সিঙ্গাপুরের সিনেমা হলের বন্ধ হয়ে যাওয়া: COVID-১৯-এর পরিণতি
সিঙ্গাপুরে ছোট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে সিনেমা দেখা ছিল এক ধরনের জাতীয় বিনোদন। কিন্তু COVID-১৯ মহামারীর পর সিনেমা হলগুলোতে দর্শকদের আগমন অনেক কমে গেছে, যার ফলে অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সিনেমা হলের দর্শক সংখ্যা ২০২৪ সালে মাত্র ৮.৪ মিলিয়ন ছিল, যা মহামারী পূর্ববর্তী বছরে ছিল প্রায় ২০ মিলিয়ন। সিনেমা হলগুলো পুরোপুরি খোলার পরেও, আগের মতো দর্শক ফেরেনি।
‘দ্য প্রজেক্টর’ সিনেমা হলের বন্ধ হয়ে যাওয়া
‘দ্য প্রজেক্টর’, একটি জনপ্রিয় স্বাধীন সিনেমা হল, আগস্টে আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এটি ছিল একমাত্র সিনেমা হল যেখানে স্বাধীন চলচ্চিত্র, আর্ট হাউস সিনেমা, ক্লাসিক এবং ডকুমেন্টারি দেখানো হতো। সিনেমা প্রেমীরা এই হলটির বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গভীরভাবে শোকাহত।
প্রজেক্টরের প্রতিষ্ঠাতা ক্যারেন টান তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছেন, “চলচ্চিত্রের দর্শকদের পরিবর্তিত অভ্যাস, বেড়ে যাওয়া খরচ, এবং সিনেমার প্রতি বিশ্বব্যাপী আগ্রহের হ্রাস সিঙ্গাপুরে একটি স্বাধীন সিনেমা হল চালানোর জন্য বিশেষভাবে কঠিন করে তুলেছে।”
ক্যাথে সিনেমা: একটি যুগের সমাপ্তি
ক্যাথে সিঙ্গাপুরের ঐতিহাসিক সিনেমা ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এবং এটি ১৯৩০ এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২৪ সালে, ক্যাথে সাইনপ্লেক্সেস তাদের চারটি অবশিষ্ট সিনেমা হল বন্ধ করে দেয়। এটি “একটি যুগের সমাপ্তি” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
MM2 এশিয়া, ক্যাথে সাইনপ্লেক্সের মূল প্রতিষ্ঠান, জানিয়েছে তারা এই ব্যবসাটি বিক্রি করার পর থেকেই নানা অর্থনৈতিক চাপের মুখে রয়েছে এবং এটি পুনরুদ্ধার করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিনেমা হলের ভবিষ্যৎ
সিঙ্গাপুরে এখন দুটি প্রধান সিনেমা অপারেটর বাকি রয়েছে: গোল্ডেন ভিলেজ এবং শ’অর অর্গানাইজেশন। তবে, সিনেমা হলগুলোর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভবিষ্যতে আরও কিছু সিনেমা হল বন্ধ হতে পারে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সিনেমা হলের স্থান আর বড় ভাড়া নেওয়া দোকানগুলোর জন্য পুনর্বিন্যস্ত হতে পারে।
তবে, সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিনেমা প্রেমীদের মাঝে হতাশা নেই। সিঙ্গাপুর ফিল্ম সোসাইটির চেয়ারম্যান কেনেথ টান বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, সিনেমার মাধ্যমটি কখনও হারিয়ে যাবে না, যেখানে মানুষ একসাথে বড় পর্দায় সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করে।”
সিনেমা এবং বিনোদন ভোক্তাদের জন্য নতুন ধরণের অভিজ্ঞতা প্রস্তাব করলেও, সিনেমা প্রেমীদের মনোভাব এখনও সঙ্গী দর্শকের উপরই ভিত্তি করে রয়েছে। সামাজিক অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয়তা সিনেমার প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে, যা একসাথে বড় পর্দায় সিনেমা দেখার জন্য উৎসাহিত করতে পারে।