হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে তৎপর হয়ে উঠেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এক থেকে দুই দিনের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণের স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। এ ঘটনায় রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত
বিভিন্ন রপ্তানিকারক সংগঠন তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিস্তারিত তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। সংগঠনগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব তথ্য সংগ্রহের পরই মোট ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর একটি প্রতিনিধি দল রোববার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন করবে। সংগঠনের জনসংযোগ কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদ করিম জানান, দুপুরে বিজিএমইএর একটি দল ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবে।
অগ্নিনির্বাপণে ঝোড়ো হাওয়ার বাধা
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, প্রবল বাতাসের কারণে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় বাড়িয়ে দেয়।
রপ্তানিকারকদের উদ্বেগ
অগ্নিকাণ্ডের পর কার্গো ভিলেজের কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রপ্তানিকারকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, দীর্ঘ সময় বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থবির থাকলে তা শুধু যাত্রী পরিবহনেই নয়, বরং দেশের রপ্তানি খাতেও বড় প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে রপ্তানিকৃত প্রধান পণ্যের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, শাকসবজি, ফলমূল, পানপাতা ও অন্যান্য দ্রুত নষ্ট হওয়া পণ্য। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সেবার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাঠানো হয়, যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে।
ব্যবসায়িক নেতাদের প্রতিক্রিয়া
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের পরিমাণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। যত দ্রুত কার্গো ভিলেজ পুনরায় চালু হবে, ততই ক্ষতি কম হবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।”
বাংলাদেশ ফল, সবজি ও সংশ্লিষ্ট পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির (বিএফভিএপিইএ) সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমাদের চালান সম্পূর্ণ নির্ভর করে বিমান সংস্থার কার্গো স্পেসের ওপর। যেদিন বেশি জায়গা পাওয়া যায়, সেদিন বেশি পণ্য পাঠানো সম্ভব হয়। আমরা এখন যাচাই করছি, আজ কত সদস্যের পণ্য ওই কার্গো ভিলেজে ছিল।”
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ৭ ঘণ্টা পর
শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার প্রায় সাত ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক তদন্তে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো জানা যায়নি, তবে ঘটনাটি রপ্তানি খাতের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে এসেছে।
# বিমানবন্দর_অগ্নিকাণ্ড, রপ্তানি_খাত, বিজিএমইএ, শাহজালাল_আন্তর্জাতিক_বিমানবন্দর, ব্যবসা_ও_অর্থনীতি, সারাক্ষণ_রিপোর্ট