হার্ডিঞ্জ সেতু পদ্মা নদীর ওপর পাকশী (পাবনা) ও ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) সংযোগকারী ঐতিহাসিক রেলসেতু। ১৯১৫ সালে নির্মাণ সম্পন্ন এই সেতু শতবর্ষ পার করে এখনও রেলগমন-আগমনে ব্যবহৃত হয় এবং অঞ্চলের ইতিহাস ও অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত।
সেতুটির নির্মাণ কাজ বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে শুরু হয়ে ১৯১৫ সালে শেষ হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে লর্ড হার্ডিঞ্জের নামে নামকরণ করা এই সেতু তখনকার প্রকৌশল কৌশলের প্রতীক ছিল এবং বহু শ্রমিকের শ্রমে বাস্তবায়িত হয়।

হার্ডিঞ্জ সেতু প্রধানত লোহা ও গার্ডার ভিত্তিক নির্মিত; এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৮ কিলোমিটার। সেতুর পাইয়ার ও স্প্যান নির্মাণশৈলী ব্রিটিশ যুগের প্রকৌশল দক্ষতার উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
সেতুটি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সরাসরি রেলযোগাযোগ স্থাপন করে কৃষিপণ্য, শিল্পপণ্য ও যাত্রী পরিবহন দ্রুত ও সহজ করে তুলেছিল। ফলত অঞ্চলের বাণিজ্য ও অর্থনীতি গতি পেয়েছিল।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় হার্ডিঞ্জ সেতু কৌশলগত গুরুত্ব রাখত; সেই কালে সেতু নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইবার কারণে যুদ্ধকালীন ঘটনাপ্রবাহে এর একটি উল্লেখযোগ্য স্থান আছে। ফলে সেতুটিকে জাতীয় স্মৃতির এক অংশও বলা যায়।

অধিকাংশ রেল চলাচলের প্রয়োজন এখনও মেটায় এই সেতু; যদিও আধুনিক পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে অনেক দৃষ্টি সরে গেছে, হার্ডিঞ্জ সেতুর ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যগত গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রয়ে গেছে। পর্যটন ও স্থানীয় ইতিহাসচর্চায় এর ভূমিকা দেখা যায়।
শতবর্ষ পার করে যাওয়া সেতুর স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও পর্যবেক্ষণ জরুরি। পরিকল্পিত সংস্কার ও পর্যটন-বন্ধুত্ব উদ্যোগ সেতুটিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণে সাহায্য করবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















