চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই আগামী ৭ থেকে ১২ অক্টোবর ইতালি ও সুইজারল্যান্ড সফর করবেন। ইতালির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানি এবং সুইস ফেডারেল কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগ্নাজিও কাসিসের আমন্ত্রণে এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই সফরে ওয়াং ই ইতালিতে অনুষ্ঠিত হবে চীন–ইতালি সরকার কমিটির ১২তম যৌথ বৈঠক, এরপর সুইজারল্যান্ডে গিয়ে অনুষ্ঠিত করবেন চীন–সুইজারল্যান্ড পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের চতুর্থ কৌশলগত সংলাপ। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইতালির সঙ্গে বাস্তবভিত্তিক সহযোগিতার পথে
ওয়াং ই-এর ইউরোপ সফরটি সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগে অস্ট্রিয়া, স্লোভেনিয়া ও পোল্যান্ড ভ্রমণের পরই হচ্ছে—যা চীন–ইউরোপ সম্পর্কের ধারাবাহিক উচ্চমাত্রার যোগাযোগের ইঙ্গিত দেয়।
বেইজিং ফরেন স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চুই হংজিয়ান বলেন, ইতালি সফরে দুই দেশ বাস্তবমুখী সহযোগিতার দিকেই বেশি গুরুত্ব দেবে। অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ নানা ক্ষেত্রে চীন–ইতালির সহযোগিতার সম্ভাবনা বিশাল।
রয়টার্স জানায়, ইতালি বরাবরই ইউরোপে চীনা বিনিয়োগের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে বেইজিংয়ের আস্থায় থাকার চেষ্টা করেছে। গত সেপ্টেম্বরেই ইতালির উপপ্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “চীন ও ইতালির সহযোগিতার ক্ষেত্র অসীম—শিল্প থেকে সংস্কৃতি পর্যন্ত।”
সুইজারল্যান্ডে সম্পর্কের ৭৫ বছর: নতুন অধ্যায় শুরু
ইতালি সফর শেষে ওয়াং ই সুইজারল্যান্ডে গিয়ে অংশ নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের চতুর্থ কৌশলগত সংলাপে। ২০২৫ সাল চীন–সুইজারল্যান্ড কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বর্ষপূর্তি, যা দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক।
ওয়াং ই আগেই জানিয়েছিলেন, এ বছরকে “চীন–সুইজারল্যান্ড সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষ” হিসেবে উদযাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা ও মানবিক বিনিময়ে সহযোগিতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে দুই দেশ জনসম্পৃক্ত সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে চায়।
অধ্যাপক চুই বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ হিসেবে সুইজারল্যান্ড সংলাপ ও সহযোগিতায় বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে। ফলে চীন এই সুযোগে এমন এক সহযোগিতার মডেল গড়ে তুলতে পারে যা ইইউ দেশগুলোর জন্যও অনুপ্রেরণা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রথমার্ধে চীন–ইউরোপ সংলাপগুলো ছিল অভিজ্ঞতা পর্যালোচনামুখী, আর এখন প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ—যা পারস্পরিক স্বার্থ ও স্থিতিশীল সম্পর্ক নিশ্চিত করবে। ঘন ঘন সংলাপ ইউরোপের রাজনৈতিক দ্বিধা দূর করতে সহায়ক হবে, বিশেষত চীনের সঙ্গে সহযোগিতায় যাদের এখনও দ্বিধা রয়েছে।
বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতা—ভূ-রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক মন্দা—এসব মোকাবিলায় চীন ও ইউরোপ একসঙ্গে সমাধানের পথ দেখাতে পারে। সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতায় এক নির্মাণশীল ভূমিকা রাখতে সক্ষম, বলেন চুই।
#চীনের_পররাষ্ট্রমন্ত্রী #WangYi #ChinaEuropeRelations #Sarakhon #ThePresentWorld #Diplomacy #Italy #Switzerland #ForeignAffairs #GlobalPolitics