০২:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
কিউবার পথে সর্বনাশের ছায়া ভেনিজুয়েলার তেলে মার্কিন অবরোধে দ্বীপ রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা সৌদি সম্মানে ভূষিত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্কে নতুন বার্তা ভ্যান্সকে ঘিরে ডানপন্থীদের নতুন সমীকরণ, ২০২৮ দৌড়ে আগাম প্রস্তুতি শুরু স্বাস্থ্য উপহারই এবার উৎসবের নতুন ট্রেন্ড চীনা প্রযুক্তিতে মার্কিন বিনিয়োগে কড়াকড়ি, নতুন আইনে নজরদারি ও প্রতিরক্ষা খাতে বড় বাঁক ক্ষমতার সীমা ভাঙার বছর ট্রাম্পের, বিতর্ক আর দ্রুত সিদ্ধান্তে কাঁপল হোয়াইট হাউস শহরের স্পন্দনে কুপ্রা: সিটি গ্যারেজে বদলে যাচ্ছে নগর সংস্কৃতির মানচিত্র ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত, ঋণের চাপ আর সংস্কারের চ্যালেঞ্জ: শ্রীলঙ্কা এক সংকটে আটকে পড়েছে জিএমের বৈশ্বিক দৌড় ফর্মুলা ওয়ানকে হাতিয়ার করে নতুন বাজারে আমেরিকার অটো জায়ান্ট মাদুরো পতনের ছক কি যুদ্ধ ডেকে আনবে ক্যারিবিয়ানে

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-৩)

  • নাঈম হক
  • ০৯:০০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • 84

চীনারাও ক্রমশ তিক্ততার অনুভূতি নিয়ে ভিতরে ভিতরে ক্রুদ্ধ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিল।

আঠারোশ’ সালের প্রায় শেষের দিকে কোরিয়া ছিল কিংজ রাজবংশের ‘করদরাজ’। ‘মেইজি রিস্টোরেশন’-য়ের পরপরই জাপান কোরিয়া’কে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, চীন-জাপান রেষারেষির ঢেউ কোরিয়ার রাজনৈতিক জীবনে অস্থিরতার সৃচি করে। ১৮৯৪ সালে একটি বিদ্রোহ দমাতে কিংজ রাজবংশ কোরিয়া’য় সেনাবাহিনী পাঠায়, প্রতিউত্তর হিসেবে জাপানও সেনাবাহিনী পাঠায়।

দুই দেশের এই দুই সেনাবাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়; ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান এই যুদ্ধ “প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধ” নামে পরিচিত। এই যুদ্ধে “কিংজ”-দের পরাজয় ঘটে এবং ‘করদরাজ’ কোরিয়া জাপানের ‘করদরাজ”-য়ে পরিণত হয়। তাছাড়াও, ওয়ার-ট্রফি হিসেবে জাপান তাইওয়ান এবং মাজুরিয়ার “লিয়োডং” উপদ্বীপ দখল করে নেয়।

(ফলে নতুন সমস্যার উদ্ভব হয়। বিশেষ করে রাজকীয় রাশিয়ার কাছে। “লিয়োডং” উপদ্বীপ ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক উপদ্বীপ। ফলস্বরূপ, উপদ্বীপকে কেন্দ্র করে দুই সাম্রাজ্য। রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং ১৯০৪-১৯০৫ সালে রুশো-জাপান যুদ্ধ হয়; এই যুদ্ধে রাজকীয় জাপানের কাছে রাজকীয় রাশিয়া পরাজিত হয়।)

প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধের পরে, স্বদেশে বিদেশি প্রভাবের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির কারণে চীনারাও ক্রমশ তিক্ততার অনুভূতি নিয়ে ভিতরে ভিতরে ক্রুদ্ধ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিল। এমন অবস্থা তো আর সহ্য করা সম্ভব নয় নামক অনুভূতি দানা বেঁধে বেঁধে ঘনীভূত হয়ে চীনে অবস্থানরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে “বক্সার বিদ্রোহ” প্রচণ্ড রাগে ফেটে পড়ে। ১৮৯৯-১৯০১ সালের এই জনপ্রিয় গণ-অভ্যুত্থান চীনে বিদেশিদের জীবনযাত্রাকে আক্ষরিক অর্থেই পঙ্গু করে দেয়।

“কিংজ রাজবংশ” এই গণ-অভ্যুত্থানকে সমর্থন করে। ঠিক বিয়াল্লিশ বছর পূর্বে, ১৮৫৭ সালের দশ মে ব্রিটিশ রাজশক্তি প্রদত্ত সর্বোচ্চ কর্তৃত্বপ্রাপ্ত ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর ভারতীয় সিপাহীরা ব্রিটিশ ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। শেষ মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর সিপাহি বিদ্রোহকে সমর্থন করেছিলেন, সাহায্য করেছিলেন।

