তারপর সম্মেলনের প্রতিনিধিরা সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রস্তাব করলে তিনিই তিনদিন সভাপতিত্ব করেন।
ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ
ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ কয়েকবার এসেছেন যা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। প্রাসঙ্গিক প্রথমবার তাঁর ঢাকায় আগমন। গোপাল চন্দ্র রায় রবীন্দ্রনাথ যে ক’বার ঢাকায় এসেছেন তা নিয়ে একটি গ্রন্থ লিখেছেন ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ নামে।’ এ প্রসঙ্গে যারা লিখেছেন তাঁদের ভুল তথ্য বর্জন করে সুনির্দিষ্ট তথ্য যাচাইবাছাই করে তিনি গ্রন্থটি লিখেছেন। তা সত্ত্বেও দেখি তাঁর দেওয়া তথ্যের সঙ্গে অনেক তথ্য মেলে না। আমাদের তথ্যের আকর ঢাকা থেকে প্রকাশিত ঢাকা প্রকাশ স্থানীয় বিধায় এ পত্রিকার সংবাদই সঠিক।
১৯২৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৮৯৮ সালের ৩০, ৩১ মে ও ১ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল কংগ্রেসের দশম প্রাদেশিক সম্মেলন। তখনও প্রদেশ কংগ্রেসগুলি গড়ে ওঠেনি। কংগ্রেস সমর্থকরা প্রাদেশিক সম্মেলন নাম দিয়ে অনুষ্ঠানগুলি করতেন। রবীন্দ্রনাথ এর আগেও প্রাদেশিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর যোগদানের একটি বৈশিষ্ট্য হলো তিনি এবং শচীন্দ্রনাথ সেন নাটোর এবং ঢাকায় বাংলা প্রচলনের চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু, তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা তা পছন্দ করেননি। ঢাকায় অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি প্রথমে সভাপতির আসন গ্রহণ করেন। তারপর সম্মেলনের প্রতিনিধিরা সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রস্তাব করলে তিনিই তিনদিন সভাপতিত্ব করেন।
এই সম্মেলন নিয়ে অক্ষয়কুমার মৈত্রে ভারতীতে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন যাতে তিনি লিখেছিলেন, কলকাতা থেকে আগত মান্যগণ্যদের প্রবলভাবে নারায়ণগঞ্জে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। ঢাকা প্রকাশ উল্লেখ করছে “বৈদেশিক যে সকল ভদ্রলোক ঢাকা নামে এবং সংবাদপত্রে বিপুল আয়োজনের আশা পাইয়া আসিয়াছিলেন, তাঁহারা যথোচিত সুখী হইতে পারেন নাই বলিয়া আমরা দুঃখিত হইলাম।…
কলিকাতা হইতে সর্বাপেক্ষা সম্মানাস্পদ বাবু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাবু কালীচরণ ব্যানার্জি ও বাবু সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি প্রভৃতি ১২/১৪টি ভদ্রলোক আসিয়াছিলেন।” বিপিন পালও এসেছিলেন।
(চলবে)
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-৯০)