ঢাকার বাজারে সবজির দাম আবারও ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। রাজধানীর প্রায় সব কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ সবজির কেজিপ্রতি দাম ১০০ টাকা কিংবা তারও বেশি। ক্রেতারা বলছেন, প্রতিদিনের বাজার খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে, আর বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই তারা বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
কোন সবজির দাম কত
রাজধানীর মিরপুর, কাঁচাবাজার, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর ও নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়—
- ফুলকপি, বাঁধাকপি: ৯০ থেকে ১০০ টাকা
- টমেটো: ১০০ থেকে ১২০ টাকা
- শসা: ১০০ টাকা
- বেগুন: ৯০ থেকে ১০০ টাকা
- আলু: ৬০ থেকে ৭০ টাকা
- পেঁয়াজ: ৮০ থেকে ৯০ টাকা
- শাকপাতা: এক আঁটি ৩০ থেকে ৪০ টাকা

প্রায় সবজি বিক্রেতার মুখেই এক কথা—“আমরা কম দামে কিনতে পারছি না, তাই কম দামে বিক্রি করারও উপায় নেই।”
ক্রেতাদের হতাশা
গৃহিণী রওশন আরা বললেন,
“প্রতিদিনের বাজারে ৫০০ টাকা নিয়ে গেলেই এখন শুধু সবজি কিনতে গিয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাছ-মাংস তো দূরের কথা।”
একই কথা বললেন রিকশাচালক আমিনুল। তিনি বলেন,
“আমার দৈনিক আয় ৭০০–৮০০ টাকা। এর মধ্যে যদি শুধু সবজি কিনতেই ২০০–৩০০ টাকা চলে যায়, তাহলে পরিবার নিয়ে কীভাবে চলবো?”

বিক্রেতাদের যুক্তি
সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা পরিবহন খরচ ও পাইকারি বাজারের চাপের কথা বলছেন। এক বিক্রেতা জানালেন,
“গ্রাম থেকে সবজি আনতে পরিবহন খরচ বেড়েছে। এছাড়া পাইকারি বাজারেই অনেক সময় ৭০–৮০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। আমাদেরও কিছু লাভ রাখতে হয়।”

বিশেষজ্ঞ মত
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সবজির দাম বাড়ার পেছনে মৌসুমি সংকট, পরিবহন সমস্যা, এবং বাজারে অস্থিরতা—সব মিলিয়ে প্রভাব ফেলছে। তারা মনে করছেন, সরকারের কার্যকর বাজার মনিটরিং ও পরিবহন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়া সাধারণ মানুষের কষ্ট কমবে না।
ঢাকার সাধারণ মানুষ এখন এক প্রকার “সবজি সংকটে” পড়েছেন। মাছ-মাংস তো আগেই অনেকের নাগালের বাইরে চলে গেছে, এখন সবজিও ধীরে ধীরে বিলাসী পণ্যে পরিণত হচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















