জনপ্রিয় হলেও ঝুঁকিপূর্ণ
জাপানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাণী ক্যাফে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা এখানে এসে ব্যতিক্রমী প্রাণী যেমন সজারু, গিরগিটি, পেঁচা বা উদবিড়ালকে কাছ থেকে দেখা ও স্পর্শ করার সুযোগ পান। তবে নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, এসব স্থানের অনেকগুলোতেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়।
এই জরিপটি করেছে আন্তর্জাতিক সংরক্ষণ সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার জাপান (WWF Japan)’। তারা ২০২৫ সালের জুন ও জুলাই মাসে টোকিও ও আশপাশের এলাকায় ২৫টি প্রাণী ক্যাফে পরিদর্শন করেছে। এসব ক্যাফেতে ১০টিরও বেশি বিদেশি বা বন্যপ্রাণী প্রদর্শনের অনুমতি ছিল।
সংক্রমণের ঝুঁকি স্পষ্ট
হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের সহযোগিতায় করা এই তদন্তে দেখা গেছে, বহু ক্যাফেতেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
অণুজীববিষয়ক পরীক্ষায় চারটি ক্যাফেতে ক্ষতিকর ই. কোলাই (E. coli) ব্যাকটেরিয়া এবং দুটি ক্যাফেতে সালমোনেলা (Salmonella) জীবাণু শনাক্ত করা হয়েছে।
২৪টি দোকানে জীবাণুনাশক রাখা ছিল, কিন্তু মাত্র ১৪টি স্থানে হাত ধোয়ার স্টেশন ছিল। প্রায় সব দোকানেই প্রবেশের সময় হাত জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হলেও, মাত্র ১৪টি দোকানে দর্শনার্থীদের বের হওয়ার আগে একই কাজ করতে বলা হয়।
নির্দেশনা ও সচেতনতার অভাব
২৫টির মধ্যে কেবল দুটি ক্যাফে টিকাদান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বায়ুচলাচল সংক্রান্ত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিস্তারিত তথ্য প্রদর্শন করেছে। অন্যদিকে ১১টি ক্যাফে কোনোভাবেই প্রাণী দ্বারা সম্ভাব্য আঘাতের ঝুঁকি বা সেগুলোকে নিরাপদে স্পর্শ করার নির্দেশনা দেয়নি।
WWF Japan জানিয়েছে, বন্যপ্রাণী রাখা প্রতিষ্ঠানের জন্য এমন একটি মানদণ্ড প্রণয়ন জরুরি, যেখানে বিশেষজ্ঞরা প্রাণীদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা মূল্যায়ন করবেন এবং দর্শনার্থীদের সরাসরি সংস্পর্শের অনুমতি দেওয়া উচিত কি না, তা পর্যালোচনা করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষভাবে নিয়োজিত সহকারী অধ্যাপক ইয়োশিকি ইচিকাওয়া, যিনি গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন, বলেন,
“বর্তমানে পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে দর্শনার্থী ও ব্যবসা পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারিতার ওপর নির্ভর করছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকলে এসব প্রাণী ক্যাফে সংক্রমণের নতুন উৎসে পরিণত হতে পারে, যা মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।