০৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৮৮ রোগী দিল্লি–ঢাকা অংশীদারত্বে ওষুধ শিল্পের গুরুত্ব সারাদেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধের ঘোষণা গাজীপুরে ফিনিক্স কয়েল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, নিরাপদে সরানো হয়েছে ৫০০ শ্রমিক চার মাসেই বেনাপোল দিয়ে ১৪ হাজার টন দিল্লির চাল এল ঢাকায় বেইজিংয়ের হুঁশিয়ারি: তাইওয়ান নিয়ে মন্তব্য না বদলালে জাপানের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা  দুবাই ইনফ্লুয়েন্সার অনুনয় স্যূদের মৃত্যু: লাস ভেগাস পুলিশের নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করল শেষ কয়েক ঘণ্টার করুণ পরিস্থিতি নতুন বন্যায় ডুবে ভিয়েতনাম, ঝুঁকিতে কফি ফসল ও গ্রামীণ জীবন লেবাননের শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ নিহত, নতুন সহিংসতার আশঙ্কা ‘আমার কোনও দোষ ছিল না, কিন্তু আমাকে সব কিছু হারাতে হয়েছে’

নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়লো আখিরা নদীর কাঁচা বাঁধ

অসমাপ্ত বাঁধে অকাল ধস

রংপুরের পিরগঞ্জ উপজেলার আখিরা নদীর তীরে চলমান ৮০০ মিটার দীর্ঘ কাঁচা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। কাজ এখনও শেষ হয়নি, এর আগেই এ ভাঙন ঘটায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

স্থানীয়দের অভিযোগ: নিম্নমানের উপকরণে কাজ

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং তাড়াহুড়ো করে কাজ করার কারণেই এই ধস নেমে এসেছে। তাদের মতে, মাটি শক্তভাবে চাপিয়ে না দেওয়ায় এবং নরম ভিত্তির কারণে বাঁধ টিকতে পারেনি।

প্রকল্পের মূল তথ্য

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাওয়িবি) এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের নাম: ‘নদী-কানাল রক্ষা, খনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন (১ম সংশোধিত)’
বাজেট: প্রায় ৫.৩৪ কোটি টাকা
ঠিকাদার: রংপুরভিত্তিক ঠিকাদার ভারত প্রসাদ
সময়সীমা: জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৬


বন্যার সময় নিরাপত্তাহীনতা

স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই ধরণের দুর্বল বাঁধ দিয়ে বন্যার সময় বাড়ি ও কৃষিজমি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ফলে প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য

ঠিকাদারি সংস্থার ম্যানেজার শ্যামাল চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, ধসের জন্য নির্মাণ মান দায়ী নয়, বরং মাটির দুর্বলতা কারণ। এ কারণে প্রয়োজনীয় মেরামত চলছে।

ঠিকাদার ভারত প্রসাদ বলেন, দুই পাশে প্রায় ৪৮০ মিটার কাজ শেষ হয়েছে, এর মধ্যে ১৩০ মিটার স্থিতিশীল। মাটির স্তরে সমস্যা থাকায় ধস হয়েছে। প্রথমে মেরামত করা হলেও আবারও ধসে পড়েছে। বর্তমানে মাটি স্থিতিশীল না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ সমাধান সম্ভব নয়।

বাওয়িবির প্রতিক্রিয়া

সহকারী প্রকৌশলী টিএম ইস্রাফিল হক জানিয়েছেন, প্রকল্পে কোনো নকশাগত শর্ত ছাড়াই কেবল দৃশ্যমানতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে “মাটি ডাম্প করা”র শর্ত ছিল না। অতিরিক্ত জলচাপের কারণে ধস হয়েছে এবং ঠিকাদারকে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। ব্লকগুলো ‌বুয়েটে পরীক্ষিত এবং পরীক্ষায় ফেল হলে বাদ দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে যেকোনো ত্রুটি সারাতে ঠিকাদার বাধ্য।

