লাইভে খুন হলেন ইউক্রেনের সাবেক পার্লামেন্ট স্পিকার
২০২৫ সালের ৩০ আগস্ট, ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভে সাবেক পার্লামেন্ট স্পিকার অ্যান্ড্রি প্যারুবি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় একটি অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয়েছে।
হত্যার ঘটনা এবং তদন্ত
প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, একটি বন্দুকধারী প্যারুবিকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছুঁড়লে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। হামলাকারী পালিয়ে গেছে এবং তার খোঁজে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
প্যারুবি, ৫৪ বছর বয়সী, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ইউক্রেনের পার্লামেন্টের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৩-১৪ সালে ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ার দাবিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিনি ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যখন পূর্ব ইউক্রেনে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল এবং রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছিল।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই হত্যার সাথে রাশিয়ার যুদ্ধের কোনো সরাসরি সম্পর্ক আছে কিনা, তা পরিষ্কার করে জানাননি।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক টুইটে জানান, “অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ইহর ক্লাইমেঙ্কো এবং প্রসিকিউটর জেনারেল রুসলান ক্রাভচেঙ্কো লভিভে এই ভয়াবহ হত্যার প্রথম জানা পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট করেছেন। অ্যান্ড্রি প্যারুবি কে হত্যা করা হয়েছে।” তিনি নিহতের পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন, “এখন সমস্ত প্রয়োজনীয় বাহিনী এবং উপকরণ হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছে।”

প্যারুবির প্রতি শ্রদ্ধা
পার্লামেন্টের সদস্য এবং সরকারের বিভিন্ন পক্ষ থেকে প্যারুবির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে ইউরোমেইদান প্রতিবাদ আন্দোলনের নেতা হিসেবে ইউক্রেনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তার ভূমিকার প্রশংসা করা হয়।
ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, “এই হত্যাকাণ্ড ইউক্রেনের হৃদয়ে গুলি চালানো একটি আঘাত। অ্যান্ড্রি ছিলেন একজন মহান মানুষ এবং একজন প্রকৃত বন্ধু।”
বাহ্যিক সম্পর্ক মন্ত্রী আন্দ্রী সিবিহা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “প্যারুবি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ও রাষ্ট্রনায়ক, যিনি ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বিশাল অবদান রেখেছেন। তিনি ইতিহাসের পাতায় জায়গা পেয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিডেঙ্কো এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং এটিকে “দেশের জন্য গভীর ক্ষতি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আপনি সবসময় ইউক্রেনের একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন এবং আমাদের রাষ্ট্র গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।”
এই হত্যার মোটিভ বা হত্যাকারীর পরিচয় সম্পর্কে ইউক্রেনীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো তথ্য দেয়নি।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















