জলের গড়িয়ে পড়ার গতিময়তা ব্রাশে যেভাবে এনেছেন তা দেখার মতো। সকাল ও সন্ধ্যা নিসর্গে দুটি মসজিদ ও একটি গ্রাম নিয়ে আছে তিনটি জলরং।
আগেই উল্লেখ করেছি তিন বছর ঢাকায় বা পূর্ববঙ্গে থাকার সময় তিনি যথেষ্ট এঁকেছিলেন। এর মধ্যে স্বইচ্ছায় আঁকা ও কমিশন নিয়ে আঁকা ছবি আছে।অন্তর্জালে চিনারির বেশকিছু ড্রইং ও জলরংয়ের প্রতিলিপি পাওয়া গেছে যা সথেবি, ক্রিস্টির নিলামে বিক্রি হয়েছে। চিনারি এগুলি কখন কোথায় এঁকেছেন তা নির্দিষ্টভাবে বলা নেই, উল্লেখ করা হয়েছে ‘বেঙ্গল’ শিরোনামে।
একটি সূত্র থেকে জানতে পারি, এর কিছু হুগলিতে আঁকা। তবে আমার অনুমান দুটি ড্রইং ও চারটি জলরং পূর্ববঙ্গে করা। ড্রইং দুটি কয়লা ও রঙিন খড়ি দিয়ে করা। একটির বিষয় বস্তু আমার মনে হয়েছে কাটরা, খড়ো কুটির ও দু’মহিলা। ভগ্ন ইমারতটির গড়ন কাটরার মতো। পরবর্তীকালেও কাটরার পাশে অন্য শিল্পীর আঁকা কুটির দেখেছি।
আরেকটি ঢাকার উপকণ্ঠে গ্রাম। মগবাজারও হতে পারে। কারণ মগবাজারের মসজিদ নিয়ে একটি ড্রইং আছে তাঁর। এটিতে খড়ির স্ট্রোক লক্ষণীয়, গ্রামের এ কুটিরের একটি জলরং। আলোর সেই ছড়িয়ে পড়া। এক কথায় অপূর্ব। জলের গড়িয়ে পড়ার গতিময়তা ব্রাশে যেভাবে এনেছেন তা দেখার মতো। সকাল ও সন্ধ্যা নিসর্গে দুটি মসজিদ ও একটি গ্রাম নিয়ে আছে তিনটি জলরং।
খুব সম্ভব কুমিল্লা, বরিশাল বা ঢাকার বাইরের দৃশ্য। এসব পূর্ববঙ্গের এ অনুমানের কারণ, যেসব মসজিদ, খড়োকুটির বা ইমারতের ড্রইং/জলরং করেছেন তার সঙ্গে মিল আছে আগে উল্লিখিত ড্রইং/জলরংয়ের। ভিক্টোরিয়া অ্যালবাট মিউজিয়ামের সংগ্রহে চিনারির দুটি ড্রইং আছে-একটি চকের মসজিদ ও বড় কাটরার ফটক এবং অন্যটি বুড়িগঙ্গার তীরে একটি মসজিদ। তাঁর ড্রইং বা জলরংয়ের বিশেষত্ব আগে উল্লেখ করেছি এখানে তার পুনরাবৃত্তি করলাম না।
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 



















