জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগে আজ দুপুরে সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হওয়া ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারে কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে ধাওয়া ও তাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জুলাই সনদ সংশোধন, সনদকে স্থায়ীভাবে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করা এবং জুলাই যোদ্ধাদের স্বীকৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সংসদ ভবনের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের বাধা পেরিয়ে সংসদ ভবনের মূল ফটক টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। পরে মূল ফটক উন্মুক্ত করে দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এসময় ভেতরে ঢুকে জুলাই সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করে রাখা মঞ্চের সামনে এসে অতিথিদের জন্য বরাদ্দ চেয়ারে বসে পড়েন ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দেওয়া বিক্ষোভকারীরা।
এক পর্যায়ে দুপুর একটার কিছুক্ষণ আগে মঞ্চে উঠে ঘোষণাপত্র সংশোধন করে জুলাই আন্দোলনে আহত ও নিহতদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আশ্বাসও দেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রিয়াজ।
কিন্তু তাতেও আহতরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে না আসায় তাদের ধাওয়া দেয় পুলিশ এবং ধ্বস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
‘জুলাই যোদ্ধারা’ কয়েকটি ট্রাক ও বাস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়
এসময় বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের ১২ নম্বর গেট ভেঙে ফেলেন এবং কয়েকটি ট্রাক ও বাস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এরমধ্যে পুলিশের গাড়িও ছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ছুঁড়লে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোঁড়া শুরু করে আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। সাউন্ডগ্রেনেডও ছোঁড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বেলা আড়াইটা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বিক্ষোভকারীরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
তবে দুপুরের পরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে যান চলাচল শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, আজ ১৭ই অক্টোবর বেলা চারটার দিকে সংসদ ভবনের সামনে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হবার কথা রয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের এতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হলেও, গণ অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি সনদের আইনি ভিত্তি না থাকার কারণে অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে।
আর স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে সংশোধিত খসড়া না দেওয়া হলে সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে বাম ধারার চারটি দল- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।
বিবিসি নিউজ বাংলা