ভূমিকা
২০২৫ সালের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা আধুনিক যুদ্ধের নতুন দিক সম্পর্কে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। এই সংঘর্ষে ড্রোন, নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত, যৌথ অপারেশন এবং রিয়েল-টাইম যুদ্ধে পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঠ ছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান, জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদি, এ সম্পর্কে জাপান টাইমসকে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।
অপারেশন সিন্ধুর শিক্ষা
ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিন্ধুর আওতায় যে আক্রমণ চালিয়েছিল, তা কাশ্মীরে আইএসআইএস-সম্পর্কিত সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হওয়ার পর নেওয়া হয়েছিল। এই চার দিনের সংঘর্ষ ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিয়ম ও প্রতিরোধ কৌশলে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। দ্বিবেদি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে কোনো আক্রমণ হলে ভারত এর মতো পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালাবে।
সংঘর্ষের লক্ষ্য
দ্বিবেদি আরও বলেছেন যে, যুদ্ধের পরিকল্পনা শুধু সেনাবাহিনী নয়, বরং পুরো রাষ্ট্রের একটি দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত। যুদ্ধের সময় লক্ষ্য অর্জন হওয়ার পর সংঘর্ষের সমাপ্তি চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সংঘর্ষটি পাকিস্তানের “সন্ত্রাসী ভিত্তি” গুলির বিরুদ্ধে পরিচালিত হয় এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের আকাশচালিত আক্রমণেও সাড়া দিয়েছে।
তথ্য যুদ্ধ এবং ভুল তথ্য
এই সংঘর্ষের সময় তথ্য যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যার ফলে উভয় পক্ষই নিজেদের জয় দাবি করেছে এবং একে অপরের দাবীকে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তান দাবি করেছিল যে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল বিমানগুলোকে চীনে তৈরি প্ল-১৫ই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে, কিন্তু দ্বিবেদি জানিয়েছিলেন যে, পাকিস্তানের অস্ত্র ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করেনি।
পাকিস্তানের অস্ত্র সামগ্রী
পাকিস্তান যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে, তার মধ্যে বেশিরভাগই চীন থেকে আসা। তবে, ভারত পাকিস্তানের চীনে তৈরি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম হয় এবং পাকিস্তানী বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে আঘাত হানে। ভারতের সেনাবাহিনী এই অস্ত্রগুলোকে যথাযথ মানে পায়নি, এবং তা পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী কার্যকর হয়নি।
যৌথ সেনা অপারেশন
অপারেশন সিন্ধুর মাধ্যমে ভারতের তিনটি সেনা শাখা প্রথমবারের মতো একসাথে কাজ করেছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত করা “সন্ত্রাসী ক্যাম্প” গুলি। দ্বিবেদি বলেন, পাকিস্তান এভাবে গভীরে আঘাত হানার প্রত্যাশা করেনি।
দ্বিবেদি আরও জানান, ভারতের সেনাবাহিনী নতুন প্রযুক্তি ও উন্নত যুদ্ধ ব্যবস্থা ব্যবহার করে এই অপারেশন সফল করেছে। এ সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর উন্নত প্রযুক্তি যেমন ড্রোন, রাডার, এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মিশ্রণ ছিল কার্যকর। তবে, ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা উন্নত হলেও কিছু জায়গায় উন্নতি প্রয়োজন, বিশেষত ড্রোন এবং বৈদ্যুতিন যুদ্ধ প্রযুক্তিতে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক
ভারত এখন অন্যান্য দেশের সাথে আরও জোরদার প্রতিরক্ষা সম্পর্ক স্থাপন করছে। বিশেষত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন প্রযুক্তি এবং যৌথ উন্নয়ন প্রকল্পের দিকে মনোযোগ দিয়েছে, এবং উভয় দেশের সাথে সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়েছে।
#ভারত #পাকিস্তান #অপারেশন_সিন্ধু #যুদ্ধ #প্রতিরক্ষা #ড্রোন #তথ্য_যুদ্ধ #সেনাবাহিনী #আধুনিক_যুদ্ধ #বিশ্ব_রাজনীতি