০৬:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
লেবাননের শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ নিহত, নতুন সহিংসতার আশঙ্কা ‘আমার কোনও দোষ ছিল না, কিন্তু আমাকে সব কিছু হারাতে হয়েছে’ ‘সুইম শেডি’ নাম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এমিনেম দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের উপকূলীয় শহর ওওইতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল শতাধিক ঘর বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুতে এগোচ্ছে জাপান গ্রাহকদের ভোগান্তি কমছে না, এবার রবির বিরুদ্ধে অভিযোগ — জিপি ও বাংলালিংকের আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিশু নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি ভারতের স্পষ্ট বার্তা: যেখানেই হোক, সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানোর পূর্ণ অধিকার আছে ইভি আর স্মার্ট গ্যাজেটের জোরে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা দেখাল শাওমি ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী

খাওয়ার হুসেইন ও বিভূরঞ্জন সরকারের মৃত্যু কেবল দুটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সাংবাদিক সমাজে একের পর এক শোকাবহ ঘটনা ঘটছে। পাকিস্তানের তরুণ সাংবাদিক খাওয়ার হুসেইন আত্মহত্যা করার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বিভূরঞ্জন সরকারও একইভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। উভয়ের পূর্ণ মেডিকেল রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে এই ধরনের মৃত্যুগুলো শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সাংবাদিকতার পেশাগত ও সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংকটকে সামনে নিয়ে আসছে।

সাংবাদিকদের মানসিক চাপ

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাংবাদিকরা দীর্ঘদিন ধরেই বহুমাত্রিক চাপে আছেন। তারা রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় হুমকি, আইনি হয়রানি, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং শারীরিক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করছেন। বিশেষ করে তরুণ সাংবাদিকরা পেশাগত স্থায়িত্ব ও ক্যারিয়ার নিরাপত্তার অভাবে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।

কর্মমুখী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে বেকার

আর্থিক অনিশ্চয়তা ও বেকারত্ব

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সংবাদমাধ্যম খাত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। বিজ্ঞাপন কমে যাওয়া, নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিযোগিতা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক দুর্বলতা অনেক সাংবাদিককে বেকার করে তুলেছে। স্থায়ী চাকরি না থাকা, নিয়মিত বেতন না পাওয়া এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তাদের হতাশ করে তুলছে।

রাজনৈতিক চাপ ও সেন্সরশিপ

উভয় দেশেই সাংবাদিকদের কাজ করতে হয় রাষ্ট্রীয়- রাজনৈতিক চাপ ও সেন্সরশিপের অধীনে। সত্য প্রকাশ করলে মামলা, হামলা বা চাকরি হারানোর ঝুঁকি নিতে হয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। এই ভয় ও চাপ মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও সহায়তার অভাব

সাংবাদিকতা পড়েও কেন এই পেশায় আসছে না তরুণরা | The Daily Star Bangla

সাংবাদিকদের পেশা এমনিতেই ব্যস্ত ও চাপপূর্ণ। পরিবার ও সমাজের সাথে পর্যাপ্ত যোগাযোগ বজায় রাখতে না পারা, ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা না করার অভ্যাস, এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ট্যাবু ভাব তাদের আরও একাকী করে তোলে। ফলে হতাশার গভীর পর্যায়ে গিয়ে অনেক সময় তারা চরম সিদ্ধান্ত নেন।

কেন আত্মহত্যা বাড়ছে?

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নের অভাব – সাংবাদিকদের জন্য আলাদা কাউন্সেলিং বা সাপোর্ট সিস্টেম নেই।
অর্থনৈতিক সংকট – স্থায়ী আয়ের নিশ্চয়তা নেই, যা দীর্ঘমেয়াদে হতাশা তৈরি করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ – কাজের স্বাধীনতা সীমিত, ফলে পেশাগত সাফল্য অনুভব করা কঠিন।
পেশাগত অনিশ্চয়তা – মিডিয়া শিল্পের দ্রুত পরিবর্তন অনেককে চাকরির বাইরে ঠেলে দিচ্ছে।

