০৬:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনও আপস নয় — ফখরুলের হুঁশিয়ারি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো সরকারের ওপর চাপে যুক্তরাষ্ট্রের নজিরবিহীন সেনা মোতায়েন সমুদ্রপথে ভ্রমণ এখন কেবল বিলাস নয়, এক অনন্য শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা চট্টগ্রাম ইপিজেডে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ময়মনসিংহ বোর্ডে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের একজনও শিক্ষার্থী পাস করেনি সাভারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ, তিন অভিযুক্ত পলাতক এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের সাফল্য আবারও ছেলেদের ছাড়িয়ে গেল ফিলিস্তিনের বন্ধু থেকে যেভাবে ইসরায়েলের মিত্র হলো ভারত রাজসাহীর ইতিহাস (পর্ব -৪০) শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণে নতুন নিয়ম: ১৫ অক্টোবর থেকে অনলাইন অনুমতি বাধ্যতামূলক

ধ্বংসাবশেষ ও ভূত: ব্রিটেনের এক হারানো গ্রাম

হারানো গ্রাম    হ্যারাম পার্সি

ব্রিটেনের হাজার হাজার পুরনো গ্রাম একাধিক কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে—রোগ, অর্থনৈতিক পতন, যুদ্ধ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে, হ্যারাম পার্সি এমন একটি গ্রাম যা এখনও তার হারানো অতীতের চিহ্ন বহন করে চলেছে। এই গ্রামটি ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে অবস্থিত, যেখানে একসময় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস করতেন। আজ, এটি একটি পরিত্যক্ত গ্রাম হিসেবে পরিচিত, যেখানে একটি ১২শ শতাব্দীর ধ্বংসপ্রাপ্ত গির্জা ছাড়া আর কিছু নেই।

এই গ্রামটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল এর ইতিহাস, যা ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া হ্যারাম রিসার্চ প্রজেক্টের মাধ্যমে উন্মোচিত হয়েছে। দীর্ঘ দশক ধরে চলা খনন কাজের ফলে এখানে ৬০০টিরও বেশি মানব কঙ্কাল পাওয়া গেছে, যা মধ্যযুগীয় কৃষক জীবনের এক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

 অন্ধকার অতীত: ভুতুরে কঙ্কাল

১৯৬০-এর দশকে, হ্যারাম পার্সি থেকে কিছু অদ্ভুত ধরনের কঙ্কাল পাওয়া যায়, যা এই গ্রামটির অন্ধকার অতীতকে চিহ্নিত করে। এখানে ১৩৭টি হাড় পাওয়া গেছে, যা অন্তত ১০ জন মানুষের ছিল। এই হাড়গুলোতে গলা কাটা, অঙ্গহানি এবং দাহনের চিহ্ন ছিল, যা সম্ভবত মৃত্যুর পরেই করা হয়েছিল।

বহু ইতিহাসবিদ মনে করেন, এই ধরনের কঙ্কালগুলি ‘ভূত’ বা ‘জীবিত মৃতদের’ ওপর বিশ্বাসের চিহ্ন হতে পারে। মধ্যযুগীয় ইউরোপে বিশ্বাস করা হতো যে, কিছু মৃত ব্যক্তি তাদের কবর থেকে উঠে আসেন এবং জীবিতদের ক্ষতি করেন। এই ভুতুরে বিশ্বাস থেকে মুক্তি পেতে মৃতদেহগুলি পুনরায় উত্তোলন করে ধ্বংস করা হতো। হ্যারাম পার্সির কঙ্কালগুলি সম্ভবত এমন ধরনের আচার-অনুষ্ঠানকে প্রমাণ করে, যা ব্রিটেনে এ ধরনের একমাত্র প্রমাণ।

 গ্রামটির পতন: ভেঙে পড়া গ্রাম

হ্যারাম পার্সির পতন ঘটেছিল আরও একটি কারণের জন্য। ১৭শ শতাব্দীর শুরুতে, গ্রামটি সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এর আগে, গ্রামটি স্কটিশ আক্রমণ এবং ব্ল্যাক ডেথের মতো দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে, সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি এসেছিল যখন মেষপালন অর্থনীতি বদলে দিয়েছিল। গ্রামটির কৃষকদের জমি পরিত্যক্ত হয়ে গেলে, ১৫০০ সালের দিকে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যায় এবং সেখানে শুধু মেষপালকরা বসবাস শুরু করে।

আজ, গ্রামটির আশেপাশের ভূমি পুনরায় চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এর ঐতিহাসিক পরিবেশ অব্যাহত রয়েছে। আপনি যদি প্রকৃতি এবং ইতিহাস অনুভব করতে চান, তবে ইয়র্কশায়ারের ওয়োল্ডস অঞ্চলের সার্কুলার হাঁটার পথে হ্যারাম পার্সি গ্রামটি পরিদর্শন করতে পারেন।

