“দুটি ধনাত্মক রাশির যোগ ধনাত্মক, দুটি ঋণাত্মক রাশির যোগ ঋণাত্মক এবং ঋণাত্মক ও ধনাত্মক রাশির যোগ তাদের পার্থক্যকে বোঝাবে।
বিয়োগ করতে হলে “সূত্র” শব্দটির আন্তাক্ষর “স্” বর্ণটি ব্যবহার করা হত। অনেক পণ্ডিত মনে করে ক্ষ বর্ণটির ক্রমোন্নতির ফলেই “+” চিহ্নটি ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে দেখা যায়। অনেক পণ্ডিত অবশ্য অশোক লিপির ক (ক) বর্ণটির সঙ্গে “+” চিহ্নের সাদৃশ দেখেন। এই প্রসঙ্গে ডঃ হোর্ণলে অনুমান করেন ও বর্ণটি সংস্কৃত। কনীয়স বা স্থান শব্দ থেকে এসেছে। ২ উভয়েই অর্থ হছে “কমাও” বিখ্যাত গণিত ঐতিহাসিক ডঃ বিভূতিভূষণ দত্ত মনে করেন-সংস্কৃত ক্ষয় শব্দটির ক্রমবিকাশের ফলে “+” চিহ্নটি ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে এসেছে।
বিখ্যাত টীকা-কার পৃথুদকস্বামী এবং তৎপরবর্তী বহু ভারতীয় গণিতবিদ যে সংখ্যাটি বিয়োগ করতে হবে তার মাথায় একটি বিন্দু (১) বসিয়ে বিয়োগ চিহ্নকে বোঝাতে চেয়েছেন। যেমন ধরা যাক ১২৭ যাই হোক এখন চিহ্নের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা না করে চিহ্নাদির নিয়ম (বা সূত্র) সম্বন্ধে ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে কে কি বলেছেন তা নিয়ে কিছু বলা যাক। অবশ্য আমরা ইতিপূর্বে পাটীগণিতের মধ্যে যোগ, বিয়োগ প্রভৃতির নিয়মগুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানেও প্রায় একই তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্ত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
চিহ্নাদির নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করতে দেখা যায় ব্রাহ্মস্ফুট সিদ্ধান্তে, গণিতসার সংগ্রহে, সিদ্ধান্ত শেখরে, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্যের বীজগণিত প্রভৃতি গ্রন্থে। ব্রহ্মগুপ্ত বলেছেন “দুটি ধনাত্মক রাশির যোগ ধনাত্মক, দুটি ঋণাত্মক রাশির যোগ ঋণাত্মক এবং ঋণাত্মক ও ধনাত্মক রাশির যোগ তাদের পার্থক্যকে বোঝাবে। মহাবীর গণিতসারসংগ্রহে বলেছেন “ধনাত্মক রাশিদ্বয়ের যোগফল তাদের পার্থক্যকে বোঝাবে। দুটি ধনাত্মক রাশির যোগফল ধনাত্মক ও দুটি ঋণাত্মক রাশির যোগফল ঋণাত্মক হবে।”
শ্রীপতি সিদ্ধান্ত শেখরে বলেছেন:
ঐক্যং যুতৌ স্নাত, জয়য়োঃ স্বয়োশ্চ
ধনর্ণয়োরস্তরমেব যোগঃ
সংশোধ্যমানং স্বয়ণং তথর্ণং
ধনং ভবেছক্তবদত্র যোগঃ।
অর্থাৎ দুটি ধনরাশির বা দুটি ঋণরাশি যোগ হয়ে থাকে। একটি ধন অপরটি ঋণ হলে তাদের অন্তরই যোগ। বিযোজ্য ধন হলে বিয়োগ ছলে তা ঋণ হবে এবং ঐরূপ ঋণরাশি ধন হবে। অতঃপর এদের যোগ করতে হবে।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















