১১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
ইংল্যান্ডের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় ‘ভুলে যাওয়া রাজা অ্যাথেলস্টানকে শ্রদ্ধা জানাতে শত মাইলের নতুন ভ্রমণ পথ ‘ দেশের হারিয়ে যাওয়া লাল ডাকবাক্স: ডিজিটাল যুগে বিলুপ্ত চিঠির স্মৃতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৩৩) শরৎ বাধা পেল, বসন্ত কি আসতে পারবে? মোদী-ট্রাম্প বৈঠক: ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনা ইসরাইল ও হামাস কী কী ছাড় দিয়েছে গাজায় বন্দি–যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে? সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের খ্যাতি ছিল একাধারে শিক্ষক, লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সরেজমিন খাগড়াছড়ি: একদিকে ক্ষোভ-আতঙ্ক, আরেকদিকে নজরদারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ও গেন্ডারিয়ায় শরৎ উৎসবে বাধা কেন? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিব শঙ্কর রায় নিহতঃ শোকের ছায়া

সরকার এখন একটি দলের স্বার্থে কাজ করছে — ফখরুলের অভিযোগ

বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার প্রশাসনকে একটি নির্দিষ্ট দলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ প্রশাসন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রশাসনকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কতা

ফখরুল শুক্রবার এক আলোচনা সভায় বলেন, প্রশাসনকে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অধীনে আনার অপচেষ্টা চলছে এবং বিএনপি তা কখনোই মেনে নেবে না। তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা দাবি করেন এবং নির্বাচন কমিশনকে কোনো দলের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানান।

নির্বাচন সময়সীমা: ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে

ফখরুল জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারিক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জুন মাসে যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলেন—ফেব্রুয়ারি ২০২৬—সেই সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই সময়সীমা না মানলে “নির্বাচন হবে না” বলেই বিএনপি অবস্থান নিয়েছে।

জিহাদের স্মরণে আলোচনা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি

জিহাদ স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (IEB) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় নাজির উদ্দিন আহমেদ জিহাদের স্মরণসভা—যিনি ১০ অক্টোবর ১৯৯০ সালে আন্দোলনের সময় ঢাকায় নিহত হন। সকালে বিএনপি নেতারা—আমান উল্লাহ আমানসহ—জিহাদ চত্বরে শহীদ জিহাদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং তার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন।

দলীয় ইতিহাস ও সংস্কার নিয়ে ফখরুলের বক্তব্য

ফখরুল বলেন, কিছু মানুষ বিএনপির সংস্কারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যা তাঁর কাছে হাস্যকর মনে হয়; কারণ, অতীতে প্রয়োজনীয় সকল সংস্কার এনেছে বিএনপিই। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যেমন জাতি গঠনের কর্মে নিবেদিত ছিলেন, ঠিক তেমনি তাঁর উত্তরসূরি তারিক রহমানও দূর থেকে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে ও অধিকার পুনরুদ্ধারে আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনে রক্ত দিতেও প্রস্তুত আছেন তাঁরা।

শাসনবিরোধী সংগ্রাম ও গণআন্দোলন

ফখরুল অতীতের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—১৯৯০-এর এরশাদবিরোধী সংগ্রাম থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরের শেখ হাসিনার শাসনবিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত বিএনপির ভূমিকা ও ত্যাগের কথা স্মরণ করান। তিনি বলেন, গত বছরের গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ নির্বাচন

ফখরুলের মতে, নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রে ফিরে আসার কোনো বিকল্প নেই। মুক্ত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি বলেন, গণতন্ত্র কেবল কয়েক দিনের উচ্ছ্বাস নয়; এর জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞতা, ত্যাগ ও জনগণের সঙ্গে গভীর সংযোগ। বিএনপি জনগণের দল হিসেবে সেই সম্পর্ক অটুট রেখেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রতীক বিতর্ক: শাপলা ও ধানের শীষ নিয়ে দ্বন্দ্ব

ফখরুল জাতীয় পার্টি (NCP)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, শাপলা প্রতীক না পেলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেওয়া বা প্রতীক তালিকা থেকে অন্যান্য প্রতীক অপসারণের দাবি অনর্থক। তিনি বলেন, বিএনপি কখনো অন্য দলের প্রতীক পাওয়ার পথে বাধা দেয়নি; কোন প্রতীক কে পাবে, তা নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন। তাঁর ভাষায়, বিএনপির প্রতীক “ধানের শীষ” গ্রামবাংলায় দৃঢ় জনপ্রিয়তার প্রতীক, তাই প্রতিপক্ষ সেটিকে দুর্বল করতে চায়। তবে, “ধানের শীষ” অক্ষুণ্ণ থাকলে তাদের সব ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ফখরুলের বক্তব্য নির্বাচনী পরিবেশের স্বচ্ছতা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্ধারিত সময়সীমা মেনে চলার ওপর জোর দেয়। তাঁর বার্তায় প্রতিফলিত হয় গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি এবং প্রতীক ও সংগঠনের ঐক্য বজায় রাখার দৃঢ় আহ্বান।

