিগের গৃহ প্রায় ইষ্টকনির্মিত। বাঁশ ও খড় নির্মিত গৃহই অধিক। বরেন্দ্রভূমিতে মৃত্তিকানির্মিত দেওয়াল হয়। আজকাল অনেক টিনের ও খাপরার গৃহ স্থানে স্থানে প্রস্তুত হইতেছে। রাজসাহীর “উলুখড়ের ছাওয়া বেঁকান ঘর, যাহাতে বাঁশের ছেচার বেড়া, দেখিতে সুন্দর।” এই বেঁকান ঘরকে রাজসাহীতে “বাঙ্গালাঘর” বলে। রাজসাহীর বাঙ্গালা ঘর ও আটচালা অতি সুন্দর।

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্গান সঙ্গীতে ধ্যানের আমন্ত্রণ এলেন আরকব্রো

রাজসাহীর ইতিহাস (পর্ব -৫)

০৪:৪৩:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

কৃষিঃ

ধান্যই প্রধান-আউশ ও আমন। ইহারা রোপা ও বুনা। বরেন্দ্র ভূমিতে রোপা ও ভড় অর্থাৎ নিম্নস্থানে বুনা ধান্য হয়। যে স্থানে স্বভাবত পূর্বেই বর্ষা হয়, সেই স্থানেই বোরো ধান্য হয়। নিকটে জল না থাকিলে বোরো ধান হয় না। পাট চাষ ও আজকাল কম নহে। অনেক স্থানে ধান্যের জমিতে পাট চাষ করিতেছে।


১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১৪,৩৩৩ একর জমিতে পাট চাষ হয়। এক্ষণে ধান্য চাষের জমি কম হইয়া পাট চাষের জমি প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি হইয়াছে।

রাজসাহীতে নীল ও রেশম যথেষ্ট জন্মে। ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে নীল ১,০৬২ মন এবং রেশম ১৫৫,৪২২ পাউন্ড উৎপন্ন হয়।

১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ হইতে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত “রেভিনিউ সর্ভে” হয়। জরিপ শেষ হওয়ার সময় জেলার আয়তন প্রায় ৩০০০ বর্গমাইল ছিল, তন্মধ্যে অর্ধেকের বেশি জমিতে চাষ হইত, অবশিষ্ট জমি চাষের অনুপযুক্ত বা পতিত ছিল। কিন্তু এক্ষণে জেলায় আয়তনের এক চতুর্থাংশ জমি পতিত আছে কিনা সন্দেহ।

গাঁজার চাষ:

রাজসাহী জেলার কেবল নওগাঁও মহকুমায় গাঁজা জন্মে। এই চাষে ব্যয় ও পরিশ্রম বেশি। গাঁজার জমির প্রধান সার খোল। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ১২০০ বিঘা বা ৪০০ একর জমিতে গাঁজার চাষ হয়। কিন্তু ১৮৯৭-৯৮ খ্রিস্টাব্দে ২১০৮ বিঘা জমিতে গাঁজার চাষ হয় এবং ৫৭৯৩ মন গাঁজা উৎপন্ন হইয়াছে। কিন্তু ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে ১৫৩১ বিঘা জমিতে গাঁজার চাষ হয় এবং ৫,৪১৭ মন গাঁজা উৎপন্ন হইয়াছে। এই ২৫/২৬ বৎসরে গাঁজার জমির চাব প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি হইয়াছে। দুবলহাটি রাজ্যেই গাঁজার চাষ বেশি। এই ২১০৮ বিঘা জমির মধ্যে প্রায় ১৮০০ বিঘা জমি দুবলহাটি রাজ্যের অন্তর্গত। ১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে ৫৮৬৭ মন গাঁজা নওগাঁ হইতে ভারতবর্ষের নানাস্থানে প্রেরিত হয়।


উপরের তালিকায় ইহা প্রতিপন্ন হইতেছে যে বঙ্গদেশে গাঁজা বেশি পরিমাণে প্রচলিত।

পান:

পরগণে তাহিরপুর ও তল্পে চাপলায় পান জন্মে। সাঁচি পানই সুখাদ্য। মাধনগর রেলওয়ে স্টেশন হইতে উত্তর প্রদেশে প্রতিদিবস বিস্তর পান বিক্রয়ার্থ যায়।

পরিচ্ছদ:

সাধারণত ধুতি, চাদর ও পীরাণ ব্যবহার করিতে দেখা যায়। রামপুরবোয়ালিয়া ও নাটোরে বালাপোষের ব্যবহার আছে। হিন্দু রাজাদিগের সময় হইতে ক্রমে পরিচ্ছদের পরিবর্তন হইতেছে। আজকাল কৃষকের পরিচ্ছেদেরও বিস্তর পরিবর্তন।

বাসগৃহ:

শহরে ও রাজা জমিদারদিগের গৃহ প্রায় ইষ্টকনির্মিত। বাঁশ ও খড় নির্মিত গৃহই অধিক। বরেন্দ্রভূমিতে মৃত্তিকানির্মিত দেওয়াল হয়। আজকাল অনেক টিনের ও খাপরার গৃহ স্থানে স্থানে প্রস্তুত হইতেছে। রাজসাহীর “উলুখড়ের ছাওয়া বেঁকান ঘর, যাহাতে বাঁশের ছেচার বেড়া, দেখিতে সুন্দর।” এই বেঁকান ঘরকে রাজসাহীতে “বাঙ্গালাঘর” বলে। রাজসাহীর বাঙ্গালা ঘর ও আটচালা অতি সুন্দর।