০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এইচ-১বি ভিসায় অস্থিরতা: চীনের নতুন ‘কে ভিসা’ হতে পারে বিকল্প

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় উচ্চ ফি চালুর কারণে দক্ষিণ এশীয় পেশাজীবীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই সময়ে চীন চালু করল নতুন ‘কে ভিসা’, যা তরুণ ও দক্ষ STEM খাতের প্রতিভাদের জন্য সস্তা ও নমনীয় সুযোগ এনে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

চীনের নতুন কে ভিসা’ ঘোষণা

চীন সম্প্রতি ‘কে ভিসা’ চালু করেছে। এর লক্ষ্য হলো সারা বিশ্বের তরুণ ও দক্ষ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) খাতের পেশাজীবীদের আকৃষ্ট করা। আগস্টে অনুমোদনের পর এটি কার্যকর হবে ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে।
নতুন নিয়মে বিদেশিদের প্রবেশ ও প্রস্থান সংক্রান্ত বিধানে পরিবর্তন আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসার বাস্তব বিকল্প হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এখন এই ভিসার জন্য ১ লাখ ডলারের ফি নির্ধারণ করেছে, যা বিশেষ করে ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন

চীনের বিচার মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, আবেদন করতে পারবেন—

  • বিদেশি তরুণ যারা চীন বা বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে STEM বিষয়ে স্নাতক বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
  • তরুণ পেশাজীবী যারা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা বা গবেষণার কাজে নিয়োজিত।

আবেদনকারীদের বয়স, শিক্ষা ও কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত শর্ত পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি যোগ্যতার প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।

কে ভিসার বৈশিষ্ট্য

চীনের ১২টি প্রচলিত ভিসার তুলনায় কে ভিসা দিচ্ছে বিশেষ কিছু সুবিধা—

  • একাধিকবার প্রবেশের সুযোগ, দীর্ঘমেয়াদি বৈধতা ও বাড়তি থাকার সুবিধা।
  • স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের দরকার নেই।
  • শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, উদ্যোক্তা কার্যক্রম ও ব্যবসায়িক বিনিময়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বয়স, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ করলেই হবে; কোনো প্রাতিষ্ঠানিক আমন্ত্রণ প্রয়োজন নেই।

বৃহত্তর সংস্কারের অংশ

কে ভিসা চীনের আন্তর্জাতিক বিনিময়কে আরও উন্মুক্ত করার কৌশলের অংশ। সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • প্রবেশ নিয়ম শিথিল করা।
  • ৫৫ দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য ২৪০ ঘণ্টার ভিসামুক্ত ট্রানজিট সুবিধা।
  • ৭৫টি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক ভিসামুক্ত চুক্তি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি চীনে আসা-যাওয়া করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৩০.২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ভিসামুক্ত প্রবেশ করেছেন ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষ, যা ৫৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।

দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্ব

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ফি নীতির কারণে ভারতীয় ও দক্ষিণ এশীয় পেশাজীবীরা বিকল্প কর্মজীবনের সুযোগ খুঁজছেন। চীনের কে ভিসা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী ও নমনীয় বিধায় দক্ষিণ এশীয় STEM প্রতিভাদের কাছে এটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ

২০১৩ সালে চালু হওয়া ‘আর ভিসা’র পর এবার ‘কে ভিসা’ তরুণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পেশাজীবীদের লক্ষ্য করছে। এর মাধ্যমে ভিসাধারীরা নমনীয়ভাবে কাজের সুযোগ পাবেন এবং বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এগিয়ে নেবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন পরামর্শদাতাদের এখন থেকেই নীতি নির্ধারণে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

বয়সসীমা, নির্দিষ্ট STEM ক্ষেত্র ও ভিসার মেয়াদ সম্পর্কে বিস্তারিত এখনও জানানো হয়নি। তবে কেপিএমজে পরামর্শ দিয়েছে—

  • চীনা দূতাবাস ও কনস্যুলেটের নির্দেশনা নিয়মিত অনুসরণ করতে।
  • শিক্ষাগত সনদ, গবেষণার প্রমাণ ও কর্মসংস্থানের কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে।
  • অভিবাসন পরামর্শকের সহায়তায় নিয়ম মেনে চলতে।

আগ্রহীরা চাইলে নিজেদের অভিবাসন পরামর্শক বা কেপিএমজির চায়না টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

