০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ন্যাটোর প্রথম সরাসরি পদক্ষেপ: পোল্যান্ডে রুশ ড্রোন হামলা প্রতিহত

ঐতিহাসিক মুহূর্তে ন্যাটো

মঙ্গলবার রাতের শেষ প্রহরে ন্যাটোর সেন্সরগুলো পোল্যান্ডের পূর্ব সীমান্তে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ শনাক্ত করে। ইউক্রেন ও বেলারুশ দিক থেকে প্রবেশ করা এসব ড্রোনের বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধবিমান প্রস্তুত ছিল।
ইতিহাসে এটাই প্রথমবার, ন্যাটোর যুদ্ধবিমান সরাসরি রুশ অস্ত্র ভূপাতিত করেছে কোনো জোটভুক্ত দেশের আকাশে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক একে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঝুঁকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অপারেশন ইস্টার্ন অরোরা

ঘটনার আগে মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে পোল্যান্ড ‘অপারেশন ইস্টার্ন অরোরা’ সক্রিয় করে। এ ব্যবস্থায় রুশ আগ্রাসনের ইঙ্গিত মিললে দ্রুত ন্যাটো মিত্রদের জেট ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়।
এই সতর্কতার অংশ হিসেবে নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডের মার্কিন তৈরি যুদ্ধবিমান, ইতালির ‘আওয়াকস’ নজরদারি বিমান এবং জার্মানির প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়। ফ্রান্সও দুটি রাফাল জেট প্রস্তুত রাখে, যদিও সেগুলোর প্রয়োজন হয়নি।

ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা ও ন্যাটোর সতর্কতা

ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া একযোগে ৪৫৮টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার মধ্যে ৪১৩টি ভূপাতিত করা হয়। এর প্রভাব পোল্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছায়, ফলে ন্যাটো তৎক্ষণাৎ উচ্চ সতর্কাবস্থায় যায়।
রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর এফ-১৬, এফ-৩৫ এবং বিভিন্ন হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছিল। ডাচ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবার প্রথমবার অস্ত্র ব্যবহার করে।

নেতৃত্বের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

প্রথম ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশে প্রবেশের পরপরই দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সতর্ক করা হয়। প্রেসিডেন্ট কারোল নাভিস্কি ভোর ৩টায় ঘুম থেকে উঠে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে ও অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফেরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে পোলিশ কর্মকর্তারা জানান।

রুশ সামরিক মহড়া ও নতুন হুমকি

ঘটনার সপ্তাহেই রাশিয়া তাদের কৌশলগত মহড়া ‘জাপাদ ২০২৫’ শুরুর পরিকল্পনা করেছে। এই কারণে ন্যাটো সীমান্ত পর্যবেক্ষণ আরও জোরদার করে।
বিশেষ উদ্বেগের বিষয় ছিল—ড্রোন শুধু ইউক্রেন নয়, বেলারুশ থেকেও প্রবেশ করেছে। বেলারুশ দাবি করেছে, ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের কারণে ড্রোন তাদের আকাশে ঢুকে পড়ে এবং কিছু তারা ভূপাতিত করে। পরে তারা পোল্যান্ডকে সতর্ক করে দেয়।

ধ্বংসাবশেষ ও বিশ্লেষণ

পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ ‘গারবেরা’ ধরনের ড্রোন বলে শনাক্ত হয়েছে। এগুলোতে ক্যামেরা বসানো সম্ভব, যা নজরদারি কাজে ব্যবহার হয়। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া হয়তো ন্যাটোর প্রতিক্রিয়ার গতি ও দক্ষতা পরীক্ষা করছিল।

রাতভর অভিযান

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অন্তত ১৯টি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডে প্রবেশ করে। প্রধানমন্ত্রী টাস্ক বলেন, পুরো রাত জুড়ে এই অভিযান চলেছে, যা এর ব্যাপকতা প্রমাণ করে।

