রাজসাহীর জেলার ভূসম্পত্তি প্রধানত পাঁচ প্রকার যথা:-
(৩) নিষ্কর ভূমি-১৮৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দে নিষ্কর ভূমির সংখ্যা ১৮৩৭। এইরূপ ভূসম্পত্তি দশ প্রকার যথা:- (ক) আয়মা, (খ) মদৎমাস, (গ) দেবোত্তর, (ঘ) ব্রহ্মোত্তর, (ঙ) পীরপাল, (চ) মহাত্রাণ, (ছ) ভোগোত্তর, (জ) চাকরাণভূমি, (ঝ) হেবা, (ঞ) জায়গির। এই নিষ্কর ভূমি ধর্মার্থ এবং ব্যক্তি বিশেষের বা বংশ বিশেষের উপকারার্থ দেওয়া হইয়াছে। ইহাদের মধ্যে কতকগুলি নিষ্কর ভূমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পূর্ব এবং কতকগুলি পরে প্রদত্ত হইয়াছে। ইহাদের মধ্যে কতকগুলি নিষ্কর ভূমি হিন্দু প্রদত্ত এবং কতকগুলি মুসলমান প্রদত্ত। লালপুর ও নাটোর থানার অন্তর্গত মুসলমান প্রদত্ত নিষ্কর ভূমিই বেশি।
রাজসাহীতে কমি বেশি শর্তের সম্পত্তিই বেশি। যদিচ সময় সময় জরিপ জমাবন্দি করিয়া জমিদার প্রজার নিকট হইতে বৃদ্ধি হারে কর আদায় করিয়া থাকে, তথাপি কমি বেশি শর্তের ভূসম্পত্তির লাভ বেশি এবং কৃষকেরা এইক্ষণে বহুত্তর নজর দিয়া জমিদারের নিকট জোত পত্তন হইতেছে। জমিদারি অপেক্ষা এইরূপ ভূসম্পত্তিতে লাভ বেশি, যেহেতু এক বিঘা জমিতে যে শস্য উৎপন্ন হয় তাহা জমিদারের রাজস্বের এক বিংশতি অংশেরও কম, অথচ কাহার সহিত বিবাদ বা কলহ করিতে হয় না। কৃষকদিগের পক্ষে এইরূপ ভূসম্পত্তি যেরূপ লাভজনক, ভদ্রলোকদিগের পক্ষে সেরূপ নহে। আবার ভদ্রলোকদিগের জমিদারের নিকট অপমান সহ্য করিতে হয়। আজিকালি রাজসাহীতে অনেক অর্থলাভ অপেক্ষা অপমান লঘু জ্ঞান করে। ইহা অশিক্ষিত ভদ্রলোকদের পক্ষেই প্রয়োগ করা যাইতে পারে।