নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা
ইউরোপীয় কমিশন ইস্পাত আমদানির কোটাকে প্রায় অর্ধেক কমানোর এবং কোটার অতিরিক্ত আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ৫০% পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আরোপিত শুল্ক ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বিষয়টি কমিশনের নতুন ইস্পাত খাতের প্যাকেজের অংশ, যা ৭ অক্টোবর প্রকাশিত হবে।
শিল্পখাত ও ইউনিয়নের অবহিতকরণ
ইউরোপীয় কমিশনের শিল্পনীতি বিষয়ক নির্বাহী সহ-সভাপতি স্টেফান সেজুরনে বুধবার বিভিন্ন ইস্পাত সমিতি ও ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে অবহিত করেছেন।
ইউরোপীয় ইস্পাত সমিতি ইউরোফারের সভাপতি এবং টাটা স্টিলের সহ-সভাপতি হেনরিক আদাম সাংবাদিকদের জানান, কমিশন তাদের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে বলে আশ্বাস দিয়েছে, যদিও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেনি।
বর্তমান সুরক্ষা ব্যবস্থা ও এর মেয়াদ
বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইস্পাত আমদানির উপর সুরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর আছে। তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী এগুলোর মেয়াদ ২০২৬ সালের মাঝামাঝি শেষ হবে।
ইস্পাত খাতের সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছে যে, বর্তমান কোটার অর্ধেক করতে হবে এবং অতিরিক্ত আমদানির ওপর শুল্ক ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করতে হবে। তাদের যুক্তি, বর্তমানে কোটা মূল স্তরের চেয়ে ২৬% বেশি হলেও বাজারে চাহিদা কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে সামঞ্জস্য
৫০% শুল্ক আরোপ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য শুল্ক প্রথম টন থেকেই কার্যকর হয়।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা দেশগুলো অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (OECD) অনুমান করছে, ২০২৭ সালে বিশ্বে ইস্পাতের অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৭২১ মিলিয়ন মেট্রিক টনে, যার বড় অংশ ভর্তুকিনির্ভর চীনা কারখানা থেকে আসবে।
অ্যালুমিনিয়াম ও স্ক্র্যাপ ধাতুর দিকেও নজর
ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যালুমিনিয়াম বাজারেও সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। একই সঙ্গে স্ক্র্যাপ ধাতুর রপ্তানির উপর শুল্ক আরোপের বিষয়ও বিবেচনায় আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা সম্ভাবনা
নতুন আমদানি সীমা ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার পথ খুলে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে, তবে আলোচনার ভিত্তিতে এটি কোটা ব্যবস্থায় রূপ নিতে পারে।
জুলাইয়ের শেষ দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রাথমিক চুক্তিতে একমত হয়, যেখানে “মেটালস অ্যালায়েন্স” গঠনের মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদন চীনা প্রভাব থেকে সুরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
সাম্প্রতিক আলোচনার অগ্রগতি
ইইউর বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ এ মাসে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আলোচনাগুলো পুনরায় সক্রিয় করতে।