ন্যাটোর প্রথম সরাসরি পদক্ষেপ: পোল্যান্ডে রুশ ড্রোন হামলা প্রতিহত

০৬:৪৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঐতিহাসিক মুহূর্তে ন্যাটো

মঙ্গলবার রাতের শেষ প্রহরে ন্যাটোর সেন্সরগুলো পোল্যান্ডের পূর্ব সীমান্তে রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ শনাক্ত করে। ইউক্রেন ও বেলারুশ দিক থেকে প্রবেশ করা এসব ড্রোনের বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধবিমান প্রস্তুত ছিল।
ইতিহাসে এটাই প্রথমবার, ন্যাটোর যুদ্ধবিমান সরাসরি রুশ অস্ত্র ভূপাতিত করেছে কোনো জোটভুক্ত দেশের আকাশে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক একে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঝুঁকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অপারেশন ইস্টার্ন অরোরা

ঘটনার আগে মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে পোল্যান্ড ‘অপারেশন ইস্টার্ন অরোরা’ সক্রিয় করে। এ ব্যবস্থায় রুশ আগ্রাসনের ইঙ্গিত মিললে দ্রুত ন্যাটো মিত্রদের জেট ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়।
এই সতর্কতার অংশ হিসেবে নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডের মার্কিন তৈরি যুদ্ধবিমান, ইতালির ‘আওয়াকস’ নজরদারি বিমান এবং জার্মানির প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়। ফ্রান্সও দুটি রাফাল জেট প্রস্তুত রাখে, যদিও সেগুলোর প্রয়োজন হয়নি।

ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা ও ন্যাটোর সতর্কতা

ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া একযোগে ৪৫৮টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার মধ্যে ৪১৩টি ভূপাতিত করা হয়। এর প্রভাব পোল্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছায়, ফলে ন্যাটো তৎক্ষণাৎ উচ্চ সতর্কাবস্থায় যায়।
রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর এফ-১৬, এফ-৩৫ এবং বিভিন্ন হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছিল। ডাচ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবার প্রথমবার অস্ত্র ব্যবহার করে।

নেতৃত্বের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

প্রথম ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশে প্রবেশের পরপরই দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সতর্ক করা হয়। প্রেসিডেন্ট কারোল নাভিস্কি ভোর ৩টায় ঘুম থেকে উঠে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে ও অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফেরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বলে পোলিশ কর্মকর্তারা জানান।

রুশ সামরিক মহড়া ও নতুন হুমকি

ঘটনার সপ্তাহেই রাশিয়া তাদের কৌশলগত মহড়া ‘জাপাদ ২০২৫’ শুরুর পরিকল্পনা করেছে। এই কারণে ন্যাটো সীমান্ত পর্যবেক্ষণ আরও জোরদার করে।
বিশেষ উদ্বেগের বিষয় ছিল—ড্রোন শুধু ইউক্রেন নয়, বেলারুশ থেকেও প্রবেশ করেছে। বেলারুশ দাবি করেছে, ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের কারণে ড্রোন তাদের আকাশে ঢুকে পড়ে এবং কিছু তারা ভূপাতিত করে। পরে তারা পোল্যান্ডকে সতর্ক করে দেয়।

ধ্বংসাবশেষ ও বিশ্লেষণ

পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ ‘গারবেরা’ ধরনের ড্রোন বলে শনাক্ত হয়েছে। এগুলোতে ক্যামেরা বসানো সম্ভব, যা নজরদারি কাজে ব্যবহার হয়। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া হয়তো ন্যাটোর প্রতিক্রিয়ার গতি ও দক্ষতা পরীক্ষা করছিল।

রাতভর অভিযান

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অন্তত ১৯টি রুশ ড্রোন পোল্যান্ডে প্রবেশ করে। প্রধানমন্ত্রী টাস্ক বলেন, পুরো রাত জুড়ে এই অভিযান চলেছে, যা এর ব্যাপকতা প্রমাণ করে।