নির্বাহী প্রকৌশলীর মন্তব্য

রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, খননের কারণে খাল ইজারা থাকায় এপ্রিল-মে পর্যন্ত পানি জমে ছিল। হঠাৎ মাটির সম্পৃক্তি হয়ে ভাঙন দেখা দেয়। ঠিকাদার ইতিমধ্যেই মেরামতের কাজ শুরু করেছে এবং চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে সব ত্রুটি সারতে হবে।

অপূর্ণ বাঁধের এই অকাল ধস আবারও দেখালো অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে মান ও স্বচ্ছতার গুরুত্ব কতটা জরুরি। স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এমন প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৭৮৮ রোগী

নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়লো আখিরা নদীর কাঁচা বাঁধ

১২:৩৭:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

অসমাপ্ত বাঁধে অকাল ধস

রংপুরের পিরগঞ্জ উপজেলার আখিরা নদীর তীরে চলমান ৮০০ মিটার দীর্ঘ কাঁচা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। কাজ এখনও শেষ হয়নি, এর আগেই এ ভাঙন ঘটায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

স্থানীয়দের অভিযোগ: নিম্নমানের উপকরণে কাজ

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং তাড়াহুড়ো করে কাজ করার কারণেই এই ধস নেমে এসেছে। তাদের মতে, মাটি শক্তভাবে চাপিয়ে না দেওয়ায় এবং নরম ভিত্তির কারণে বাঁধ টিকতে পারেনি।

প্রকল্পের মূল তথ্য

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাওয়িবি) এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের নাম: ‘নদী-কানাল রক্ষা, খনন ও জলাবদ্ধতা নিরসন (১ম সংশোধিত)’
বাজেট: প্রায় ৫.৩৪ কোটি টাকা
ঠিকাদার: রংপুরভিত্তিক ঠিকাদার ভারত প্রসাদ
সময়সীমা: জুলাই ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৬


বন্যার সময় নিরাপত্তাহীনতা

স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই ধরণের দুর্বল বাঁধ দিয়ে বন্যার সময় বাড়ি ও কৃষিজমি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ফলে প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য

ঠিকাদারি সংস্থার ম্যানেজার শ্যামাল চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, ধসের জন্য নির্মাণ মান দায়ী নয়, বরং মাটির দুর্বলতা কারণ। এ কারণে প্রয়োজনীয় মেরামত চলছে।

ঠিকাদার ভারত প্রসাদ বলেন, দুই পাশে প্রায় ৪৮০ মিটার কাজ শেষ হয়েছে, এর মধ্যে ১৩০ মিটার স্থিতিশীল। মাটির স্তরে সমস্যা থাকায় ধস হয়েছে। প্রথমে মেরামত করা হলেও আবারও ধসে পড়েছে। বর্তমানে মাটি স্থিতিশীল না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ সমাধান সম্ভব নয়।

বাওয়িবির প্রতিক্রিয়া

সহকারী প্রকৌশলী টিএম ইস্রাফিল হক জানিয়েছেন, প্রকল্পে কোনো নকশাগত শর্ত ছাড়াই কেবল দৃশ্যমানতার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে “মাটি ডাম্প করা”র শর্ত ছিল না। অতিরিক্ত জলচাপের কারণে ধস হয়েছে এবং ঠিকাদারকে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। ব্লকগুলো ‌বুয়েটে পরীক্ষিত এবং পরীক্ষায় ফেল হলে বাদ দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে যেকোনো ত্রুটি সারাতে ঠিকাদার বাধ্য।

নির্বাহী প্রকৌশলীর মন্তব্য

রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, খননের কারণে খাল ইজারা থাকায় এপ্রিল-মে পর্যন্ত পানি জমে ছিল। হঠাৎ মাটির সম্পৃক্তি হয়ে ভাঙন দেখা দেয়। ঠিকাদার ইতিমধ্যেই মেরামতের কাজ শুরু করেছে এবং চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে সব ত্রুটি সারতে হবে।

অপূর্ণ বাঁধের এই অকাল ধস আবারও দেখালো অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে মান ও স্বচ্ছতার গুরুত্ব কতটা জরুরি। স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে এমন প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যাবে।