ভারতের তেলবাজারে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি রিফাইনারিগুলো রুশ তেল আমদানিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে হাঁটছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো রুশ তেল কেনা কমিয়ে দিচ্ছে, অন্যদিকে বেসরকারি কোম্পানিগুলো আমদানি বাড়াচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় কোম্পানির আমদানি হ্রাস
সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রীয় রিফাইনারিগুলো গড়ে দৈনিক ৬ লাখ ৫ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছে। এটি এপ্রিল-আগস্ট সময়কালের গড়ের তুলনায় ৩২ শতাংশ কম, আগস্টের তুলনায় ২২ শতাংশ কম, আর জুনের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কম। আন্তর্জাতিক জ্বালানি ডেটা সংস্থা কেপলার এই তথ্য জানিয়েছে।
বেসরকারি কোম্পানির বৃদ্ধি
বেসরকারি রিফাইনারিগুলোর আমদানি সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় দৈনিক ৯ লাখ ৭৯ হাজার ব্যারেলে। এটি এপ্রিল-আগস্টের গড়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি এবং আগস্টের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। জুনের সঙ্গে প্রায় একই পর্যায়ে রয়েছে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোর আমদানিকৃত তেলের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এসেছে রাশিয়া থেকে।
ভিন্ন অগ্রাধিকার
এই পার্থক্যের কারণ হিসেবে শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলো মূলত অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা পূরণ করে। তাই তারা যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, রুশ তেলের ছাড় কমে যাওয়া এবং সরবরাহের বৈচিত্র্য আনার প্রয়োজনীয়তার কারণে সতর্ক হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলো নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি কোম্পানিগুলো (যারা প্রায় ১০ শতাংশ খুচরা বিক্রির নিয়ন্ত্রণ করে) লাভকে প্রাধান্য দিয়ে দেশীয় বাজার ও রপ্তানির মধ্যে কৌশল বদলাচ্ছে।
রিলায়েন্স ও নায়ারা এনার্জির সুবিধা
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ রুশ কোম্পানি রোসনেফটের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির কারণে বাড়তি ছাড় পাচ্ছে এবং প্রতি মাসে ন্যূনতম নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নায়ারা এনার্জিও রোসনেফটের সঙ্গে যুক্ত এবং রুশ তেলের ওপর উচ্চমাত্রায় নির্ভরশীল।
রুশ তেলের অর্থনৈতিক সুবিধা
কেপলারের প্রধান গবেষণা বিশ্লেষক সুমিত রিতোলিয়া বলেছেন, সরবরাহ বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা বাড়লেও রুশ তেল ভারতের জন্য কেন্দ্রীয় অবস্থানে রয়ে গেছে। কারণ এটি তুলনামূলকভাবে বেশি লাভজনক, বিকল্প উৎসের তুলনায় ছাড়ও বেশি।
সামগ্রিক প্রভাব
সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বরে ভারতের রুশ তেল আমদানি আগস্টের তুলনায় ৬ শতাংশ এবং এপ্রিল-আগস্টের গড়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমেছে। দৈনিক গড়ে আমদানি নেমে এসেছে ১.৫৮ মিলিয়ন ব্যারেলে।