০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
মার্কিন বাজারে রপ্তানিতে ছাড় পাওয়ার আশায় সিঙ্গাপুরের ওষুধ শিল্প, আলোচনায় দুই দেশের প্রশাসন ভারতের দক্ষিণে গুগলের ১৫ বিলিয়ন ডলারের এআই বিনিয়োগ ইন্ডিজেনাস পিপলস ডে: উৎসবের পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩০৭) জাপানে ভালুক-দেখা রেকর্ড, দেশজুড়ে নিরাপত্তা উদ্যোগ নেটফ্লিক্সে ‘স্প্লিন্টার সেল: ডেথওয়াচ’—গেমিং আইপি এখন অ্যানিমেশনে ডিডব্লিউটিএস’-এ ‘বয় মিটস ওয়ার্ল্ড’ রিইউনিয়ন উইন্ডোজ ১০ শেষ—কোন ল্যাপটপে আপগ্রেড করবেন, আজকের গাইড বাণিজ্য-উদ্বেগে তেলদাম নিম্নমুখী—সরবরাহ এখনো স্বচ্ছন্দ রকেট’ ভঙ্গির ড্রোনে এক সেন্ট ডেলিভারি—এয়ারবাউন্ডের তহবিল ৮.৬৫ মিলিয়ন

ভারতের আকাশে নতুন যুগ: দিল্লি ও মুম্বাইয়ে একসঙ্গে দুই নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু

বিমান চলাচলে বড় রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে ভারত

ভারতের ব্যস্ততম দুই মহানগর—দিল্লি ও মুম্বাই—এ মাসেই চালু হতে যাচ্ছে দুটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই দুটি প্রকল্প শুধু দেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থায় নয়, পুরো অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রেই বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুম্বাইয়ের নবি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (NMIA) উদ্বোধনের সম্ভাব্য তারিখ ৮ অক্টোবর এবং দিল্লির পরিপূরক বিমানবন্দর নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (NIA) চালুর সম্ভাবনা রয়েছে ৩০ অক্টোবর।


যাত্রীদের জন্য স্বস্তি, বিমান সংস্থার জন্য নতুন দিগন্ত

নতুন বিমানবন্দরগুলো চালু হলে বিদ্যমান বিমানবন্দরগুলোর অতিরিক্ত চাপ কমবে। এতে ফ্লাইট সময়সূচি উন্নত হবে, বিলম্ব কমবে এবং নতুন আন্তর্জাতিক রুট খুলবে।

যাত্রীরা পাবেন আরও সহজ সংযোগ, সময়মতো ফ্লাইট এবং ভ্রমণের বৈচিত্র্যময় বিকল্প। পাশাপাশি বিমান সংস্থাগুলো—যেমন এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো ও আকাশা এয়ার—তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও নতুন বাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উন্নয়ন দিল্লি-এনসিআর ও মুম্বাই-এমএমআর এলাকাকে সত্যিকারের ‘‘বৈশ্বিক এভিয়েশন হাব’’-এ পরিণত করবে, যা ভারতকে দুবাই, লন্ডন ও সিঙ্গাপুরের মতো বিশ্বমানের শহরগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার অবস্থানে নিয়ে যাবে।


মাল্টি-এয়ারপোর্ট শহর: বৈশ্বিক মডেলে ভারত

বিশ্বের বড় শহরগুলো—যেমন নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও ও প্যারিস—দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক বিমানবন্দরের ওপর নির্ভরশীল। এবার ভারতও সেই মডেল অনুসরণ করছে।

গোয়া ছিল দেশের প্রথম মাল্টি-এয়ারপোর্ট শহর; ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মোপা বিমানবন্দর চালুর পর সেখানে যাত্রী চলাচল দ্রুত বেড়ে গেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের নতুন বিমানবন্দর চালুর পর একই ধারা আরও বৃহৎ পরিসরে দেখা যাবে।


বড় বিনিয়োগ, বড় আশাবাদ

দুটি প্রকল্পই বাস্তবায়ন করছে দেশি-বিদেশি বড় সংস্থা—জি এম আর গ্রুপ, ফ্লুগহাফেন জুরিখ এজি ও আদানি গ্রুপ।

দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখনো সম্প্রসারণযোগ্য হলেও মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছে গেছে। সেখানে নবি মুম্বাই বিমানবন্দর চালু হলে রাজধানী ও আর্থিক কেন্দ্রের যাত্রীচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

এই দুই বিমানবন্দর শুধু চাপ হ্রাসই করবে না; বরং ভারতের বিমান পরিবহন খাতকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল বাজারগুলোর শীর্ষে পৌঁছে দেবে।


ভবিষ্যতের দিগন্তে ভারতীয় এভিয়েশন

নতুন এই প্রকল্পগুলো চালু হলে দিল্লি-নয়ডা-ঘাজিয়াবাদ মিলিয়ে রাজধানী অঞ্চল হয়ে উঠবে একাধিক বিমানবন্দরের সমন্বিত নেটওয়ার্ক। ভবিষ্যতে এটি তিনটি বিমানবন্দর-নির্ভর শহরে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে।

অন্যদিকে, নবি মুম্বাই বিমানবন্দর সম্পূর্ণ কার্যকর হলে প্রতি বছর প্রায় ৯ কোটি যাত্রী এবং ৩.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গো পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করবে।

এই দুই প্রকল্প শুধু অবকাঠামো নয়, ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিতেও নতুন গতি আনবে—যা দেশটিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে।


