(ক) বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ-এই শ্রেণি ব্রাহ্মণ প্রায়ই ধনী। জেলার বড় বড় রাজা জমিদার প্রভৃতি এই শ্রেণির ব্রাহ্মণ। তাহিরপুর, পুঠিয়া, নাটোর, বলিহার, চৌগ্রাম, লালোর, কাসিমপুর, পানশীপাড়া, জোয়াড়ী, দারীকুশী, আটগ্রাম, ইসলামগাতি, খাজুরা প্রভৃতি স্থানের রাজা ও জমিদারেরা এই শ্রেণির ব্রাহ্মণ। বর্তমান আয়তন অপেক্ষা পূর্বে এই জেলার আয়তন পাঁচগুণ বেশি ছিল। এইরূপ বৃহৎ জেলা ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে তাহিরপুর, পুঠিয়া, নাটোর প্রভৃতি রাজার হস্তে ছিল। মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবনচরিতে শ্রীযুক্ত গিরিশচন্দ্র লাহিড়ি মহাশয় লিখিয়াছেন যে-“রাজসাহী জেলার বর্তমান আয়তন সঙ্কীর্ণ হইলেও অনেক স্থানে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণগণের পূর্ব পুরুষদিগের বসতি-চিহ্ন, অদ্যাপি লুপ্ত হয় নাই। কুলজ গ্রন্থে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণগণের যে সকল সমাজের উল্লেখ আছে তাহার অধিকাংশ বর্তমান রাজসাহী জেলার সীমা মধ্যে দেখা যায়। তবে দীর্ঘকালে নামের অপভ্রংশ মাত্র হইয়াছে; যথা-মধ্যগ্রাম (মাঝগ্রাম), গুড় নদী (গুড়নই), গুণিগাছা, ভাদুড়ি (ভাতুড়িয়া), মধুগ্রাম (মৌগ্রাম), বালষষ্টিক (বালশাটিয়া), মঠগ্রাম (মঠগাঁ), গঙ্গাগ্রাম (গাঙ্গইল), বিশাখা (বিশা), রাণীহারি (রায়না), কুড়মুড়ি (কুড়মইল বলিহার), শীতলী (শীতলাই), তালড়ি (তানোর), দেবলী (দেউলা), নিদ্রালী (নিন্দাইল), কালিগ্রাম (কালিগ্রা), খর্জুরী (খাজুরিয়া), পঞ্চবটি (পাঁচবাড়িয়া), চম্পটি (চামটা), বোড়গ্রাম (বড়াইগাঁ), করঞ্জ (করঞ্জা), বোথড়ি (বোথড়) ইত্যাদি নাম ও সমাজের চিহ্ন দেখা যায়।” সুষেণাদির পুত্রগণ বরেন্দ্রভূমিতে একশত গ্রাম (গাঁই) প্রাপ্ত হইয়া বাস করেন। ইহারাই বারেন্দ্র শ্রেণি ব্রাহ্মণ বলিয়া পরিচিত। এই বারেন্দ্র ব্রাহ্মহ্মণগণ প্রধানত তিন শাখায় বিভক্ত, যথা-(১) কুলীন, (২) সিদ্ধ শ্রোত্রিয়, (৩) কষ্ট শ্রোয়িত্র। কোন্ শাখায় কত গাঁই তাহার তালিকা নিম্নে দেওয়া গেল: