আডাম সাহেব গবর্ণমেন্টে রিপোর্ট দিবার সমসাময়িককালে অর্থাৎ ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন তারিখে বোয়ালিয়ায় একটি জেলা স্কুল স্থাপিত হইল এবং বাবু সারদাপ্রসাদ বসু মহাশয় তাহার হেডমাস্টার নিযুক্ত হইলেন। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগে এই স্কুলে মোট ১৭১ জন ছাত্র ছিল, তন্মধ্যে ১৬৪ জন হিন্দু, ৫ জন খ্রিস্টান এবং ২ জন মুসলমান। এই জেলা স্কুল হইতে কলিকাতার ছোট আদালতের জজ বাবু কুঞ্জলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বাবু শিবপ্রসাদ সান্যাল, কলিকাতা হাইকোর্টের প্রসিদ্ধ উকিল বাবু মোহিনীমোহন রায় এবং কিশোরীমোহন রায় প্রভৃতি শিক্ষিত হইয়া নিজ নিজ নাম ও যশ বিস্তার করেন। ইহার কিছুদিন পর অর্থাৎ ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে দরিদ্র বালকদের শিক্ষার জন্য রায়লোকনাথ মৈত্র বাহাদুর ২২ অবৈতনিক একটি ইংরেজি বাংলা স্কুল স্থাপিত করেন। এই বিদ্যালয় আজ পর্যন্ত জীবিত থাকিয়া ভূরি ভূরি দরিদ্র বালকদের শিক্ষাপ্রদান করিতেছে। এ একটি অক্ষয় কীর্তি। এরূপ নিঃস্বার্থভাবে কীর্তি স্থাপনই দেশের মঙ্গল। ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে নাটোর মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিজ নাটোরে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপিত করেন এবং ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে সেই বিদ্যালয় “দিঘাপতিয়া প্রসন্ননাথ একাডেমীর” সহিত সংযোজিত করেন। আজও সেই বিদ্যালয় জীবিত থাকিয়া ‘প্রসন্ননাথ উচ্চশ্রেণি ইংরেজি স্কুল’ নামে পরিচিত; এবং এই বিদ্যালয় হইতে শত সহস্র বালক প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ, এ, বি, এ; এম, এ, বি, এল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতেছে। মফস্বলে রাজা প্রসন্ননাথই প্রথমে উচ্চশিক্ষার এবং রায় লোকনাথ মৈত্র বাহাদুরই প্রথমে মধ্যশ্রেণি ইংরেজি শিক্ষার বীজ রোপণ করেন। যে সময়ে রায় লোকনাথ মৈত্র বাহাদুর মধ্যশ্রেণি ইংরেজি স্কুল স্থাপিত করেন, সেই সময়ে গবর্ণর জেনেরল লর্ড হার্ডিঞ্জ স্থানে স্থানে একশত একটি বঙ্গবিদ্যালয় স্থাপিত করিয়া বঙ্গভাষার শিক্ষা বিষয়ে বিশেষ উৎসাহ প্রদান করেন। সেই বঙ্গ বিদ্যালয়গুলি ‘হার্ডিঞ্জ স্কুল’ নামে পরিচিত হইল। যে সময়ে এরূপ জনরব যে শিক্ষা বিস্তার জন্য জমিদারগণ গবর্ণমেন্টকে বিশেষ সাহায্য করিতেছেন না, সে সময়ে রাজা প্রসন্ননাথ রায় বাহাদুর এবং রায় লোকনাথ মৈত্র বাহাদুর সেই জনরব অমূলক করিয়া, রাজসাহীতে শিক্ষা বিস্তারের অগ্রদূত হইয়াছিলেন। এইরূপ কার্য গবর্ণমেন্টের অবগতিতেও রাজসাহীর ভাগ্যে “হার্ডিঞ্জ স্কুল” প্রাপ্তি ঘটিল না বটে, কিন্তু রাজসাহীতে বড় বড় রাজা জমিদারগণের বাসস্থান বলিয়া শিক্ষা বিস্তারের ব্যাঘাত হইল না। রাজা প্রসন্ননাথ রায় বাহাদুরের “প্রসন্ননাথ একাডেমী” প্রতিষ্ঠার সময় নাটোরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সভার সভাপতি হইয়া আহুত রাজা জমিদারগণকে উল্লেখ করিয়া যে বক্তৃতা দেন তাহাতে তিনি বলেন, “দেশের মঙ্গলজন্য সকলেই শিক্ষা বিস্তার করা কর্তব্য কর্ম এবং কেবল শিক্ষা দ্বারাই মানবের সুখ সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাইবে।”২৩ এই বাক্যে রাজসাহীর রাজা জমিদারগণ উৎসাহিত হইয়া গবর্ণমেন্ট হইতে আর্থিক সাহায্যের উপর নির্ভর না করিয়া নিজ নিজ প্রজাগণের উপকার জন্য শিক্ষা বিস্তারে মনোনিবেশ করিলেন।
লর্ড হার্ডিঞ্জের পর লর্ড ডালহাউসি গবর্ণর জেনেরলের পদে নিযুক্ত হইয়া ভারতবর্ষে আগমন করেন। তাহার ভারতবর্ষে আগমনের পর হইতেই পুরুষ ও স্ত্রীলোকদের শিক্ষা এবং দেশীয় ভাষায় প্রজাপুঞ্জকে শিক্ষা দিবার জন্য তিনি যত্নবান হইলেন। “এইরূপে গবর্ণর জেনেরল এ-দেশীয় লোকের বিদ্যা শিক্ষার্থ নানা উদ্যোগ করিতেছেন, এমন সময়ে ১৮৫৪ অব্দের জুলাই মাসে তদানীন্তন অনুশাসনী সভার অধিপতি মহোদয় স্যর চার্লস উডের নিকট হইতে একখানি পত্রিকা প্রাপ্ত হইলেন। এই সুপ্রসিদ্ধ লিপিখানি যে ভারতবর্ষীয় লোকের পক্ষে বিদ্যা শিক্ষার সনন্দপত্র বলিয়া বর্ণিত হইয়া থাকে, তাহা যথার্থ। এই পত্রে ইহা উপদিষ্ট আছে যে, প্রত্যেক প্রেসিডেন্সিতে এক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবে এবং দেশস্থ সমুদায় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হইয়া, নানাবিধ পরীক্ষার্থ ছাত্রদিগকে শিক্ষা দান করিবে। ছাত্রদিগের বিদ্যার পুরস্কার দিবার ও কৃতিত্বের তারতম্য অবধারণ করিবার নিমিত্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বি,এ, এবং এম, এ, বি, এল এবং ডি, এল; এম, বি এবং এম, ডি প্রভৃতি উপাধি প্রদান করিবেন। উক্ত পত্রিকায় ইহা আরও নির্দিষ্ট আছে যে, সাধারণের শিক্ষা বিধানার্থ সরকার হইতে অর্থ সাহায্য বিতরণ করিবার প্রথা প্রবর্তিত হইবে। সাহায্য দান প্রণালী দুইটি মহৎ উদ্দেশ্য সাধন করিতেছে। ইহা দ্বারা অপর সাধারণের মধ্যে অনেক পরিমাণে জ্ঞান জ্যোতি বিকীর্ণ করিবার সোপান হইয়াছে এবং স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া কিরূপে একটি মহৎকার্য সম্পন্ন করিতে হয়, তদ্বিষয়ে এ দেশীয় লোক ক্রমশ শিক্ষা পাইতেছেন। গত ত্রিশ বৎসরের মধ্যে বঙ্গদেশের যাদৃশী শ্রীবৃদ্ধি হইয়াছে, কোন পরাধীন রাজ্যে কখন এত অল্পকালের মধ্যে সেরূপ উন্নতি দৃষ্ট হয় নাই। ইউরোপীয় বিদ্যাশিক্ষা যে এই অদৃষ্টপূর্ব অভ্যুদয়ের প্রধান কারণ, তাতে সন্দেহ হইতে পারে না।”২৪ এইরূপ সাহায্য দান প্রণালী রাজসাহীর শিক্ষা বিস্তারের বেগ অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি হইয়া রাজা জমিদারগণ ও সাধারণ লোক সমূহকে আরও উৎসাহিত করিল। এই প্রণালীতে কেবল যে রাজসাহীর রাজা জমিদার প্রভৃতি উৎসাহিত হইয়াছিল এমত নহে, সমগ্র বঙ্গদেশেই রাজা জমিদার প্রভৃতি উৎসাহিত হইয়া শিক্ষাবিস্তারের জন্য যত্নবান হন। ১৮৫৫ এবং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে সাহায্য দান প্রণালী কার্যে পরিণত হয়। সে সময়ে সমগ্র বাংলা দেশে ১৪৫ বিদ্যালয় এবং তাহাতে ১৩,২২৯ ছাত্র শিক্ষাপ্রাপ্ত হইত। কিন্তু সাহায্যদান প্রণালী প্রচলিত হইবার পর ১৮৬৬-৬৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৫ হইতে ২,৯০৭ এবং ছাত্র সংখ্যা ১৩,২২৯ হইতে ১২১১০৮ বৃদ্ধি হয়। কিন্তু রাজসাহীতে নিম্নশ্রেণির স্কুল ৬২ এবং তাহাতে ১৯৮৪ জন ছাত্র শিক্ষাপ্রাপ্ত হইতেছিল। ইতিপূর্বে জমিদারগণের উপর যে গুরুতর দোষ অর্পিত হইয়াছিল, তাহা অনেক পরিমাণে এ সময় খণ্ডন হইল। সাহায্য-দান প্রণালী প্রচলিত হইবার পর বাবু মথুরানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নামক একজন ডেপুটি কালেক্টর রাজসাহীতে অনেকদিন ছিলেন। তিনি রাজসাহী জেলা স্কুল কমিটির সম্পাদক ছিলেন এবং তাহার সরল ও অমায়িক স্বভাবগুণে জেলার রাজা জমিদারগণ তাহাকে বিশেষ শ্রদ্ধা ও ভক্তি করিতেন। রাজসাহীর রাজা ও জমিদারগণের শিক্ষা বিস্তারের পরামর্শদাতা মথুরবাবুই ছিলেন। তাহাকে জিজ্ঞাসা না করিয়া কোন রাজা, জমিদার নূতন স্কুল স্থাপনে অগ্রসর হইতেন না। সুতরাং রাজসাহীর অনেক ইংরেজি ও বাংলা স্কুল অদ্যাপি মথুরবাবুর যত্নের সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। এই সাহায্যদান প্রণালীতে উচ্চ এবং মধ্যশ্রেণি প্রজাপুঞ্জকে শিক্ষা প্রদান করিবার যথেষ্ট সুবিধা হয়, কিন্তু এই প্রণালীতে নিম্নশ্রেণি প্রজাপুঞ্জকে শিক্ষাপ্রদানের কোন বিশেষ সুবিধা হইল না।
বাংলার প্রথম লেপ্টনান্ট গবর্ণর স্যর ফ্রেডরিক হ্যালিডের পর স্যর জন পিটর গ্রান্ট ১৮৫৯
খ্রিস্টাব্দে বাংলার ছোটলাট হইলেন। এই গ্রান্ট সাহেবই প্রজাগণকে নীলকর সাহেবদের অত্যাচার হইতে রক্ষা করিয়া পাঠশালা সমূহে সাহায্যদান করেন এবং বাংলায় নিম্নশিক্ষা বিস্তারের পথ প্রদর্শন করেন। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে সার সিসিল বিডন সাহেব লেপ্টনান্ট গবর্ণর হন। তিনি মাননীয় বাবু ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের সাহায্যে নিম্নশিক্ষা বিস্তারের পথ প্রশস্ত করেন। এই প্রণালীতে কলিকাতার নিকটবর্তী প্রেসিডেন্সি, বর্ধমান বিভাগ প্রভৃতিতেই নিম্নশিক্ষার সুবিধা হইল। এসময়ও রাজসাহীর নিম্নশ্রেণির প্রজাপুঞ্জের ভাগ্য প্রসন্ন হইল না। রাজসাহীর দক্ষিণ ভাগে পদ্মানদীর অপর পারে কলিকাতা, যশোহর, বর্ধমান প্রভৃতি স্থান লইয়া নিম্নশিক্ষা বিস্তারের জন্য বাবু ভূদেব মুখোপাধ্যায় পাঠশালা সমূহের ইনস্পেক্টর নিযুক্ত হইয়া বর্ধমান, নদীয়া, যশোহর, মেদিনীপুর প্রভৃতি স্থানে গুরুমহাশয় প্রস্তুত করিবার জন্য ট্রেনিং স্কুল স্থাপিত করেন। সেই শিক্ষিত শুরুমহাশয়েরা গ্রামে গ্রামে পাঠশালা স্থাপন করিতে লাগিলেন। সেই ভূদেববাবুর অধীনে কেবল পাঠশালা পরিদর্শন জন্য স্বতন্ত্র ডেপুটি ইনস্পেক্টর নিযুক্ত হইল। এই প্রণালী অনুসারে পদ্মানদীর উত্তরভাগে রাজসাহী প্রদেশে নিম্নশিক্ষা বিস্তার জন্য ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাবু কাশীনাথ মুখোপাধ্যায় পাঠশালসমূহের ইনস্পেক্টর নিযুক্ত হইলেন। ঐ সালের ২৫ আগস্ট তারিখে তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়া গবর্ণমেন্টের আদেশমত ভূদেব পাঠশালা প্রণালী শিক্ষার জন্য তাহার বিভাগে যান। ২৭ সেপ্টেম্বর প্রত্যাগমন করিয়া নিজ বিভাগে কার্যক্ষেত্রে প্রবৃত্ত হন। রাজসাহীতেই তাহার সদর আফিস হয়। গবর্ণমেন্ট আদেশমত রাজসাহী, দিনাজপুর ও রপুর এই তিন জেলায় “ভূদেব পাঠশালা” স্থাপিত করিতে তিনি আরম্ভ করিলেন। এই সময় হইতে রাজসাহীর নিম্নশ্রেণিস্থ প্রজাপুঞ্জের ভাগ্য প্রসন্ন হইল। কাশীবাবু “ভূদেব পাঠাশালা” প্রণালীতে বালক বালিকা উভয়দের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের ভারপ্রাপ্ত হন। বালক পাঠশালার শিক্ষক প্রস্তুত জন্য ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ নভেম্বর তারিখে রাজসাহী ট্রেনিং স্কুল স্থাপিত হইল। আবার বালিকা পাঠশালার শিক্ষয়ত্রী প্রস্তুত জন্য গবর্ণমেন্টের এবং নাটোরের ছোট তরফের রাজা চন্দ্রনাথ রায় বাহাদুরের সাহায্যে “ফিমেল নর্মাল স্কুল” নামে একটি ট্রেনিং স্কুল ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে স্থাপিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে “ফিমেল নর্মাল স্কুল” দীর্ঘকাল স্থায়ী হইল না। আবার গুরুমহাশয় প্রস্তুত জন্য যে ট্রেনিং স্কুল স্থাপিত হয় তাহা পশ্চাৎ স্কুলের পণ্ডিত প্রস্তুত জন্য পরিবর্তিত হইয়া প্রথম শ্রেণি নর্মাল স্কুল নাম হয়। রাজসাহীতে অনাবশ্যক বিধায় এই বিদ্যালয়টি অবশেষে রপুরে উঠিয়া যায়। এই প্রকারে কাশীবাবু নিজ ডেপুটিগণসহ গ্রামে গ্রামে যাইয়া রাজসাহীতে অনেক পাঠশালা স্থাপিত করেন এবং সেকালে পাঠশালার অবস্থাও ভাল ছিল। কোন কোন পাঠশালায় ১৫০ জন পর্যন্ত ছাত্র হয় এবং কোন কোন গুরুমহাশয়ের মাসিক আয় ২০/২৫ টাকার কম ছিল না। কাশীবাবু ১৮৬৫-৬৬ খ্রিস্টাব্দের রিপোর্টে বলিয়াছেন যে “তাহার বিভাগ সর্বসাধারণের শিক্ষার প্রকৃত ভূমি।”২৫ ১৮৭০-৭১ খ্রিস্টাব্দে এই নিয়ম হয় যে পাঠাশালার স্বতন্ত্র ইনস্পেক্টর ও ডেপুটি ইনস্পেক্টর থাকিবে না। এই নিয়মানুসারে বাবু ভূদেব মুখোপাধ্যায় স্কুল ও পাঠশালাসমূহের ইনস্পেক্টর হইয়া রাজসাহী বিভাগ তাঁহার অধীন হইল। তখনও রাজসাহীতে পাঠশালার অবস্থা উন্নত। কিন্তু নাটোর ও বোয়ালিয়া সারকেল ব্যতীত রাজসাহীর সমুদয় পাঠশালায় মধ্যশ্রেণি লোকের অল্প সন্তানেরাই অধ্যয়ন করিত; নিম্নশ্রেণি লোকদের সন্তানগণই বেশি। সে সময় পাঠশালা প্রণালীতে পাঠশালা হইতে কোন পরীক্ষা দিবার নিয়ম ছিল না। অতএব পরীক্ষা দেওয়ান আবশ্যক হইলে, পাঠশালা হইতেও মধ্য-বাংলা পরীক্ষা দিবার জন্য ছাত্রগণ প্রস্তুত হইত। সুতরাং এই শ্রেণির পাঠশালা মধ্যবাংলা স্কুলের ন্যায় এবং উপযুক্ত শিক্ষকেরও প্রয়োজন। উপযুক্ত শিক্ষকের প্রয়োজন হইলেই, জমিদার, তালুকদার এবং অবস্থাপন্ন ধনীলোকদের সহানুভূতির আবশ্যক। সে সময় ইহাদেরও গবর্ণমেন্টের পাঠশালার উচ্চতর শিক্ষা দিবার ঝোঁক বেশি ছিল। ২৬ নাটোর ও বোয়ালিয়া সারকেলের কুজীপুকুর, সোইড, হাল্ল্সা, ভবানীপুর, নন্দনগাছি প্রভৃতি উন্নত পাঠশালা হইতে মধ্য-বাংলা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া অনেক ছাত্র প্রথম শ্রেণি নর্মাল স্কুলের ত্রৈবার্ষিক পরীক্ষাতে কৃতকার্য হয়। ইহারা সকলেই মধ্যশ্রেণি স্কুলের প্রধান পণ্ডিতের পদপ্রাপ্ত হন। ২/১ জন স্কুল সমূহের সব-ইনস্পেক্টরের পদও প্রাপ্ত হন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















