সাম্প্রদায়িক কোনো ভাব তাঁর মনে ছিল না। মুসলমান ছেলেদের কাছে আসতে তিনি কোনো দ্বিধা করতেন না।
সরদার ফজলুল করিম ও আনাতোল র্যাপাপোর্ট
২০০৪ সালে প্রফেসর সরদার ফজলুল করিমের সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাত ঘট। আলাপ আলোচনার সময় বললেন। “হ্যাঁ হ্যাঁ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় টাকায় মার্কিন সেনাদের ছাউনি ছিল”। “সেনাদের মধ্যে অসাধারণ এক সৈনিকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়- তাঁর নাম ছিল আনাতোল র্যাপাপোর্ট। সেসময়ে আমি ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। একদিন আনাতোল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এসে হাজির। আমরা কয়েকজন বন্ধু ক্যাম্পাসের ভেতরে ইতঃস্তত ঘুরছিলাম। ব্যাপাপোর্ট সরাসরি আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, তোমাদের বোস-তে খুঁজছি, কোথায় পাবো ওনাকে?”

আনাতোল র্যাপাপোর্ট
উৎস: র্যাপাপোর্টের “Certainties and Doubts” গ্রন্থ থেকে নেয়া।
প্রফেসর করিম আত্মজীবনীতে গল্পটি বলেন এভাবে: “একবার অধ্যাপক র্যাপাপোর্ট এসে আমাদের বললেন, ‘হোয়েরার ইজ ইয়োর বোস?’ বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের নাম তিনি শুনেছেন। কতখানি শুনেছেন আমি জানি না। কিন্তু তিনি এসে অধ্যাপক বোসের খোঁজ করলেন এবং জানালেন যে বোসের সঙ্গে তিনি দেখা করতে চান। আমরা তাঁকে নিয়ে গেলাম অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসুর কাছে।
তিনি তখন বসতেন কার্জন হলের পশ্চিম সাইডের একটা ঘরে। ঘরটা এখনো আছে। সত্যেন বোস রোমান্টিক ক্যারেক্টারের ছিলেন। চেহারাটাই তাঁর রোমান্টিক ছিল। দিন দুনিয়া বোঝেন না তিনি। সাম্প্রদায়িক কোনো ভাব তাঁর মনে ছিল না। মুসলমান ছেলেদের কাছে আসতে তিনি কোনো দ্বিধা করতেন না।
ছেলেরা বলতো, অন্য কেউ কম্যুনাল হতে পারে, সত্যেন বোস কিছুতেই কম্যুনাল হতে পারেন না। কাজী মোতাহার হোসেন লিখেছেন, তাঁর লেখা পড়ে সত্যেন বোস সবাইকে ডেকে বলেছিলেন, ‘দেখো, দেখো, আমার ছেলে এ রকম বাংলা লিখেছে। তোমরা কেউ কি এ রকম বাংলা লিখতে পারো?’ তখন তিনি কলকাতায় খয়রা প্রফেসর।
(চলবে)
নাঈম হক 



















