উদ্ধার অভিযানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশের সিদোয়ারজো শহরে আল-খোজিনি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল ধসে পড়ার পর প্রায় ৬০ জন কিশোর শিক্ষার্থী ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবিত বের করে আনার জন্য।
কীভাবে ধস ঘটল
স্কুলটি জাকার্তা থেকে প্রায় ৪৮০ মাইল পূর্বে অবস্থিত। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনের ভিত্তি, চলমান নির্মাণকাজের চাপ সামলাতে না পেরে ধসে পড়ে। সেই সময় বহু শিক্ষার্থী নামাজ আদায় করছিল। মুহূর্তেই তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।
নিখোঁজদের সংখ্যা ও উদ্ধারের চ্যালেঞ্জ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র আবদুল মুহারি বৃহস্পতিবার জানান, স্কুলের অনুপস্থিতির তালিকা ও পরিবারের দেওয়া নিখোঁজের তথ্য মিলিয়ে দেখা গেছে ৫৯ জন শিক্ষার্থী এখনও নিখোঁজ।
তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থার কর্মকর্তা এমি ফ্রেজার বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো জীবনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকারীরা নিখোঁজদের নাম ধরে ডাক দিয়েছেন, এমনকি গতিবিধি বা হৃদস্পন্দন শনাক্ত করার যন্ত্রও ব্যবহার করেছেন, কিন্তু সফল হননি।
উদ্ধারকারীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা
উদ্ধারকারীরা স্বতন্ত্র কমলা রঙের পোশাক পরে সরু সুড়ঙ্গ দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে প্রবেশ করছেন। ছবিতে দেখা যায়, তারা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতে।
বুধবার রাতে সংস্থার অপারেশনস ডিরেক্টর ইয়ুধি ব্রামান্ত্যো জানান, মৃতের সংখ্যা ছয়ে পৌঁছেছে। তবে বৃহস্পতিবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বলেছে সংখ্যা পাঁচ। তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনও আশা হারাইনি। হয়তো আমাদের ছোট ভাইদের কেউ এখনও বেঁচে আছে।”
বৃহস্পতিবার ধ্বংসস্তূপ সরাতে একটি ক্রেনও ব্যবহার করা হয়েছে।
স্কুল ও প্রেক্ষাপট
আল-খোজিনি স্থানীয়ভাবে পরিচিত একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল বা পেসানত্রেন। ইন্দোনেশিয়ায় মোট প্রায় ৪২ হাজার পেসানত্রেন রয়েছে, যেখানে সাত মিলিয়ন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
পরিবারগুলোর উদ্বেগ
স্কুলের বাইরে একটি সাদা বোর্ডে জীবিত উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা টাঙানো হয়েছে। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা সেখানে জড়ো হচ্ছেন। তাদের মধ্যে আছেন ৫২ বছর বয়সী আহমদ ইখসান, যার ১৪ বছর বয়সী ছেলে আরিফ আফফানদি এখনও নিখোঁজ।
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত আমার ছেলের কোনো খবর পাইনি। আমি বিশ্বাস করি আমার ছেলে এখনও জীবিত আছে।”