খাওয়ার হুসেইন ও বিভূরঞ্জন সরকারের মৃত্যু কেবল দুটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়; বরং এটি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের গভীর সংকটকে প্রকাশ করছে। পূর্ণ মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে, তবে ইতিমধ্যেই পরিষ্কার—সাংবাদিকদের মানসিক স্বাস্থ্য, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না করলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

লেবাননের শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ নিহত, নতুন সহিংসতার আশঙ্কা

খাওয়ার হুসেইন ও বিভূরঞ্জন সরকারের মৃত্যু কেবল দুটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়

০৫:৫৪:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সাংবাদিক সমাজে একের পর এক শোকাবহ ঘটনা ঘটছে। পাকিস্তানের তরুণ সাংবাদিক খাওয়ার হুসেইন আত্মহত্যা করার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশের বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বিভূরঞ্জন সরকারও একইভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। উভয়ের পূর্ণ মেডিকেল রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে এই ধরনের মৃত্যুগুলো শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সাংবাদিকতার পেশাগত ও সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংকটকে সামনে নিয়ে আসছে।

সাংবাদিকদের মানসিক চাপ

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাংবাদিকরা দীর্ঘদিন ধরেই বহুমাত্রিক চাপে আছেন। তারা রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় হুমকি, আইনি হয়রানি, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং শারীরিক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করছেন। বিশেষ করে তরুণ সাংবাদিকরা পেশাগত স্থায়িত্ব ও ক্যারিয়ার নিরাপত্তার অভাবে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।

কর্মমুখী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে বেকার

আর্থিক অনিশ্চয়তা ও বেকারত্ব

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সংবাদমাধ্যম খাত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। বিজ্ঞাপন কমে যাওয়া, নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিযোগিতা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক দুর্বলতা অনেক সাংবাদিককে বেকার করে তুলেছে। স্থায়ী চাকরি না থাকা, নিয়মিত বেতন না পাওয়া এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তাদের হতাশ করে তুলছে।

রাজনৈতিক চাপ ও সেন্সরশিপ

উভয় দেশেই সাংবাদিকদের কাজ করতে হয় রাষ্ট্রীয়- রাজনৈতিক চাপ ও সেন্সরশিপের অধীনে। সত্য প্রকাশ করলে মামলা, হামলা বা চাকরি হারানোর ঝুঁকি নিতে হয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। এই ভয় ও চাপ মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও সহায়তার অভাব

সাংবাদিকতা পড়েও কেন এই পেশায় আসছে না তরুণরা | The Daily Star Bangla

সাংবাদিকদের পেশা এমনিতেই ব্যস্ত ও চাপপূর্ণ। পরিবার ও সমাজের সাথে পর্যাপ্ত যোগাযোগ বজায় রাখতে না পারা, ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা না করার অভ্যাস, এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ট্যাবু ভাব তাদের আরও একাকী করে তোলে। ফলে হতাশার গভীর পর্যায়ে গিয়ে অনেক সময় তারা চরম সিদ্ধান্ত নেন।

কেন আত্মহত্যা বাড়ছে?

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নের অভাব – সাংবাদিকদের জন্য আলাদা কাউন্সেলিং বা সাপোর্ট সিস্টেম নেই।
অর্থনৈতিক সংকট – স্থায়ী আয়ের নিশ্চয়তা নেই, যা দীর্ঘমেয়াদে হতাশা তৈরি করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ – কাজের স্বাধীনতা সীমিত, ফলে পেশাগত সাফল্য অনুভব করা কঠিন।
পেশাগত অনিশ্চয়তা – মিডিয়া শিল্পের দ্রুত পরিবর্তন অনেককে চাকরির বাইরে ঠেলে দিচ্ছে।

খাওয়ার হুসেইন ও বিভূরঞ্জন সরকারের মৃত্যু কেবল দুটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়; বরং এটি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের গভীর সংকটকে প্রকাশ করছে। পূর্ণ মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর আরও তথ্য পাওয়া যাবে, তবে ইতিমধ্যেই পরিষ্কার—সাংবাদিকদের মানসিক স্বাস্থ্য, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না করলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।