এইচ-১বি ভিসায় অস্থিরতা: চীনের নতুন ‘কে ভিসা’ হতে পারে বিকল্প

১২:০৭:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসায় উচ্চ ফি চালুর কারণে দক্ষিণ এশীয় পেশাজীবীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই সময়ে চীন চালু করল নতুন ‘কে ভিসা’, যা তরুণ ও দক্ষ STEM খাতের প্রতিভাদের জন্য সস্তা ও নমনীয় সুযোগ এনে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

চীনের নতুন কে ভিসা’ ঘোষণা

চীন সম্প্রতি ‘কে ভিসা’ চালু করেছে। এর লক্ষ্য হলো সারা বিশ্বের তরুণ ও দক্ষ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (STEM) খাতের পেশাজীবীদের আকৃষ্ট করা। আগস্টে অনুমোদনের পর এটি কার্যকর হবে ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে।
নতুন নিয়মে বিদেশিদের প্রবেশ ও প্রস্থান সংক্রান্ত বিধানে পরিবর্তন আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসার বাস্তব বিকল্প হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এখন এই ভিসার জন্য ১ লাখ ডলারের ফি নির্ধারণ করেছে, যা বিশেষ করে ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

কারা আবেদন করতে পারবেন

চীনের বিচার মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, আবেদন করতে পারবেন—

  • বিদেশি তরুণ যারা চীন বা বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে STEM বিষয়ে স্নাতক বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
  • তরুণ পেশাজীবী যারা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা বা গবেষণার কাজে নিয়োজিত।

আবেদনকারীদের বয়স, শিক্ষা ও কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত শর্ত পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি যোগ্যতার প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।

কে ভিসার বৈশিষ্ট্য

চীনের ১২টি প্রচলিত ভিসার তুলনায় কে ভিসা দিচ্ছে বিশেষ কিছু সুবিধা—

  • একাধিকবার প্রবেশের সুযোগ, দীর্ঘমেয়াদি বৈধতা ও বাড়তি থাকার সুবিধা।
  • স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের দরকার নেই।
  • শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, উদ্যোক্তা কার্যক্রম ও ব্যবসায়িক বিনিময়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বয়স, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ করলেই হবে; কোনো প্রাতিষ্ঠানিক আমন্ত্রণ প্রয়োজন নেই।

বৃহত্তর সংস্কারের অংশ

কে ভিসা চীনের আন্তর্জাতিক বিনিময়কে আরও উন্মুক্ত করার কৌশলের অংশ। সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • প্রবেশ নিয়ম শিথিল করা।
  • ৫৫ দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য ২৪০ ঘণ্টার ভিসামুক্ত ট্রানজিট সুবিধা।
  • ৭৫টি দেশের সঙ্গে পারস্পরিক ভিসামুক্ত চুক্তি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি চীনে আসা-যাওয়া করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৩০.২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ভিসামুক্ত প্রবেশ করেছেন ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষ, যা ৫৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।

দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্ব

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ফি নীতির কারণে ভারতীয় ও দক্ষিণ এশীয় পেশাজীবীরা বিকল্প কর্মজীবনের সুযোগ খুঁজছেন। চীনের কে ভিসা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী ও নমনীয় বিধায় দক্ষিণ এশীয় STEM প্রতিভাদের কাছে এটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ

২০১৩ সালে চালু হওয়া ‘আর ভিসা’র পর এবার ‘কে ভিসা’ তরুণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পেশাজীবীদের লক্ষ্য করছে। এর মাধ্যমে ভিসাধারীরা নমনীয়ভাবে কাজের সুযোগ পাবেন এবং বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এগিয়ে নেবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন পরামর্শদাতাদের এখন থেকেই নীতি নির্ধারণে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

বয়সসীমা, নির্দিষ্ট STEM ক্ষেত্র ও ভিসার মেয়াদ সম্পর্কে বিস্তারিত এখনও জানানো হয়নি। তবে কেপিএমজে পরামর্শ দিয়েছে—

  • চীনা দূতাবাস ও কনস্যুলেটের নির্দেশনা নিয়মিত অনুসরণ করতে।
  • শিক্ষাগত সনদ, গবেষণার প্রমাণ ও কর্মসংস্থানের কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে।
  • অভিবাসন পরামর্শকের সহায়তায় নিয়ম মেনে চলতে।

আগ্রহীরা চাইলে নিজেদের অভিবাসন পরামর্শক বা কেপিএমজির চায়না টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।