বাবুর বাজার দিয়ে বাঁকী বেগে চলে দক্ষিণমুখী বুড়িগঙ্গা হইবে পার। পার হইতে ঝরের মুখে পইরে ছিল যত নৌকা আছারিয়া ঘূর্ণীপাকে কইরে গেছে চুরমার।
ঢাকার টর্নেডো নিয়ে সেই বছরেই প্রকাশিত আরো একটি পথ কবিতার সন্ধান পেয়েছি। এর লেখক বিপিনচাঁদ গোপ। পুস্তিকার নাম কড়ের গান। জগবন্ধু দে, গরিব যন্ত্র থেকে তা ছেপেছিলেন। পৃ. ৬। শূন্য ৬ পয়সা। মুদ্রণ সংখ্যা ১০০০। ১৮৮৮। তিনটি পুথিরও নাম পেয়েছি-আহমদ আলী, জুলমতে ঢাকা, ওয়ারিস শিকদার, তুফানে ঢাকা, মনিরুদ্দীন আহমদ, ঝড়ের পুথি।
১০০ বছর পর ১৯৮৮ তে বাংলাদেশে টর্নেডোর রূপ
ঝড়ের গান (কুশাই সরকার) ঈশ্বরে অপার নিলা বুজা ভার ২ আছে সাধ্য কার। বুজি বাউরূপে এলেন হরি নিবারিতে ধরাভার।
১২৯৪ সনে, চৈত্র মাসের ২৬ দিনে শনিবার সন্ধ্যার পরে খণ্ড প্রলয় হয় সঞ্চয়। পূর্ণ বায়ু এইসে বেগে দুইরে উঠে উর্ধ্ব ভাগে বিপরীত এক শব্দ ডাকে শুইলে লোকের চমৎকার। পশ্চিম হইতে তুফান ছুইটে, হাজারীবাগ দিয়া উঠে, খেরী ঘর আর মেইটে কোঠে কত বেইলেছে অপার। বা জ্ঞানগর বাগলপুরে নবাবগঞ্জ চন্দ্রি বাজারে জত ঘর গিয়াছে পইরে সংখ্যা করা নাজায় তার।
সিকসেন ভেঙে আমলিগোলা, প্রবেশ করে লালবাগের কিল্লা, সিপাই জখম হাওলাদার গুলো মরে একজন। সেখান হইতে তুফান ছুইটে পরে এসে চান্নিঘাটে রমগঞ্জ এক চাপটে। ভেঙে এইল চকবাজার। ভেঙে জেলখানা নরিত কোনা, বেগম বাজার দিচ্ছে হানা, মোগলটুলী কয়েকখানা দোকান ঘর ভেঙে আর।
কুমারটুলী যে অবস্থা কিছু না রেখেছে আস্থা-নাস্থা-খাস্তা তিন অবস্থা সালানকোঠা একাকার। বংশীবাজার সজিব রাখি, বাবুর বাজার দিয়ে বাঁকী বেগে চলে দক্ষিণমুখী বুড়িগঙ্গা হইবে পার। পার হইতে ঝরের মুখে পইরে ছিল যত নৌকা আছারিয়া ঘূর্ণীপাকে কইরে গেছে চুরমার।
যতলোক গিয়াছে মারা, জন্মসূত্রে ছিল ধরা, দগ্ধকার কইরে জিঞ্জিয়া ঢাকা হইল পুনর্ব্বার। এই যে নবাব বাড়ির কীর্তিকাণ্ড কৈরাছে সব লণ্ডভণ্ড আর কৈরাছে খণ্ড।
ভেঙেছে লোহার কাটার।
(চলবে)