দেড় বছর স্থায়ী এই সিপাহি বিদ্রোহ পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হওয়ার পরে ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষের প্রতি বস্তাটি বাহাদুর শাহ জাফরকে দূর বার্মায় রেঙ্গুনে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেই নিগৃহীত সম্রাট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর কবর বিদেশ বিভূই য়ে থেকে যায়।

(চলবে)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-২)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-২)

জনপ্রিয় সংবাদ

কিউবার পথে সর্বনাশের ছায়া ভেনিজুয়েলার তেলে মার্কিন অবরোধে দ্বীপ রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-৩)

০৯:০০:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

চীনারাও ক্রমশ তিক্ততার অনুভূতি নিয়ে ভিতরে ভিতরে ক্রুদ্ধ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিল।

আঠারোশ’ সালের প্রায় শেষের দিকে কোরিয়া ছিল কিংজ রাজবংশের ‘করদরাজ’। ‘মেইজি রিস্টোরেশন’-য়ের পরপরই জাপান কোরিয়া’কে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, চীন-জাপান রেষারেষির ঢেউ কোরিয়ার রাজনৈতিক জীবনে অস্থিরতার সৃচি করে। ১৮৯৪ সালে একটি বিদ্রোহ দমাতে কিংজ রাজবংশ কোরিয়া’য় সেনাবাহিনী পাঠায়, প্রতিউত্তর হিসেবে জাপানও সেনাবাহিনী পাঠায়।

দুই দেশের এই দুই সেনাবাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়; ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান এই যুদ্ধ “প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধ” নামে পরিচিত। এই যুদ্ধে “কিংজ”-দের পরাজয় ঘটে এবং ‘করদরাজ’ কোরিয়া জাপানের ‘করদরাজ”-য়ে পরিণত হয়। তাছাড়াও, ওয়ার-ট্রফি হিসেবে জাপান তাইওয়ান এবং মাজুরিয়ার “লিয়োডং” উপদ্বীপ দখল করে নেয়।

(ফলে নতুন সমস্যার উদ্ভব হয়। বিশেষ করে রাজকীয় রাশিয়ার কাছে। “লিয়োডং” উপদ্বীপ ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক উপদ্বীপ। ফলস্বরূপ, উপদ্বীপকে কেন্দ্র করে দুই সাম্রাজ্য। রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং ১৯০৪-১৯০৫ সালে রুশো-জাপান যুদ্ধ হয়; এই যুদ্ধে রাজকীয় জাপানের কাছে রাজকীয় রাশিয়া পরাজিত হয়।)

প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধের পরে, স্বদেশে বিদেশি প্রভাবের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির কারণে চীনারাও ক্রমশ তিক্ততার অনুভূতি নিয়ে ভিতরে ভিতরে ক্রুদ্ধ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিল। এমন অবস্থা তো আর সহ্য করা সম্ভব নয় নামক অনুভূতি দানা বেঁধে বেঁধে ঘনীভূত হয়ে চীনে অবস্থানরত বিদেশিদের বিরুদ্ধে “বক্সার বিদ্রোহ” প্রচণ্ড রাগে ফেটে পড়ে। ১৮৯৯-১৯০১ সালের এই জনপ্রিয় গণ-অভ্যুত্থান চীনে বিদেশিদের জীবনযাত্রাকে আক্ষরিক অর্থেই পঙ্গু করে দেয়।

“কিংজ রাজবংশ” এই গণ-অভ্যুত্থানকে সমর্থন করে। ঠিক বিয়াল্লিশ বছর পূর্বে, ১৮৫৭ সালের দশ মে ব্রিটিশ রাজশক্তি প্রদত্ত সর্বোচ্চ কর্তৃত্বপ্রাপ্ত ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর ভারতীয় সিপাহীরা ব্রিটিশ ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। শেষ মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর সিপাহি বিদ্রোহকে সমর্থন করেছিলেন, সাহায্য করেছিলেন।

দেড় বছর স্থায়ী এই সিপাহি বিদ্রোহ পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হওয়ার পরে ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষের প্রতি বস্তাটি বাহাদুর শাহ জাফরকে দূর বার্মায় রেঙ্গুনে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেই নিগৃহীত সম্রাট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর কবর বিদেশ বিভূই য়ে থেকে যায়।

(চলবে)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-২)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা ( পর্ব-২)