বাংলাদেশে দুর্গাপূজা কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, বরং একটি সামাজিক উৎসব। প্রতিবারের মতো এবারও পূজার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন—“এবার দুর্গাপূজা নিয়ে মদ-গাঁজার আসর বসানো যাবে না।”
এই মন্তব্যকে নাগরিক সমাজ বলছে—এটি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসবকে ছোট করে দেখা নয়, বরং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি।
কেন ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ
বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্গোৎসবের মূল বার্তাই হলো অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভের জয়। এখানে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। অথচ মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এ উৎসবকে যুক্ত করা বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে সাহস জোগায়।
এ ছাড়া অতীতে বহুবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূজা, মন্দির ও ধর্মীয় স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরও এ ধরণের আক্রমণ থামেনি। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন উপদেষ্টার মন্তব্য আরও অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে বলে মনে করেন নাগরিকরা।
নাগরিক সমাজের পাঁচ দফা
১. উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
২. ভবিষ্যতে কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি যেন ধর্মীয় উৎসব নিয়ে অপমানজনক বা উস্কানিমূলক বক্তব্য না দিতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. আসন্ন দুর্গাপূজার সর্বজনীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সব ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে।
৫. বহুত্ববাদী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথে বিভাজনমূলক বক্তব্য পরিহার করতে হবে।
কারা দিলেন বিবৃতি
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন: আনু মোহাম্মদ, সুলতানা কামাল, ড. ইফতেখারুজ্জামান, অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, শামসুল হুদা, পাভেল পার্থ, সুব্রত চৌধুরী, এড. তবারক হোসেন, ড. সুমাইয়া খায়ের, তাসনীম সিরাজ মাহমুব, ড. জোবাইদা নাসরীন, রোবায়েত ফেরদৌস, ড. ফিরদৌস আজীম, জাকির হোসেন, রেজাউল করিম চৌধুরী, জবা তালুকদার, রোজীনা বেগম, মাইদুল ইসলাম, আমিরুল রসুল, সাঈদ আহমেদ, হানা শামস আহমেদ ও সৈকত শুভ্র আইচ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















