০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী চীন

  • Sarakhon Report
  • ০৪:৪৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫
  • 81

চীন জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন উভয় দেশের জন্য লাভজনক। ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর থেকে দুই দেশ ধীরে ধীরে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

সম্পর্ক উন্নয়নের প্রেক্ষাপট

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৯ আগস্ট এক লিখিত বিবৃতিতে জানায়, “চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নয়ন দুই দেশের সাধারণ স্বার্থের বিষয় এবং উভয় পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার ফল।”
তারা আরও জানায়, এখানে কোনো “গোপন কূটনীতি” চলছে না, বরং “স্বাভাবিক যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া” হচ্ছে।

চিঠি নিয়ে বিতর্ক

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের মার্চে বেইজিং গোপনে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ যাচাই করতে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট শি নাকি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মুকে এক চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের চিঠির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে।

কাজান বৈঠকের গুরুত্ব

চীন জানায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কাজানে মোদি-শি বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সহায়ক ছিল। এর পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পুনরায় সূচনা হয়েছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাভাবিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে।

সীমান্ত সমস্যা ও কূটনৈতিক অগ্রগতি

চীন ও ভারত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত অচলাবস্থা নিরসনের পদক্ষেপ নিয়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি সাত বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন।
চীন জানিয়েছে, “আমরা ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পর্ককে দেখা যায়।”

মার্কিন শুল্ক নীতি ও নতুন বাস্তবতা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ উভয় দেশকেই প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে চীন-ভারত উভয়েই কৌশলগতভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে।

সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন

আগস্ট ৩১ থেকে সেপ্টেম্বর ১ পর্যন্ত তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
মোদির আরও একটি বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে।

চীনা গণমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গি

২৯ আগস্ট প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, চীন-ভারত সম্পর্কের উষ্ণতা কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে যথার্থ এবং এটি বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার বড় পরিবর্তনের প্রতিফলন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “আজকে চীন ও ভারত এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দুটি ইঞ্জিন, গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি এবং এসসিও, ব্রিকস ও জি-২০ এর সদস্য। তাদের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে আরও গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য পথে এগিয়ে নেওয়া।”

এই প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, চীন ও ভারত উভয়েই বৈশ্বিক চাপ ও আঞ্চলিক স্বার্থের কারণে সম্পর্ক পুনর্গঠনে আগ্রহী হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী চীন

০৪:৪৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

চীন জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন উভয় দেশের জন্য লাভজনক। ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর থেকে দুই দেশ ধীরে ধীরে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নিচ্ছে।

সম্পর্ক উন্নয়নের প্রেক্ষাপট

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৯ আগস্ট এক লিখিত বিবৃতিতে জানায়, “চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নয়ন দুই দেশের সাধারণ স্বার্থের বিষয় এবং উভয় পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টার ফল।”
তারা আরও জানায়, এখানে কোনো “গোপন কূটনীতি” চলছে না, বরং “স্বাভাবিক যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া” হচ্ছে।

চিঠি নিয়ে বিতর্ক

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের মার্চে বেইজিং গোপনে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ যাচাই করতে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট শি নাকি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মুকে এক চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের চুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরনের চিঠির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে।

কাজান বৈঠকের গুরুত্ব

চীন জানায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে কাজানে মোদি-শি বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সহায়ক ছিল। এর পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পুনরায় সূচনা হয়েছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাভাবিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে।

সীমান্ত সমস্যা ও কূটনৈতিক অগ্রগতি

চীন ও ভারত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত অচলাবস্থা নিরসনের পদক্ষেপ নিয়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি সাত বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন।
চীন জানিয়েছে, “আমরা ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পর্ককে দেখা যায়।”

মার্কিন শুল্ক নীতি ও নতুন বাস্তবতা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ উভয় দেশকেই প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে চীন-ভারত উভয়েই কৌশলগতভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে।

সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন

আগস্ট ৩১ থেকে সেপ্টেম্বর ১ পর্যন্ত তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
মোদির আরও একটি বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে।

চীনা গণমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গি

২৯ আগস্ট প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, চীন-ভারত সম্পর্কের উষ্ণতা কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে যথার্থ এবং এটি বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার বড় পরিবর্তনের প্রতিফলন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “আজকে চীন ও ভারত এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দুটি ইঞ্জিন, গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি এবং এসসিও, ব্রিকস ও জি-২০ এর সদস্য। তাদের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে আরও গণতান্ত্রিক ও ন্যায্য পথে এগিয়ে নেওয়া।”

এই প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, চীন ও ভারত উভয়েই বৈশ্বিক চাপ ও আঞ্চলিক স্বার্থের কারণে সম্পর্ক পুনর্গঠনে আগ্রহী হয়েছে।