অক্টোবর মাস ভারতের বিমান চলাচল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে। দিল্লি ও মুম্বাইয়ের নতুন বিমানবন্দর চালুর মধ্য দিয়ে দেশটি প্রবেশ করছে ‘‘মাল্টি-হাব এয়ার কানেকটিভিটি’’-এর যুগে—যেখানে আকাশে বাড়বে সুযোগ, সময়মতো পৌঁছাবে ফ্লাইট, আর যাত্রীদের জন্য খুলবে আরও সহজ, আধুনিক ও বৈশ্বিক সংযোগের দিগন্ত।

জনপ্রিয় সংবাদ

মার্কিন বাজারে রপ্তানিতে ছাড় পাওয়ার আশায় সিঙ্গাপুরের ওষুধ শিল্প, আলোচনায় দুই দেশের প্রশাসন

ভারতের আকাশে নতুন যুগ: দিল্লি ও মুম্বাইয়ে একসঙ্গে দুই নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু

১২:৩৭:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

বিমান চলাচলে বড় রূপান্তরের দ্বারপ্রান্তে ভারত

ভারতের ব্যস্ততম দুই মহানগর—দিল্লি ও মুম্বাই—এ মাসেই চালু হতে যাচ্ছে দুটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই দুটি প্রকল্প শুধু দেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থায় নয়, পুরো অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রেই বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুম্বাইয়ের নবি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (NMIA) উদ্বোধনের সম্ভাব্য তারিখ ৮ অক্টোবর এবং দিল্লির পরিপূরক বিমানবন্দর নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (NIA) চালুর সম্ভাবনা রয়েছে ৩০ অক্টোবর।


যাত্রীদের জন্য স্বস্তি, বিমান সংস্থার জন্য নতুন দিগন্ত

নতুন বিমানবন্দরগুলো চালু হলে বিদ্যমান বিমানবন্দরগুলোর অতিরিক্ত চাপ কমবে। এতে ফ্লাইট সময়সূচি উন্নত হবে, বিলম্ব কমবে এবং নতুন আন্তর্জাতিক রুট খুলবে।

যাত্রীরা পাবেন আরও সহজ সংযোগ, সময়মতো ফ্লাইট এবং ভ্রমণের বৈচিত্র্যময় বিকল্প। পাশাপাশি বিমান সংস্থাগুলো—যেমন এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো ও আকাশা এয়ার—তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও নতুন বাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উন্নয়ন দিল্লি-এনসিআর ও মুম্বাই-এমএমআর এলাকাকে সত্যিকারের ‘‘বৈশ্বিক এভিয়েশন হাব’’-এ পরিণত করবে, যা ভারতকে দুবাই, লন্ডন ও সিঙ্গাপুরের মতো বিশ্বমানের শহরগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার অবস্থানে নিয়ে যাবে।


মাল্টি-এয়ারপোর্ট শহর: বৈশ্বিক মডেলে ভারত

বিশ্বের বড় শহরগুলো—যেমন নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও ও প্যারিস—দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক বিমানবন্দরের ওপর নির্ভরশীল। এবার ভারতও সেই মডেল অনুসরণ করছে।

গোয়া ছিল দেশের প্রথম মাল্টি-এয়ারপোর্ট শহর; ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে মোপা বিমানবন্দর চালুর পর সেখানে যাত্রী চলাচল দ্রুত বেড়ে গেছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের নতুন বিমানবন্দর চালুর পর একই ধারা আরও বৃহৎ পরিসরে দেখা যাবে।


বড় বিনিয়োগ, বড় আশাবাদ

দুটি প্রকল্পই বাস্তবায়ন করছে দেশি-বিদেশি বড় সংস্থা—জি এম আর গ্রুপ, ফ্লুগহাফেন জুরিখ এজি ও আদানি গ্রুপ।

দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখনো সম্প্রসারণযোগ্য হলেও মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় পূর্ণ সক্ষমতায় পৌঁছে গেছে। সেখানে নবি মুম্বাই বিমানবন্দর চালু হলে রাজধানী ও আর্থিক কেন্দ্রের যাত্রীচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

এই দুই বিমানবন্দর শুধু চাপ হ্রাসই করবে না; বরং ভারতের বিমান পরিবহন খাতকে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল বাজারগুলোর শীর্ষে পৌঁছে দেবে।


ভবিষ্যতের দিগন্তে ভারতীয় এভিয়েশন

নতুন এই প্রকল্পগুলো চালু হলে দিল্লি-নয়ডা-ঘাজিয়াবাদ মিলিয়ে রাজধানী অঞ্চল হয়ে উঠবে একাধিক বিমানবন্দরের সমন্বিত নেটওয়ার্ক। ভবিষ্যতে এটি তিনটি বিমানবন্দর-নির্ভর শহরে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করছে।

অন্যদিকে, নবি মুম্বাই বিমানবন্দর সম্পূর্ণ কার্যকর হলে প্রতি বছর প্রায় ৯ কোটি যাত্রী এবং ৩.২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গো পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করবে।

এই দুই প্রকল্প শুধু অবকাঠামো নয়, ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিতেও নতুন গতি আনবে—যা দেশটিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে।


অক্টোবর মাস ভারতের বিমান চলাচল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে। দিল্লি ও মুম্বাইয়ের নতুন বিমানবন্দর চালুর মধ্য দিয়ে দেশটি প্রবেশ করছে ‘‘মাল্টি-হাব এয়ার কানেকটিভিটি’’-এর যুগে—যেখানে আকাশে বাড়বে সুযোগ, সময়মতো পৌঁছাবে ফ্লাইট, আর যাত্রীদের জন্য খুলবে আরও সহজ, আধুনিক ও বৈশ্বিক সংযোগের দিগন্ত।