এই অঞ্চলের অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান যেমন, ম্যালটনের বাজার শহর ও কিরখাম প্রায়রি দেখতে পারেন। এগুলো এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক অনুভূতি তুলে ধরে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনও আপস নয় — ফখরুলের হুঁশিয়ারি

ধ্বংসাবশেষ ও ভূত: ব্রিটেনের এক হারানো গ্রাম

১২:৪৫:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

হারানো গ্রাম    হ্যারাম পার্সি

ব্রিটেনের হাজার হাজার পুরনো গ্রাম একাধিক কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে—রোগ, অর্থনৈতিক পতন, যুদ্ধ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে, হ্যারাম পার্সি এমন একটি গ্রাম যা এখনও তার হারানো অতীতের চিহ্ন বহন করে চলেছে। এই গ্রামটি ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে অবস্থিত, যেখানে একসময় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস করতেন। আজ, এটি একটি পরিত্যক্ত গ্রাম হিসেবে পরিচিত, যেখানে একটি ১২শ শতাব্দীর ধ্বংসপ্রাপ্ত গির্জা ছাড়া আর কিছু নেই।

এই গ্রামটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল এর ইতিহাস, যা ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া হ্যারাম রিসার্চ প্রজেক্টের মাধ্যমে উন্মোচিত হয়েছে। দীর্ঘ দশক ধরে চলা খনন কাজের ফলে এখানে ৬০০টিরও বেশি মানব কঙ্কাল পাওয়া গেছে, যা মধ্যযুগীয় কৃষক জীবনের এক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

 অন্ধকার অতীত: ভুতুরে কঙ্কাল

১৯৬০-এর দশকে, হ্যারাম পার্সি থেকে কিছু অদ্ভুত ধরনের কঙ্কাল পাওয়া যায়, যা এই গ্রামটির অন্ধকার অতীতকে চিহ্নিত করে। এখানে ১৩৭টি হাড় পাওয়া গেছে, যা অন্তত ১০ জন মানুষের ছিল। এই হাড়গুলোতে গলা কাটা, অঙ্গহানি এবং দাহনের চিহ্ন ছিল, যা সম্ভবত মৃত্যুর পরেই করা হয়েছিল।

বহু ইতিহাসবিদ মনে করেন, এই ধরনের কঙ্কালগুলি ‘ভূত’ বা ‘জীবিত মৃতদের’ ওপর বিশ্বাসের চিহ্ন হতে পারে। মধ্যযুগীয় ইউরোপে বিশ্বাস করা হতো যে, কিছু মৃত ব্যক্তি তাদের কবর থেকে উঠে আসেন এবং জীবিতদের ক্ষতি করেন। এই ভুতুরে বিশ্বাস থেকে মুক্তি পেতে মৃতদেহগুলি পুনরায় উত্তোলন করে ধ্বংস করা হতো। হ্যারাম পার্সির কঙ্কালগুলি সম্ভবত এমন ধরনের আচার-অনুষ্ঠানকে প্রমাণ করে, যা ব্রিটেনে এ ধরনের একমাত্র প্রমাণ।

 গ্রামটির পতন: ভেঙে পড়া গ্রাম

হ্যারাম পার্সির পতন ঘটেছিল আরও একটি কারণের জন্য। ১৭শ শতাব্দীর শুরুতে, গ্রামটি সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এর আগে, গ্রামটি স্কটিশ আক্রমণ এবং ব্ল্যাক ডেথের মতো দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তবে, সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি এসেছিল যখন মেষপালন অর্থনীতি বদলে দিয়েছিল। গ্রামটির কৃষকদের জমি পরিত্যক্ত হয়ে গেলে, ১৫০০ সালের দিকে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যায় এবং সেখানে শুধু মেষপালকরা বসবাস শুরু করে।

আজ, গ্রামটির আশেপাশের ভূমি পুনরায় চাষাবাদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এর ঐতিহাসিক পরিবেশ অব্যাহত রয়েছে। আপনি যদি প্রকৃতি এবং ইতিহাস অনুভব করতে চান, তবে ইয়র্কশায়ারের ওয়োল্ডস অঞ্চলের সার্কুলার হাঁটার পথে হ্যারাম পার্সি গ্রামটি পরিদর্শন করতে পারেন।

এই অঞ্চলের অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান যেমন, ম্যালটনের বাজার শহর ও কিরখাম প্রায়রি দেখতে পারেন। এগুলো এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক অনুভূতি তুলে ধরে।