#ফখরুলইসলামআলমগীর #বিএনপি #নির্বাচন২০২৬ #সরকারওএকদল #নিরপেক্ষপ্রশাসন #বাংলাদেশরাজনীতি #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

ইংল্যান্ডের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় ‘ভুলে যাওয়া রাজা অ্যাথেলস্টানকে শ্রদ্ধা জানাতে শত মাইলের নতুন ভ্রমণ পথ ‘

সরকার এখন একটি দলের স্বার্থে কাজ করছে — ফখরুলের অভিযোগ

০৬:২৪:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার প্রশাসনকে একটি নির্দিষ্ট দলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ প্রশাসন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রশাসনকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কতা

ফখরুল শুক্রবার এক আলোচনা সভায় বলেন, প্রশাসনকে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের অধীনে আনার অপচেষ্টা চলছে এবং বিএনপি তা কখনোই মেনে নেবে না। তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা দাবি করেন এবং নির্বাচন কমিশনকে কোনো দলের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানান।

নির্বাচন সময়সীমা: ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে

ফখরুল জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারিক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জুন মাসে যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলেন—ফেব্রুয়ারি ২০২৬—সেই সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই সময়সীমা না মানলে “নির্বাচন হবে না” বলেই বিএনপি অবস্থান নিয়েছে।

জিহাদের স্মরণে আলোচনা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি

জিহাদ স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (IEB) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় নাজির উদ্দিন আহমেদ জিহাদের স্মরণসভা—যিনি ১০ অক্টোবর ১৯৯০ সালে আন্দোলনের সময় ঢাকায় নিহত হন। সকালে বিএনপি নেতারা—আমান উল্লাহ আমানসহ—জিহাদ চত্বরে শহীদ জিহাদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং তার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন।

দলীয় ইতিহাস ও সংস্কার নিয়ে ফখরুলের বক্তব্য

ফখরুল বলেন, কিছু মানুষ বিএনপির সংস্কারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যা তাঁর কাছে হাস্যকর মনে হয়; কারণ, অতীতে প্রয়োজনীয় সকল সংস্কার এনেছে বিএনপিই। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যেমন জাতি গঠনের কর্মে নিবেদিত ছিলেন, ঠিক তেমনি তাঁর উত্তরসূরি তারিক রহমানও দূর থেকে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে ও অধিকার পুনরুদ্ধারে আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনে রক্ত দিতেও প্রস্তুত আছেন তাঁরা।

শাসনবিরোধী সংগ্রাম ও গণআন্দোলন

ফখরুল অতীতের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—১৯৯০-এর এরশাদবিরোধী সংগ্রাম থেকে শুরু করে গত ১৫ বছরের শেখ হাসিনার শাসনবিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত বিএনপির ভূমিকা ও ত্যাগের কথা স্মরণ করান। তিনি বলেন, গত বছরের গণআন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ নির্বাচন

ফখরুলের মতে, নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রে ফিরে আসার কোনো বিকল্প নেই। মুক্ত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি বলেন, গণতন্ত্র কেবল কয়েক দিনের উচ্ছ্বাস নয়; এর জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞতা, ত্যাগ ও জনগণের সঙ্গে গভীর সংযোগ। বিএনপি জনগণের দল হিসেবে সেই সম্পর্ক অটুট রেখেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রতীক বিতর্ক: শাপলা ও ধানের শীষ নিয়ে দ্বন্দ্ব

ফখরুল জাতীয় পার্টি (NCP)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, শাপলা প্রতীক না পেলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেওয়া বা প্রতীক তালিকা থেকে অন্যান্য প্রতীক অপসারণের দাবি অনর্থক। তিনি বলেন, বিএনপি কখনো অন্য দলের প্রতীক পাওয়ার পথে বাধা দেয়নি; কোন প্রতীক কে পাবে, তা নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন। তাঁর ভাষায়, বিএনপির প্রতীক “ধানের শীষ” গ্রামবাংলায় দৃঢ় জনপ্রিয়তার প্রতীক, তাই প্রতিপক্ষ সেটিকে দুর্বল করতে চায়। তবে, “ধানের শীষ” অক্ষুণ্ণ থাকলে তাদের সব ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ফখরুলের বক্তব্য নির্বাচনী পরিবেশের স্বচ্ছতা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্ধারিত সময়সীমা মেনে চলার ওপর জোর দেয়। তাঁর বার্তায় প্রতিফলিত হয় গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি এবং প্রতীক ও সংগঠনের ঐক্য বজায় রাখার দৃঢ় আহ্বান।

#ফখরুলইসলামআলমগীর #বিএনপি #নির্বাচন২০২৬ #সরকারওএকদল #নিরপেক্ষপ্রশাসন #বাংলাদেশরাজনীতি #সারাক্ষণরিপোর্ট