তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের বৃদ্ধি
বর্তমান সময়ে ক্যান্সারের হার তরুণদের মধ্যে বেড়েছে, বিশেষ করে ৫০ বছরের নিচে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি ক্যান্সারের হার বেড়েছে, যার মধ্যে কিডনি, স্তন, অন্ত্র, প্রস্টেট ও প্যানক্রিয়াস ক্যান্সার উল্লেখযোগ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কেবল ভালো স্ক্রিনিং ও উন্নত ডিটেকশনের কারণে নয় বরং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তনও এর জন্য দায়ী।
১৯৫০ দশকের পর পরিবেশগত পরিবর্তন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৫০ দশকে যা কিছু পরিবর্তন হয়েছিল, তার প্রভাব এখন তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের হার বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে। এই সময় থেকে মানুষের জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস ও পরিবেশে অনেক পরিবর্তন এসেছে। উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে শারীরিক পরিশ্রম কমে গেছে, প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার বেড়েছে, এবং প্লাস্টিক ও কেমিক্যালের সাথে সম্পর্ক বেড়েছে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
অতিরিক্ত ওজন, অ্যালকোহল ও খারাপ খাদ্যাভ্যাস
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত ওজন, অ্যালকোহল সেবন ও খারাপ খাদ্যাভ্যাস, বিশেষ করে পশ্চিমা খাদ্যাভ্যাস, এর জন্য দায়ী হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বিশেষ করে মেটাবলিক সমস্যার কারণে। অ্যালকোহল ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং স্তন ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
প্রজনন স্বাস্থ্য ও শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন
এছাড়া, প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিছু পরিবর্তনও তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের হার বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। মেয়েরা বর্তমানে ১১-১২ বছর বয়সে প্রথম মাসিক হয়ে থাকে, যা ১৯৫০ দশকের তুলনায় কিছুটা আগের ঘটনা। এ কারণে স্তন ক্যান্সারের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহিলাদের প্রথম গর্ভাবস্থা এখন ২৭ বছর বয়সে হচ্ছে, যা ১৯৫০ দশকে ছিল ২০ বছর বয়সে। এটি তাদের শারীরিক পরিবর্তনের জন্য দীর্ঘ সময়ের সুযোগ সৃষ্টি করছে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বায়োলোজিক্যাল পরিবর্তন ও জন্মগত প্রভাব
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, জীবনের প্রথম বছরে বা গর্ভাবস্থায় বিশেষ প্রভাব ক্যান্সারের পথ দ্রুতগতিতে চালাতে পারে। কিছু গবেষণা প্রমাণ করে যে, জীবনের প্রথম দুই থেকে তিন বছর, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কিছু প্রভাব শিশুদের জিনগত কোড পরিবর্তন করতে পারে এবং তাদের ক্যান্সারের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
পরিণতির দিকে
তবে, সব পরিবর্তন একসাথে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে কি না তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে গবেষণাগুলি দেখাচ্ছে যে, এই ধরনের জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলি তরুণদের মধ্যে ক্যান্সারের হার বৃদ্ধির জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সঠিক জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে পারলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমানো সম্ভব।
#ক্যান্সার, #তরুণদের_বৃদ্ধি, #স্বাস্থ্য, #প্রজনন_স্বাস্থ্য, #খাদ্যাভ্যাস, #অতিরিক্ত_ওজন, #বায়োলোজিক্যাল_পরিবর্তন