রায় ঘোষণার পর গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের শেয়ার ৭ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। একই সময়ে অ্যাপলের শেয়ারও ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি দুই প্রতিষ্ঠানের জন্য তাৎক্ষণিক আর্থিক স্বস্তি হলেও দীর্ঘমেয়াদে গুগলের জন্য নতুন প্রতিযোগিতামূলক ঝুঁকি তৈরি করবে।
মার্কিন জেলা আদালতের বিচারক অমিত মেহতা রায়ে বলেন, ক্রোম এবং অ্যান্ড্রয়েড গুগলের বিজ্ঞাপন আয়ের প্রধান চালিকাশক্তি। পাঁচ বছর ধরে চলা এই মামলায় তিনি আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে গুগল সার্চ ও বিজ্ঞাপন বাজারে অবৈধ একচেটিয়া অবস্থান তৈরি করেছে। তবে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল ইতিমধ্যে গুগলের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে। তাই গুগল যে তথ্য ভাগ করতে বাধ্য হবে, তা ব্যবহার করে এআই কোম্পানিগুলো তাদের সেবা আরও শক্তিশালী করতে পারবে।
তথ্য ভাগের এই বাধ্যবাধকতা নিয়ে গুগল আপত্তি জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে, যা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াতে পারে।
অন্যদিকে অ্যাপলের জন্যও রায়টি ইতিবাচক হয়েছে। প্রতিবছর গুগল থেকে অ্যাপল প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করে থাকে, যা এখন অব্যাহত থাকবে। তবে আদালত স্পষ্ট করেছে, গুগল একচেটিয়া চুক্তি করতে পারবে না, যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী সার্চ অ্যাপ্লিকেশন সহজে ডিভাইসে ইনস্টল করা যায়। ইতোমধ্যে স্যামসাং ও মোটোরোলার মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তিতে বিকল্প সার্চ অপশনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
গুগলের বিরুদ্ধে একচেটিয়া আধিপত্যের অভিযোগ শুধু সার্চে সীমাবদ্ধ নয়। অ্যাপ স্টোর ও বিজ্ঞাপন বাজার নিয়েও চলমান মামলা রয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে গুগলের অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি নিয়ে আরেকটি মামলার শুনানি শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকে বিগ টেক কোম্পানিগুলোর ওপর অ্যান্টিট্রাস্ট চাপ বাড়ছে, যার মধ্যে মেটা, অ্যামাজন ও অ্যাপলও রয়েছে।
সার্বিকভাবে, গুগল-অ্যাপল চুক্তি বহাল থাকলেও তথ্য ভাগ করার শর্ত দীর্ঘমেয়াদে গুগলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে এআই প্রতিযোগিতা বাজারে শক্তিশালী হয়ে উঠছে।